চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

হালদায় ভাসছে অতি বিপন্ন জলজ প্রাণি ডলফিন

নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ মার্চ, ২০২০ | ৮:৪৮ অপরাহ্ণ

দেশের একমাত্র মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে আবারও মৃত ডলফিন ভাসতে দেখা গেছে।  শনিবার (২১ মার্চ)  রাউজানের পশ্চিম গুজরার আজিমের ঘাট এলাকায় ভেসে ওঠে ডলফিনটি। গত আড়াই বছরে মোট ২৩টি ডলফিন এ নদীতে  মরে ভেসে ওঠার ঘটনা ঘটেছে। ধারণা করা হচ্ছে নদীতে চলাচল করা বালুবাহী ড্রেজার ও যান্ত্রিক নৌকার আঘাতে অন্যান্য ডলফিনগুলোর মতো এটিরও  মৃত্যু হয়েছে

হালদা নদী গবেষক ও মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডলফিনটির শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁরা ধারণা করছেন, নদীতে চলাচল করা বালুবাহী ড্রেজার ও যান্ত্রিক নৌকার আঘাতে ডলফিনটির মৃত্যু হয়েছে। এর আগে যে ডলফিনগুলো মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল, সেগুলোর একই কারণে মৃত্যু হয়েছিল। এই ডলফিনের মৃত্যু হয়েছে দু–তিন দিন আগে। এটির দৈর্ঘ্য ৬ ফুট আর ওজন প্রায় ৫০ কেজি।

আজ রবিবার (২২ মার্চ) সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, হালদা নদীর রাউজান অংশের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের কচুখাইন, মোকামীপাড়া, উরকির চর ইউনিয়নের দেওয়ানজির ঘাট, মদুনাঘাট, আবুরখিল, পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের আজিমের ঘাট, গহিরা ইউনিয়নের সত্তারঘাট এলাকায় অবাধে চলছে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন ও যান্ত্রিক নৌযানের চলাচল।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ওই এলাকায় গতকাল বিকেলে ডলফিনটিকে মরে ভেসে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে তাঁরা ডলফিনটি ডাঙায় তুলে আনেন। এরপর মৎস্য অধিদপ্তরের লোকজন ও স্থানীয় ডিম সংগ্রহকারীরা মাটিচাপা দেন এটিকে। স্থানীয় ডিম সংগ্রহকারীরা জানান, সামনে মা মাছের ডিম ছাড়ার মৌসুম। এই সময়েও নদীতে বালুবাহি ড্রেজার ও যান্ত্রিক নৌকা চলাচল করছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও হালদা গবেষক ড. মনজুরুল কিবরিয়া জানান, ডলফিন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) লাল তালিকাভুক্ত অতি বিপন্ন প্রজাতির একটি জলজ প্রাণী। সারা বিশ্বের বিভিন্ন নদীতে ডলফিন আছে মাত্র ১ হাজার ১০০টি। এর মধ্যে হালদায় ছিল ১৭০টি ডলফিন। গত আড়াই বছরে যান্ত্রিক নৌযান ও বালুবাহী ড্রেজারের আঘাতে নদীতে মরে ভেসে উঠেছে ২৩টি ডলফিন। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নদীতে বালুবাহী ড্রেজার ও যান্ত্রিক নৌ চলাচলের ওপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। যার কারণে মা মাছসহ ডলফিন মারা যাচ্ছে অবাধে।

 

 

 

 

পূর্বকোণ-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট