চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

মিশ্র ফল বাগানে ভাগ্যবদল পরিতোষের

জাহাঙ্গীর আলম রাজু, দীঘিনালা

৪ জুলাই, ২০২০ | ৮:৩৬ অপরাহ্ণ

খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় ন্যাড়া পাহাড়ে মিশ্র ফলের বাগান সৃজন করে সফল হয়েছেন পরিতোষ চাকমা। ২০১১ সালে উপজেলার বাবুছড়া ইউনিয়নের দুর্গম সাধনা টিলা নামক এলাকায় প্রায় ৫০ একর ন্যাড়া পাহাড়ে মিশ্র ফলের বাগান গড়ে তুলেন তিনি। এই ফলের বাগানে উৎপাদিত ফল বিক্রির টাকায় ঘুরেছে পরিতোষ চাকমার ভাগ্যের চাকা। হয়েছেন আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী। উপজেলার অন্যান্য ফল চাষীদের মধ্যে পরিতোষ চাকমা সফলতার শীর্ষে।
তার এই বাগানে অন্যান্য ফলের পাশাপাশি রয়েছে দেশি বিদেশি নানা প্রজাতির আম। তারমধ্যে এ বছর বাম্পার ফলন হয়েছে বার্মিজ রাংগুই আমের। সারা দেশেই সুস্বাদু এই আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। শতভাগ ভেজাল মুক্ত হওয়ায় ঢাকা চট্টগ্রামের পাইকাররাও কিনে নিচ্ছেন পরিতোষ চাকমার বাগানের রাংগুইসহ নানা প্রজাতির আম। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পরিতোষ চাকমার মিশ্র ফলের বাগান ঘুরে দেয়া যায়, নানা প্রজাতির সারি সারি ফলের গাছ। তবে বাগানে আম গাছের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। দেশি বিদেশি আমের মধ্যে রাংগুই, ফজলি,  আম্রপালি, হিমসাগর, মল্লিকা, আশ্বিনী, হাড়িভাঙ্গা, লক্ষণভোগ, বারোমাসি ও মোহন ভোগসহ নানা প্রজাতির আম রয়েছে। এছাড়াও লটকন, আমড়া, কলা, মালটা, বেল, জাম্বুরা, পেয়ারা, জামরুল ও তেজপাতাসহ বাগানে রয়েছে নানা প্রকার মসলা জাতীয় গাছ। বাগানে সারা বছরই কোনো না কোনো ফল পাওয়া যায়। তাই ক্রেতারা বাগানে এসেই তাদের চাহিদামত ফল কিনে নিয়ে যান।
পরিতোষ চাকমার সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০০৩ সালে দুর্গম পাহাড় থেকে সংগ্রহ করা একটি বনের লটকন চারা রোপন করে সফল হওয়ায় মিশ্র ফলের বাগান গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সেই সিদ্ধান্ত মতে ২০১১ সালে বাণিজ্যিক চিন্তা মাথায় নিয়ে শুরু করেন মিশ্র ফলের বাগান সৃজনের কাজ। তিনি জানান, এসব ফল উৎপাদন করতে বাগানে কোনো প্রকার কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না। তাছাড়া পোকা মাকড়ের আক্রমণও তেমন একটা নেই। তাই সম্পূর্ণ জৈব সারের উপর নির্ভর করেই চলছে বাগানের প্রতিটি গাছের পরিচর্যা। তিনি আরও জানান, ২০১১ সালে ন্যাড়া পাহাড়ে ফলের বাগান সৃজন করতে গিয়ে অনেকেই আমাকে নিরুৎসাহিত করেছিল।
বর্তমানে আমার সফলতা দেখে তাদের অনেকেই মিশ্র ফলের বাগান সৃজনে মনোযোগী হয়েছেন। উৎপাদন শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত বাগানের ফল বিক্রি করে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা আয় করেছি। এ বছর ৫ লক্ষ টাকার আম ও ৮০ হাজার টাকার লিচু বিক্রি করেছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওঙ্কার বিশ্বাস জানান, পরিতোষ চাকমা ন্যাড়া পাহাড়ে মিশ্র ফলের বাগান সৃজন করে যে সফলতা দেখিয়েছেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। তার এই সফলতা দেখে অনেকেই পাহাড়ে মিশ্র ফলের বাগান সৃজনে উদ্যোগ নিয়েছেন। তাদেরকে উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় কারিগরি সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে।
পূর্বকোণ/ জাহাঙ্গীর- এস

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট