চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

জমিয়তুল ফালাহে সেনাবাহিনীর এক মিনিটের বিনামূল্যের বাজার

নাজিম মুহাম্মদ

১৪ মে, ২০২০ | ৮:৩৯ অপরাহ্ণ

করোনা মহামারীতে ‘এক মিনিটের বাজার’ নামে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এতে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষক যেমন তার ফসলের ন্যায্য দাম পাবেন তেমনি কর্মহীন হতদরিদ্র মানুষগুলো পুরো এক সপ্তাহের বাজার পাচ্ছেন বিনামূল্যে। সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের নির্দেশে ‘ত্রাণ সাহায্য নয়, সেবা’ এই দৃষ্টিভঙ্গিতে গতকাল বুধবার নগরীর জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ মাঠে এ কার্যক্রম শুরু করেন। প্রাথমিক পর্যায়ে এক হাজার দুস্থ মানুষ বিনামূল্যে চাল, আলু, সাবান, ফেস মাস্ক ও আট থেকে নয় ধরনের মৌসুমী সবজি নিতে পারবেন। ঈদুল ফিতরে এক মিনিটের বাজার থেকে শাড়ি, লুঙ্গি, সেমাই, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিতে পারবেন দরিদ্র ও কর্মহীন মানুষ। সেনাবাহিনীর নিজস্ব অর্থায়নে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
২৪ পদাতিক ডিভিশনের মেজর আবু সাঈদ জানান, গতকাল বুধবর নগরীর ওয়াসা মোড়ে জমিয়তুল ফালাই মসজিদ মাঠে এক মিনিটের বাজার চালু করা হয়েছে। ২৪ পদাতিক ডিভিশনের কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল তানভীর মাজহার সিদ্দিকী বাজারের উদ্বোধন করেন।
মেজর সাঈদ বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে নিম্ন এবং স্বল্প আয়ের মানুষগুলো আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সেনাপ্রধানের নির্দেশনায় দারিদ্রসীমার নিচে থাকা জনগণের পাশে দাঁড়াচ্ছে ৩৪ কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। আমাদের শ্লোগান হচ্ছে ‘এক মিনিটের বাজার- থাকবো ঘরে সুস্থ বেশ, আপনি হাসলে হাসবে দেশ।’ এই উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে- প্রান্তিক চাষীদের কাছ থেকে সরাসরি সবজি ক্রয়ের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতি সচল রাখা। বিনামূল্যে কর্মহীন এবং হতদরিদ্র মানুষের মধ্যে চাল, সবজি, সাবান ইত্যাদি বিতরণের মাধ্যমে খাদ্য সংস্থান করা। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মানুষকে ঘরে থাকতে উৎসাহিত করা। পুরো আয়োজনকে ‘ত্রাণ সাহায্য নয়, সেবা’ এই দৃষ্টিভঙ্গিতে বিন্যস্ত করা। তিনি বলেন, আমাদের এই প্রচেষ্টায় যাতে প্রকৃত হতদরিদ্র জনগণ সহায়তা পায় তা নিশ্চিতে একটি ডাটাবেজ তৈরি করা হয়েছে। সবার কাছ থেকে পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা নেয়া হচ্ছে। আমাদের এসেসমেন্ট টিম মাঠ পর্যায়ে জরিপ পরিচালনা করছে। জরিপ পরিচালনাকালীন সমন্বয়ে প্রতিটি হতদরিদ্র পরিবারকে একটি করে টোকেন সরবরাহ করা হবে। যার মাধ্যমে তারা ‘এক মিনিটের বাজার’ হতে সদাইপাতি নিতে পারবেন। একটি পরিবার দু’সপ্তাহে একবার বাজার নিতে পারবে। তবে যারা খুবই বেশী দুস্থ, যাদের বিকল্প কোন আয়ের ব্যবস্থা নেই তাদের জন্য সময়সীমা নেই। তারা চাইলে প্রতিসপ্তাহে বাজার নিতে পারবেন।
মেজর সাঈদ বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীকে ছয় ভাগে ভাগ করা হয়েছে। সপ্তাহে তিন থেকে চারটি বাজার বসবে। এই কার্যক্রম আগামী এক মাস অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে প্রয়োজনে সময়সীমা বাড়তেও পারে। সবজির মধ্যে থাকবে মিষ্টি কুমড়া, লাউ, ঢেঁড়স, করলা, পটল, চিচিঙ্গা ইত্যাদি। এসব সবজি সেনা সদস্যরা সরাসরি প্রান্তিক চাষীদের কাছ থেকে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে সংগ্রহ করছেন। এছাড়া আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ‘এক মিনিটে ঈদের বাজার’ আয়োজন করার পরিকল্পনা নিয়েছে। দরিদ্র পরিবারগুলো ঈদ বাজারে এসে শাড়ি, লুঙ্গি, সেমাই, চিনি, দুধ ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহ করতে পারবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট