চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

নেই মানুষের আনাগোনা, হৈ হুল্লোড়

দামপাড়ার সেই চিরচেনা গলির ভুতুড়ে পরিবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

৫ এপ্রিল, ২০২০ | ২:০৪ পূর্বাহ্ণ

মাত্র একদিন আগেও অলি-গলিতে মানুষের আনাগোনা আর হৈ হুল্লোড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সরকারি বিধি নিষেধ উপেক্ষা করে যেন রীতিমত বসতো মানুষের মেলাও। কিন্তু সেই চিরচেনা গলি এখন পুরোপুরিই ভুতুড়ে পরিবেশে রূপ নিয়েছে। পাল্টে গেছে আগের চিত্র। বলছি নগরীর দামপাড়া এলাকার কথা। গত শুক্রবার ৬৭ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের কোভিড-১৯ শনাক্ত হওয়ার পর ওই এলাকায় ছয়টি বাড়িসহ আশপাশে লকডাউন করেছে প্রশাসন। একই সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্যও মোতায়েন রাখা হয়েছে ওই এলাকায়। যাতে করে লকডাউন ঘোষণা করা ওই বাড়িতে কেউ প্রবেশ কিংবা প্রস্তান করতে না পারে সে বিষয়টি নজরে রেখেছেন তারা।
এদিকে, ওই ছয়বাড়ি লকডাউনের পর পুরো দামপাড়া এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। পুরো দামপাড়া জুড়েই থমথমে অবস্থা। পাড়ার প্রতিটি বাসায় আগের চেয়ে সতর্কতাও বেড়েছে। আগে সরকারি নির্দেশনা কেউ না মানলেও বর্তমানে যেন সকলেই মেনে নিজ বাসায় অবস্থানে রয়েছেন।
গতকাল (শনিবার) সরেজমিনে দেখা যায়, পুরো এলাকায় মানুষের আনাগোনা দেখা যায়নি। দোকানপাটগুলো আগে খোলা থাকলেও সবগুলো দোকানই ছিল বন্ধ। এছাড়া যুবকদের কয়েকটি গ্রুপ পুরো এলাকায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ এলাকায় ব্লিচিং পাওডারের পানি ছিটাতে দেখা গেছে। অনেকেই হ্যান্ড মাইংক দিয়ে অলিগলিতে সবাইকে সচেতন থাকতে নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া দামপাড়ার গলির মুখে বাঁশ দিয়ে ব্যরিকেড দিয়েছেন স্থানীয়রা। যেখানে বাইরের লোক প্রবেশ করতে সম্পূর্ণ নিষেধ করে নানান ব্ল্যাকেট টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়েছে। একাধিক বাসা-বাড়ির সামনে অস্থায়ী বেসিন ও সাবান ঝুলিয়ে রাখতেও দেখা গেছে। অন্যদিকে, দামপাড়ায় ওই ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর স্থানীয় মসজিদে জামাতে নামাজ আদায়ও বন্ধ রাখা হয়েছে। শুক্রবার রাতে ও শনিবার থেকে মসজিদের মাইকে নিজ নিজ ঘরে নামাজ আদায় করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এছাড়া করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা পেতে প্রতি নামাজের আগে মাইকে নানান নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ পাহারায় আক্রান্তের বাড়িটি : লকডাউনের পর থেকে আক্রান্ত হওয়া ওই ব্যক্তির তিন তলা ভবনটি পুলিশ পাহারায় রেখেছেন। এছাড়া পাশের বাকি বাড়িগুলোতেও তাদের নজর রয়েছে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা। ওই ছয়বাড়িতে প্রায় ৮০টি পরিবারের বসবাস। যাদের নিরাপত্তাসহ সকল বিষয়ে তারা সার্বক্ষণিক নজরে রেখেছেন।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন পূর্বকোণকে বলেন, ‘লকডাউন হওয়া ওই বাড়িগুলোতে কেউ যেন প্রবেশ করতে না পারে এবং কেউ বের হতে না পারে সেজন্য সার্বক্ষণিক পুলিশের নজরদারি রয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে নির্দেশনা না আসবে, ততক্ষণ পর্যন্ত পুলিশ সদস্যরা এখানে পাহারায় থাকবেন। এছাড়া লকডাউনে থাকা পরিবারগুলোর খাদ্যসামগ্রী বা প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সহযোগিতা করতেও কাজ করছেন পুলিশ সদস্যরা’।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট