চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার শোভনদণ্ডী ইউনিয়নে জায়গা নিয়ে বিরোধের জের ধরে মারামারিতে হামলায় আহত বৃদ্ধ বুদরুছ মিয়া (৬৫)। তিন দিন পর হাসপাতালে আজ মঙ্গলবার (৫ মে) সকালে মারা গেছেন। একই ঘটনায় আহত বৃদ্ধের ছেলে মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ (৩৮) হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে এখনো পাঞ্জা লড়ছে। শনিবার দুপুর ১টায় পটিয়া উপজেলার শোভনদন্ডী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড ইউসুপেরপাড়া এলাকায় বাড়ির সীমানা বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষ দা দিয়ে কুপিয়ে পিতা ও পুত্রকে আহত করে।
পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে পটিয়া হাসপাতালে ও পরে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়। উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতাল থেকে আহত পিতা ও পুত্রকে প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে আইসিইউতে রাখা হয়। পটিয়া থানায় এ সংক্রান্তে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। এতে উপজেলার শোভনদণ্ডী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড ইউসুপেরপাড়া বাসিন্দা মরহুম জালাল আহমদের পুত্র নুরুল আলম (৪৫), একই এলাকার জালাল আহমদের পুত্র মাহবুবুল আলম (৩৯), নুরুল আলমের পুত্র মোহাম্মদ নাবিল (১৮), নুরুল আলমের স্ত্রী শাহিন আক্তার, একই ইউনিয়নের রশিদাবাদ গ্রামের চৌধুরী পাড়ার বাসিন্দা সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী আয়শা আক্তার (৪৫) আসামি করা হয়েছে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিবেশী নুরুল আলমের সাথে নিহতের পরিবারের সীমানা বিরোধ রয়েছে। নিহত বুদরুছ মিয়া বেশ কয়েক বার স্থানীয়ভাবে সীমানা বিরোধ নিস্পত্তিপর জন্য প্রতিবেশীদের অনুরোধ করেন। প্রতিবেশী নুরুল আলম গং তাতে কর্ণপাত না করে প্রাপ্য অংশের চেয়ে বেশি জমি দখল করে রাখে। নিহতের পরিবার প্রতিপক্ষকে বাড়ির সীমানা চিহিৃত করার জন্য বেশ কয়েক বার অনুরোধ করেন। প্রতিবেশী নিহতের পরিবারকে নিজ উদ্যোগে সীমানা চিহিৃত করার জন্য বলে। এরই ধারাবাহিকতায় নিহতের পরিবার সার্ভেয়ার দ্বারা সীমানা চিহিৃত করে। গত ২ মে দুপুরে পিতা-পুত্র নামাজ পড়ার জন্য ঘর থেকে বের হওয়ার সময় সীমানা চিহিৃত করার জেরে ক্ষুব্দ প্রতিবেশী নুরুল আলম, তার পুত্র ও লোকজন দা ও লোহার রড় নিয়ে হামলা চালায়। কুপিয়ে ও লোহার রড় দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয় পিতা ও ব্যাংকার পুত্রকে। এরপর স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে পটিয়া ও পরে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে আইসিইউ সুবিধা না পাওয়ায় বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয় পিতা ও পুত্রকে। সেখানে ৩ দিন মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে অবশেষে না ফেরার দেশে চলে যায় পিতা বুদরুছ মিয়া । পুত্র এখনো সংজ্ঞাহীন থাকায় পিতার মৃত্যুর খবর এখনো জানতে পারেনি। নিহতের ২ পুত্র ও ৩ কন্যা সন্তান রয়েছে।
নিহতের পুত্র মামুনুর রশিদ জানান, ঘটনার পর পটিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। তাতে পাঁচজনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে। তার পিতা আইসিইউতে থাকা অবস্থায় মারা যায়।
তিনি জানান, হামলার ঘটনায় মারামারির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েলেও এখন সেই মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে।
পটিয়া থানার ওসি বোরহান উদ্দিন জানান, ২ তারিখের ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মারামারির মামলাটি হত্যা মামলায় পরিণত করা হবে। এ জন্য নিহতের লাশের ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়।
পূর্বকোণ /- আরপি