চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

রাঙ্গুনিয়া পৌরসভা: দৌড়ঝাঁপ আ. লীগে, বিএনপি নিরুত্তাপ

নিজস্ব সংবাদদাতা, রাঙ্গুনিয়া

৩০ নভেম্বর, ২০২০ | ১২:৩৫ অপরাহ্ণ

রাঙ্গুনিয়া পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা আগাম প্রচার-প্রচারণায় প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার দলের শীর্ষ নেতাদের দুয়ারে দুয়ারে ধর্ণা দিচ্ছেন। অন্যদিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা অনেকটা নিরুত্তাপ। তথ্যমন্ত্রী ও রাঙ্গুনীয়া আসনের সংসদ সদস্য ড. হাছান মাহমুদের সমর্থন ও অনুকম্পা পেতে তদবির-চেষ্টা চালাচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তবে মেয়র প্রার্থীদের অতীত ও বর্তমান কর্মকা-ের আমলনামা তাঁর কাছে রয়েছে। স্বচ্ছ-পরিচ্ছন্ন ইমেজের প্রার্থী মনোনয়ন দেবে আওয়ামী লীগ। 

স্থানীয় ভোটার মো. শামসুদ্দিন জানান, বিগত সময়ের চেয়ে গত ৫ বছরে পৌর এলাকার মানুষ নাগরিক সুবিধা নিয়ে অনেকটা সন্তুষ্ট। নদী ভাঙনরোধ, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, পৌর এলাকায় আলোকায়ন ও পৌর অডিটোরিয়ামসহ দৃশ্যমান অনেক উন্নয়ন কাজ হয়েছে। উন্নয়ন কর্মকান্ড ধারাবাহিকতা রাখতে উপযুক্ত প্রার্থীকে মূল্যায়ন করবে ভোটাররা। আওয়ামী লীগের মনোনয়নের দৌড়ে আছেন বর্তমান মেয়র ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের গত কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মো. শাহজাহান সিকদার। পৌর এলাকাসহ রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন উন্নয়ন ও সাংগঠনিক কর্মকান্ডের সমন্বয়ে তাঁর উপর তথ্যমন্ত্রীর আস্থা রয়েছে বলে দলীয় নেতাদের ধারণা। তবে বর্তমান মেয়রের চাচাতো ভাই উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শামসুদ্দোহা সিকদার আরজু কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। তিনি পৌরসভার ওয়ার্ড পর্যায়ে সভা ও পোস্টার সাঁটিয়ে প্রার্থিতার কথা জানান দিচ্ছেন। এছাড়াও পৌরসভা আওয়ামী লীগ সভাপতি মাস্টার আসলাম খাঁন, ঢাকাস্থ চট্টগ্রাম সমিতির সহ-সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য গিয়াস উদ্দিন খাঁন স্বপন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন খাঁন, রাঙ্গুনীয়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার খায়রুল বশর মুন্সি মনোনয়ন চাইবেন।

এদিকে, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর দোর্দণ্ড প্রতাপে চলা রাঙ্গুনিয়া বিএনপি এখন চৌধুরী পরিবার ও স্থানীয় ইস্যুতে দ্বিধাবিভক্ত। পৌরসভা বিএনপি’র একাংশের যুগ্ম আহ্বায়ক হেলাল উদ্দিন শাহ প্রার্থী হতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। হেলাল শাহ-ই বিএনপির ভরসা।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার বলেন, আওয়ামী লীগ বড় দল হওয়ায় অনেক যোগ্য প্রার্থী রয়েছে। যোগ্যতা ও পূর্বাপর কর্মকাণ্ডের ভিত্তিতে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।

বর্তমান মেয়র মো. শাহজাহান সিকদার জানান, ‘একটি নান্দনিক ও নাগরিক সুবিধা সম্বলিত পৌরসভা গড়তে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। গত ৫ বছরে চার কোটি টাকা উন্নয়ন কাজ করেছি। এছাড়া সংসদ সদস্য ড. হাছান মাহমুদের সহযোগিতায় আরও ১৫ কোটি টাকার উন্নয়ন করেছেন পৌর এলাকায়। ইতিমধ্যে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক শিল্পশৈলীতে নির্মিত এডভোকেট নুরুচ্ছফা তালুকদার পৌর অডিটোরিয়াম পৌরবাসীর একটা বড় চাহিদা পূর্ণ হয়েছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় তিনি আবারও দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন বলে জানান।

রাঙ্গুনীয়া যুবলীগের সভাপতি শামসুদ্দোহা সিকদার আরজু বলেন, ‘দুঃসময়ে মামলা-হামলার শিকার হয়েও দলের জন্য কাজ করেছি। দল যদি মূল্যায়ন করে তাহলে আওয়ামী লীগ তথা ড. হাছান মাহমুদের উন্নয়নের সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কাজ করবো।

রাঙ্গুনীয়া আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন খাঁন বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে শুরু করে দীর্ঘ সময় দলের প্রয়োজনে ঝুঁকি নিয়ে সংগঠন করেছি। বেশ কয়েকবার দলীয় মনোনয়ন চেয়েও পায়নি। এবার দল মূল্যায়ন করবে বলেই আমি আশা করছি।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য গিয়াস উদ্দিন খাঁন স্বপন বলেন, এলাকার মানুষের আগ্রহ ও পৌরবাসীর সেবা করার মানসে দলের কাছে মনোনয়ন চাইবো, তবে দল যাকে প্রার্থী করবে তাকে জিতিয়ে আনতে কাজ করবো।

পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাস্টার আসলাম খাঁন বলেন, ৫০ বছর ধরে রাজনীতি করছি। কখনো দলের কাছে মনোনয়ন চাইনি। আশা করি এবার দল আমাকে মূল্যায়ন করবে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার খায়রুল বশর মুন্সি বলেন, পৌরবাসীর সেবা করতে আমি মনোনয়ন চাইবো।

বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হেলাল উদ্দিন শাহ জানান, মানুষের ভোটের অধিকার এখন আর নেই। গত নির্বাচনে ব্যাপক জনসমর্থন থাকার পরও ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে আমাকে হারানো হয়েছে। এবারও দল মনোনয়ন দিলে নির্বাচনে অংশ নিবো। এছাড়া জাতীয় পার্টি, ইসলামী ফ্রন্ট থেকেও প্রার্থী দেওয়া হবে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট