চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

৫শ টাকা বেড়ে কমেছে ৫০ টাকা
৫শ টাকা বেড়ে কমেছে ৫০ টাকা

৫শ টাকা বেড়ে কমেছে ৫০ টাকা

চাক্তাই ন্যাশনাল গুদাম,পাহাড়তলী বাজার, এ কে খান ও সিটি গেট এলাকায় বিভিন্ন গুদামে মজুদ রয়েছে শত শত বস্তা চাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৪ মার্চ, ২০২০ | ৫:৩৮ অপরাহ্ণ

করোনোভাইরাস আতঙ্কে এক সপ্তাহে চালের দাম ৫শ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত দুইদিনে বাজারে সাঁড়াশি অভিযানের পর বস্তাপ্রতি সর্বোচ্চ ৫০ টাকা কমেছে।

চালের বড় পাইকারি মোকাম চাক্তাই ও পাহাড়তলী বাজারে চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। বিশেষ করে গরীব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির চাল বলে খ্যাত আতপ ও সিদ্ধ চালের দাম অতিরিক্ত বেড়ে যায়। পাইকারি ও খুচরা বাজারে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) ৪-৫শ টাকা পর্যন্ত বেড়েছিল। গতকাল সোমবার ৫০ টাকা কমেছে।

চাল ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ও চাক্তাই ব্যবসায়ীদের কাছে প্রচুর চাল মজুদ রয়েছে। বিশেষ করে চাক্তাই এলাকার ন্যাশনাল গুদামে প্রচুর চাল ও ভোগ্যপণ্য মজুদ রয়েছে। সেখানে প্রশাসনের নজরদারি নেই। একইভাবে পাহাড়তলী ব্যবসায়ীদেরও বিপুল পরিমাণ চাল বাজার এলাকা ছাড়াও এ কে খান ও সিটি গেট এলাকায় বিভিন্ন গুদামে মজুদ রয়েছে। এসব গুদাম অরক্ষিত থাকায় প্রশাসনের অভিযানেও সুফল আসছে না চালের বাজারে।

তবে সবজি ও ভোগ্যপণ্যের কাঁচা বাজারে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করছে জেলা প্রশাসন। গত তিন দিন ধরে জেলা প্রশাসনের একাধিক ম্যাজিস্ট্রেট বিভিন্ন বাজারে অভিযান পরিচালনা করছেন। জরিমানাও করা হচ্ছে। তারপরও নিয়ন্ত্রণে আসছে না বাজার। চট্টগ্রাম চাল মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজম পূর্বকোণকে বলেন, ‘মানুষের হুড়োহুড়ি ও বাজার অস্থিরতার কারণে দাম বেড়েছিল। এখন ক্রেতার চাপ কম। দাম কিছুটা কমেছে।’ চট্টগ্রাম রাইস মিল মালিক সমিতির সভাপতি শান্তু দাশগুপ্ত বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের মিল মালিকেরা চালের বাজার অস্থির করে তুলেছে। চট্টগ্রামের মিল মালিকদের হাতে ধান ও চাল মজুদ নেই।’ বাজারে ক্রেতাদের চাপ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাজার স্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। বেচাকেনা নেই বললেই চলে। চালের দাম ২০-৫০ টাকা করে কমেছে।’  বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা আতপ চালের দাম বেড়ে মানভেদে ১৭-১৮শ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গতকাল তা কমে ১৬শ থেকে ১৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। মোটা সিদ্ধ বেড়ে বিক্রি হয়েছে ১৮শ টাকায়। তাও ১৬০০ টাকা থেকে ১৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেতি-২৯ চাল বেড়ে ২২শ-২৩শ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। তা বিক্রি হচ্ছে ২১৫০ টাকা দরে। বেতি-২৮ চালও প্রায় কাছাকাছি দরে বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেট আতপ ২৫শ টাকা থেকে কমে ২৪শ টাকা বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেট সিদ্ধ বিক্রি হচ্ছে ২৩-২৪শ টাকা থেকে ৫০ টাকা কমেছে। জিরাশাইল অনেকটা অপরিবর্তিত দামে ২৫শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নূরজাহান সিদ্ধ দুই হাজার টাকা থেকে কমে ১৯শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এস এম নিজাম উদ্দিন ও সহ-সভাপতি জাফর আলম বলেন, বেচাকেনা কম। বাজার স্থবির হয়ে পড়েছে। গত বুধবার ও শুক্রবার বাজার অস্থির ছিল। দামও বাড়তি ছিল। উত্তরবঙ্গের মিল মালিকদের কারসাজিতে চালের দাম বেড়েছিল বলে দাবি তাদের। এদিকে, সবজি বাজারে কিছু স্বস্তি এলেও ভোগ্যপণ্যের বাজারে এখনো অস্বস্থি বিরাজ করছে। চাল ছাড়াও চিড়া, ডাল, চিনি, মুড়ি, পেঁয়াজ, আদা, রসুনের দাম এখন বাড়তি।

গতকাল খুচরা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে মানভেদে ৫০-৬০ টাকা। মধ্যমানের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকা দরে। আদা, রসুনের দামও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।

২নং গেট ষোলশহর কর্ণফুলী কমপ্লেক্স বাজারের সভাপতি আলহাজ এয়াকুব চৌধুরী বলেন, দোকানপাট, মার্কেট বন্ধ ঘোষণার পর ক্রেতাদের চাপ ফের বেড়েছে। তবে পণ্যের দাম আগের মতো বাড়তি দামে বিক্রি করছে পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তিনি বলেন, খুচরা বাজারে প্রতিদিন মনিটরিং ও অভিযান চালানো হচ্ছে। কিন্তু সেই অনুপাতে পাইকারি বাজারে অভিযান কম হচ্ছে। পাইকারি বাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ানোর লাগাম টেনে ধরা গেলে খুচরা বাজারেও কমে আসবে।

ভোগ্যপণ্যের দাম ডাল জাতীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। চাক্তাই পাইকারি বাজারে মসুর ডাল (মোটা) ৫০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬২ টাকা দরে। চিকন মসুর ডাল ৯০ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চনার ডাল (উন্নতমান) ৩২ টাকা থেকে বিক্রি হচ্ছে ৩৭ টাকা। মধ্যমানের চনার ডাল ২৭ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩২ টাকা। ছোলা ৫৪ টাকা থেকে বিক্রি ৬০-৬২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ও সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির প্রচার সম্পাদক অজয় দত্ত বলেন, পাইকারি বাজারে প্রচুর ছোলা ও ডাল মজুদ রয়েছে। রোজার জন্য মজুদ রাখা হয়েছে। এতে বাজারে ছোলা ও ডালের সংকট হবে না। ক্রেতাদের হুড়োহুড়ি না করে ধীর স্থিরভাবে প্রয়োজন মতো ভোগ্যপণ্য ক্রয় করার অনুরোধ করেছেন তিনি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট