চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

প্রকল্পের আত্মসাতকৃত টাকা ফেরত দেননি মৎস্যকর্মকর্তা

দুদকের নির্দেশ উপেক্ষা

নিজস্ব সংবাদদাতা , বান্দরবান

৮ মে, ২০১৯ | ২:২৮ পূর্বাহ্ণ

দুর্নীতি দমন কমিশনারের (দুদক) নির্দেশের পরও বান্দরবানে মৎস্যপ্রকল্পের আত্মসাতকৃত প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ টাকা এখনো ফেরত দেননি মৎস্য কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন। বান্দরবান সদর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন দুটি প্রকল্পের নামে নিজে কাজ করে ঐ টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের গণশুনানিতে ঐ মৎস্য কর্মকর্তা টাকা আত্মসাতের বিষয়টি স্বীকার করে নিলে কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম জেলা প্রশাসকের কাছে টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু গণশুনানির বিশ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত ঐ মৎস্য কর্মকর্তা টাকা ফেরত দেননি। বরং দুর্নীতির বিষয়টি তিনি এখন অস্বীকার করছেন। গত ১৬ এপ্রিল বান্দরবানে দুর্নীতি দমন কমিশনের গুণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ওই শুনানিতে প্রকল্পের ঠিকাদার মৃত উচনু মারমার পরিবারকে ফেরতকৃত টাকা বুঝিয়ে দেয়ার জন্য কমিশনার জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। কিন্তু টাকা ফেরত না পেয়ে ঠিকাদারের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা এখন অসহায় হয়ে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। অন্যদিকে জেলা প্রশাসক অভিযুক্ত মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কমিশন ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন। এদিকে গতকাল (মঙ্গলবার) প্রকল্পের ঠিকাদার মৃত উচনু মারমার স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলন করে আত্মসাতকৃত টাকা ফেরত পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে চট্টগ্রাম অঞ্চলে মৎস্যচাষ উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় বান্দরবানে দুটি জলাশয় নির্মাণ করে দেয়ার নামে অর্থ আত্মসাত করায় সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিনকে দুটি প্রকল্পের

মোট ৭ লক্ষ ৩৭ হাজর টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেন দুর্নীতি দমন কমিশনার। ঠিকাদার উচনু মারমার স্ত্রী লিলি প্রু মারমা দুর্নীতি দমন কমিশনে সদর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে গণশুনানিতে অভিযোগটি উত্থাপন করা হয়। সেখানে মৎস্য কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন তার অভিযোগ স্বীকার করে নিলে দুর্নীতি দমন কমিশনার আত্মসাতকৃত অর্থ জেলা প্রশাসকের কাছে ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেন। গত ১৭ এপ্রিল এই টাকা জেলা প্রশাসকের কাছে ফেরত দেয়ার কথা থাকলেও এখনো পর্যন্ত মৎস্য কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন টাকা ফেরত দেয়নি।
জেলা প্রশাসক দাউদুল ইসলাম জানান, বার বার তাগাদা দেয়ার পরও মৎস্য কর্মকর্তা টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি করছেন। তার বিরুদ্ধে কমিশনে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক। ঠিকাদার উচনু মারমার স্ত্রী লিলি প্রু মারমা সংবাদ সম্মেলনে জানান, তার স্বামী উচনু মারমা ঠিকাদার হিসেবে মৎস্য প্রকল্প দুটির কাজ করার সময়ে হঠাৎ মারা যান। এ সময়ে মৎস্য কর্মকর্তা কৌশল নিয়ে নিজে কাজ করে পুরো টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে তুলে নিয়ে আত্মসাত করেন। পরে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ করা হলে কমিশনার গণশুনানিতে ঐ টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু এখনো ঐ টাকা আমরা পাইনি। পুরো পরিবার এখন অর্থাভাবে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে বলে পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন।
এদিকে মৎস্য কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন বলছেন, গণশুনানিতে জোরপূর্বক তাকে দুর্নীতির কথা স্বীকার করানো হয়েছে। তিনি প্রকল্পের দুর্নীতি অনিয়ম ও অর্থআত্মসাতের সাথে জড়িত নন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট