চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

সাত মাসেও বসেনি ওজন যন্ত্র

আল-আমিন সিকদার

২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০ | ৩:১০ অপরাহ্ণ

কর্ণফুলী নদীর ওপর ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে শতবর্ষী কালুরঘাট সেতুটি। তবে বয়সের ছাপ যেমন একজন মানুষকে শয্যাশায়ী করে ফেলে ঠিক তেমনি দিন দিন অসংখ্য ভারী যানবাহন আর মালবাহী রেলের চাপে ক্রমশ নুয়ে পড়ছে সেতুটি।
যদিও এরইমধ্যে সিদ্ধান্ত হয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন কালুরঘাট সেতু নির্মাণের। তবে এটি দৃশ্যমান ও বাস্তবায়ন হওয়ার আগ পর্যন্ত পুরনো সেতু দিয়েই রেল ও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ। তাইতো জোড়া-তালি দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রেল। নিয়েছে নানা উদ্যোগ।
এরই ধারবাহিকতায় পরিবর্তন আনা হয়েছে সেতুটির ইজারা শর্তে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ওজন নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বসানোর শর্তে ‘এএন এন্টারপ্রাইজকে’ এক বছরের জন্য ইজারা দেয় রেল। বিগত প্রায় ১০ বছর ধরে একই প্রতিষ্ঠান ইজারা নিয়ে সেতুটি পরিচালনা করলেও এবারই প্রথম ওজন নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বসানোর শর্ত দেওয়া হয়। মূলত কালুরঘাট সেতু দিয়ে ৫ টনের বেশি ওজনের যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে রেলের এ সিদ্ধান্ত। তবে এটি বাস্তবায়নে ইজারাদারদের সাথে রেলের চুক্তির সাত মাস পরও বসেনি ওজনযন্ত্র। অন্যদিকে, চুক্তির শর্ত ভঙ্গ এবং ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে ঝুঁকি বাড়ছে সেতুটির। আর এ ঝুঁকির জন্য ইজারাদারকে দায়ী করেছেন রেলের প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তারা।
প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, এএন এন্টারপ্রাইজ আয় বাড়াতে টাকা নিয়ে ভারি যানবাহন চলাচলের সুযোগ দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, এমনকি সেতু মেরামতের সময়ও যানবাহন চালাতে ঠিকাদার কর্তৃক চাপ দেওয়া হয়। এতে করে সঠিক মত হয়না মেরামতের কাজও। যাতে থেকে যায় ঝুঁকি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রকৌশল বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, ইজারাদারের কারণে সেতুর মেরামত কাজে বাঁধা আসে। কারণ, সেতুর মেরামত করতে দরকার ১৫ থেকে ৩০ দিন। কিন্তু ইজারাদার সবসময় সময় কমানোর আবেদন করে। এতে প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়না। বিষয়টি সম্প্রতি মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে।
এদিকে সেতুটির সম্পর্কে জানতে চাইলে অফিসে এসে কথা বলার অনুরোধ করে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা কংকন চাকমা।
এদিকে সেতুটির ইজারাদার প্রতিষ্ঠান এএন এন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারী আইয়ুব আলী পূর্বকোণকে বলেন, ‘করোনার কারণে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। তাই করতে পারিনি। তবে এরইমধ্যে ওজনযন্ত্র বসাতে জায়গা নির্ধারণ করতে রেলকে চিঠি দিয়েছি। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ওজন নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বসানোর কাজ শুরু হবে। রেল কর্মকর্তারাও সেতুটি পরিদর্শন করে গিয়েছেন। কিন্তু এটাতে কি সমস্যা হচ্ছে সেটাই বুঝলাম না। ট্রেন চলছে, মালগাড়ি চলছে। পণ্যবাহী গাড়ি চলতে সমস্যা কি?।
এ বিষয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) সরদার শাহাদাত আলী জানান, ওজন নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বসাতে আমাদের জায়গা নির্ধারণ করে দিতে বলেছে। আমরা শিগগির স্থান নির্ধারণ করে দেব।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট