চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

‘খণ্ডিত’ স্থায়ীকরণের গুঞ্জনে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষদের অসন্তোষ

চসিক পরিচালিত কলেজ

‘খণ্ডিত’ স্থায়ীকরণের গুঞ্জনে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষদের অসন্তোষ

ইফতেখারুল ইসলাম

২৮ জুলাই, ২০২০ | ৩:০৯ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) পরিচালিত ২৩টি কলেজের ১৯টি চলছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে। এসব ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে দুই বছর থেকে সর্বোচ্চ ১২ বছর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়ে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষগণ দায়িত্বপালন করলেও তাদের স্থায়ী করা (নিয়মিতকরণ) হয়নি। একারণে তাদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।

অভিযোগ ওঠেছে, ১৯ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের মধ্যে পাঁচজনকে স্থায়ী করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। আইনের ফাঁকফোকর দেখিয়ে বড় একটি অংশকে বাদ দেয়ার চেষ্টা চলছে। এ নিয়ে তাদের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষগণ অতীতে বিভিন্ন সময় চসিকের কাছে স্থায়ীকরণের জন্য আবেদন করেছেন। বর্তমান মেয়রের কাছেও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষরা নিয়মিতকরণের জন্য বিভিন্ন সময় একাধিক আবেদন করেন। সর্বশেষ গত এক সপ্তাহ আগেও মেয়রের কাছে নিয়মিতকরণের আবেদন করেন তারা।

তাদের দাবি, মেয়র মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দীর্ঘদিন পর সকলকে নিয়মিতকরণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দেখিয়ে কয়েকজনকে যোগ্য ঘোষণা করে অন্যদের বাদ দেয়ার চেষ্টা চলছে। এর মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালনকারীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। অথচ নিয়মিতকরণের জন্য যে আইন দেখানো হচ্ছে তা কলেজের অধ্যক্ষ পদে সম্পূর্ণ নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তাও স্কুল এন্ড কলেজ বা উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের জন্য। এ বিধানে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন, নিয়োগ বোর্ড গঠনসহ নানা শর্ত আছে। এখন মেয়র নির্বাহী ক্ষমতাবলে আদেশ জারি করতে পারবেন। চসিকের অনেক দপ্তরে এমন নিয়মিতকরণ হয়েছে। যোগ্যতার নিরিখে নিয়মিতকরণের উদ্যোগে শুভংকরের ফাঁকি রয়েছে। সরকারি বিধানের আলোকে (বেসরকারি কলেজের জন্য প্রযোজ্য) ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের যোগ্যতা ৩ বছর উপাধ্যক্ষের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। বর্তমানে নিয়মিতকরণের জন্য যারা আবেদন করেছেন তাদের ৩ জন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ। একজন স্কুল এন্ড কলেজ হলেও সেই স্কুলে একজন প্রধান শিক্ষক রয়েছেন। তাছাড়া ভারপ্রাপ্তরা যদি ১২ বছর পর্যন্ত দায়িত্বপালন করতে পারেন তাহলে নিয়মিতকরণে বাধা কোথায়? এমন প্রশ্ন তুলেছেন তারা।

এবিষয়ে জানতে চাইলে চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া পূর্বকোণকে বলেন, তাদের নিয়োগ দেয়ার সময় তখনকার শর্ত পূরণ করেই দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে নীতিমালা পরিবর্তন হয়েছে। নীতিমালা মানতে গেলে অনেকেই বাদ পড়তে পারেন। আবার আমি নীতিমালার বাইরেও যেতে পারি না। তাই বিষয়টি নিয়ে সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কাউকে ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, সবাইকে নিয়মিত করতে পারলে আমার ভাল লাগত। যেহেতু নীতিমালার কারণে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে তাই কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে একথা সত্য অনেকে ছোট কলেজে চাকরি করে কম সময়ে লেকচারার থেকে সহকারী অধ্যাপক হয়েছেন। আবার বড় কলেজে চাকরির কারণে অনেকেই হতে পারেননি। একারণে বঞ্চিত হচ্ছেন। সৃষ্টি হচ্ছে আইনি জটিলতা। তবে এসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গঠিত কমিটি আগামীকাল (আজ মঙ্গলবার) বসবে। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী নিয়মিতকরণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এটি সময় সাপেক্ষ বিষয়।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট