চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

সাড়ে তিন বছর বন্ধ সড়কের একপাশ

ভোগান্তির শেষ কবে ?

মোহাম্মদ আলী

১ জুলাই, ২০১৯ | ২:০৪ পূর্বাহ্ণ

হ বহদ্দারহাট থেকে কাপ্তাই রাস্তার
মাথা পর্যন্ত অসহনীয় দুর্ভোগ
হ পাল্টাপাল্টি দোষারোপ
ওয়াসা-চসিকের

বহদ্দারহাট মোড় থেকে কাপ্তাই রাস্তার মাথা পর্যন্ত সড়কের ভোগান্তির শেষ কবে ? এ প্রশ্ন এখন সড়কের নিয়মিত চলাচলকারী সাধারণ যাত্রীদের। কয়েক মাসের কথা বলে ৪ কিলোমিটার সড়কের এক পাশ বন্ধ করা হলেও সাড়ে তিন বছরের শেষ হচ্ছে না কাজ। কখন সড়কটি সংস্কার করে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে তারও কোনো উত্তর পাচ্ছে না যাত্রীরা।
চট্টগ্রাম ওয়াসা বলছে পাইপলাইনের কাজ শেষ করে ২০১৮ সালের মে মাসে সড়কটি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে (চসিক) বুঝিয়ে দেওয়া হয়। সড়ক সংস্কারের জন্য ক্ষতিপূরণের টাকাও দেওয়া হয়। অপরদিকে চসিক বলছে বুঝিয়ে দিলে সড়কটিতে কাজ শেষ করতে পারেনি ওয়াসা। এখনও রাস্তা কেটে পাইপলাইনের কাজ করছে। তারপরও সড়কটি সংস্কারের জন্য বড় ধরনের একটি প্রকল্প নিয়েছে চসিক। আগামী কিছু দিনের মধ্যে কাজ শুরু করা হবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম ওয়াসার শেখ রাসেল (মদুনাঘাট) প্রকল্পের পাইপলাইন বসানোর জন্য ২০১৬ সালের শুরুতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের এক পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে ওয়াসা। এরপর দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছর ধরে ব্যস্ত সড়কে পাইপলাইন বসানোর কাজ চলে। এর মধ্যে ফ্লাইওভারের র‌্যাম নির্মাণের জন্য ২০১৬ সালের অক্টোবরে বহদ্দারহাট মোড় থেকে টার্মিনালমুখী সড়কের এক পাশ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন থেকে কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে বহদ্দারহাটমুখী যানবাহন বাস টার্মিনাল হয়ে নতুন চান্দগাঁও থানার সামনে দিয়ে চলাচল করে আসছে। ২০১৭ সালে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের নবনির্মিত র‌্যাম্পটি খুলে দেওয়া হলে যাত্রীদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি নেমে আসে। কিন্তু এক মাস মোড়ে স্বাভাবিক যানবাহন চলাচলের পর ওই এক পাশে পুনরায় যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় চট্টগ্রাম ওয়াসা। মোড়ে কালভার্টে আন্ডারক্রসিং পাইপলাইন বসাতে সংস্থাটি সময় নিয়েছিল দেড় মাস। কিন্তু ওই দেড় মাসের স্থলে ১৭ মাস অতিবাহিত হলেও কাজ শেষ করতে পারেনি ওয়াসা। ফলে প্রায় টানা সাড়ে তিন বছর ধরে দুর্ভোগের মধ্যে যাতায়াত করছেন আরাকান সড়কের যাত্রীরা। এমনকি বন্ধ থাকা সড়কের এক পাশে ব্যবসাও অনেকটা বন্ধ হয়ে গেছে।
বহদ্দারহাট-কাপ্তাই রাস্তার সড়কের এক পাশ যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় সড়কের অপর পাশ দিয়ে উভয়দিকের যানবাহন চলাচল করছে। সিঙ্গেল রাস্তা দিয়ে উভয় দিকের যানবাহন চলাচলের কারণে প্রতিদিন যানজট লেগে থাকছে। এ কারণে পুরাতন চান্দগাঁও থানার সরাফত উল্লাহ পেট্রোল পাম্প থেকে বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল, চান্দগাঁও আবাসিকের প্রবেশ পথের সামনে, কালুরঘাট সিএন্ডবি, বাহার সিগনাল ও কাপ্তাই রাস্তার মাথাসহ বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘ যানজট লেগে থাকছে।
‘চিটাগাং ওয়াটার সাপ্লাই ইমপ্রুভমেন্ট এ- স্যানিটেশন’ প্রকল্পের আওতায় শেখ রাসেল (মদুনাঘাট) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়। এ প্রকল্পের ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টর ও ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘এ সড়কে মদুনাঘাট প্রকল্প ছাড়াও মোহরা পানি শোধনাগার প্রকল্পের একটিসহ দুইটি পাইপলাইন বসানো হয়েছে। পাইপলাইনের কাজশেষে ২০১৮ সালের মে মাসে সড়কটি চসিককে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কালুঘাট বুস্টারের সামনে সড়কে বিশাল গর্তের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ওয়াসার পুরনো লাইনের এয়ার বাল্বের কাজের জন্য গর্তটি করা হয়। দুইদিনের মধ্যে তা ভরাট করে দেওয়া হবে।’
এদিকে সড়কটি প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে নির্বাহী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘আরাকান সড়কের বহদ্দারহাট থেকে কালুরঘাট সেতু পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারে চসিক একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। প্রায় ৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি ইতোমধ্যে একনেকে অনুমোদন পেয়েছে। প্রকল্পটির টেন্ডারের কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে ঠিকাদারকে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে সড়কটি সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট