চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বাঁশখালীতে আধিপত্য বিস্তারের জেরে দুই হাফেজ খুন: আসামী গ্রেপ্তারের দাবি
বাঁশখালীতে আধিপত্য বিস্তারের জেরে দুই হাফেজ খুন: আসামী গ্রেপ্তারের দাবি

বাঁশখালীতে আধিপত্য বিস্তারের জেরে দুই হাফেজ খুন: আসামী গ্রেপ্তারের দাবি

১ জুন, ২০২০ | ২:২৩ অপরাহ্ণ

বাঁশখালী উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের ইলশা গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত ২জন হাফেজ খুনের ঘটনায় বিচারের দাবিতে বাদী পক্ষের লোকজন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।

গত ১২ মে রাতে ইলশা মসজিদ থেকে তারাবি নামাজ শেষে বাড়ী যাওয়ার পথে প্রতিপক্ষের গুলিতে বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাফেজ খালেদ বিন ওয়ালিদ (২৫) ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম (২১) খুন হয়। নিহত পরিবারের মধ্যে প্রতিদিন চলছে কান্না।এই কান্না থামানোর জন্য যেন কেউ নেই। নিহতের মা ও বোনেরা কান্নার সময় খুনিদের বিচারের দাবিতে মাটিতে লুটিয়ে  পড়তে দেখা গেছে। বহিরাগত মানুষ দেখলেই মহিলারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন।  নিহত পরিবারের সদস্য ও মামলার বাদীর দাবি  আসামীদের খুঁটির জোর কোথায় ? আসামী হয়েও কিভাবে বাদীর ও নিহত পরিবারকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে।

মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাহারছড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মধ্যম ইলশা গ্রামে এলাকার সামাজিক কোন্দল ও আধিপত্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মদিনা ব্রিক ফিল্ডের মালিক নুরুল আবছার ও এম.বি.এন ব্রিক ফিল্ডের মালিক জয়নাল আবেদীন ঝুন্টুর সাথে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে ১৮/২০ বার। মামলা হয় প্রায় ২ ডজন। গত ১২ মে করোনা ভাইরাসের কারণে সারাদেশে লকডাউন চলাকালীন পটিয়া বড় মাদ্রাসার ছাত্র ও বাহারছড়া মধ্যম ইলশা গ্রামের নেছার আহমদের ছেলে হাফেজ খালেদ বিন ওয়ালিদ ও আবু সালেকের ছেলে মোহাম্মদ ইব্রাহিম মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় বাড়ি চলে আসে। বন্ধকালীন সময়ে বাড়িতে এসে প্রতিপক্ষের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। খুনের শিকার ওই দুই হাফেজ জয়নাল আবেদীন ঝুন্টুর আত্মীয় হয়। নিহত যুবকদের সাথে এলাকার কারো সাথে কোন ঝগড়া ছিল না।

মামলার বাদী জয়নাল আবেদীন ঝুন্টু জানান, সামাজিকভাবে প্রতিপক্ষের লোকজন অস্ত্রধারী হিসেবে চিহ্নিত। গত ১২ মে রাতে রমজানের তারাবি নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে প্রতিপক্ষের লোকজন আমাকে  করে  গুঁলি ছুঁড়ে। এ সময় আমি কৌশলে বেঁচে গেলেও পাশে থাকা আমার দুই চাচাতো  ভাই হাফেজ খালেদ বিন ওয়ালিদ ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়।  মামলা দায়ের করার  পর প্রধান আসামীসহ অন্যরা নিহত পরিবারদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। দুইজন আসামী গ্রেপ্তার হলেও বাকি আসামীরা প্রভাব বিস্তার করছে। মামলার প্রধান আসামী নুরুল আবছার ও আত্মীয় স্বজন দিয়ে নিহত মামলা তুলে নিতে চাপ সৃষ্টি করছেন বলে নিহত পরিবার ও মামলার বাদীর অভিযোগ।

মামলা তদন্ত কর্মকর্তা বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ীর পরিদর্শক আজিজুল বারী বলেন, খুন মামলার ২জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য সোর্স এর মাধ্যমে কার্যক্রম চলছে। এই মামলায় শীঘ্রই একটা ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে। আসামী গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।

বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, বাহারছড়ায় দুই মাদ্রাসা ছাত্র খুনের ঘটনার পর বিভিন্ন পরিকল্পনার মাধ্যমে আসামীদের অবস্থান নির্ণয়ের মাধ্যমে গ্রেপ্তার অভিযান চলছে। আসামীরা এলাকা ছাড়া হয়েছে। তবুও বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। খুন মামলাটি হওয়ার পর থেকেই গ্রেপ্তার অভিযান চলছে। মুলত এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে ২০ বছর ধরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে আসছিল।

পূর্বকোণ/ অনুপম কুমার- এএ 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট