চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

৭ রোহিঙ্গা ডাকাত নিহত

টেকনাফে বন্দুকযুদ্ধ ­হ পৃথক ঘটনায় মাদক কারবারি নিহত ­হ দেড় লক্ষ পিস ইয়াবা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার

নিজস্ব সংবাদদাতা হ টেকনাফ

৩ মার্চ, ২০২০ | ৩:৩৯ পূর্বাহ্ণ

টেকনাফে বিজিবি ও র‌্যাবের সাথে পৃথক বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ৭ জন রোহিঙ্গা ডাকাত এবং ১ জন মাদক কারবারি নিহত হয়েছে। দুটি ঘটনাই ঘটেছে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত হ্নীলা ইউনিয়নে। পৃথক বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় নিহত ৮ জনই রোহিঙ্গা বলে জানা গেছে।
টেকনাফে বন্দুক যুদ্ধে একজন মাদক কারবারি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ৩ জন বিজিবি জওয়ান আহত হন। ঘটনাস্থল হতে ১ লক্ষ ৫০ হাজার পিস ইয়াবা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার ভোররাতে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুরা খাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মাদক কারবারি মিয়ানমারের মংডু চালিপ্রাং এলাকার জাফর আলমের পুত্র নুরুল আলম (৩২) বলে জানা গেছে।

টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান পিএসসি অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে মাদকের একটি বড় চালান আসার গোপন সংবাদ পেয়ে সোমবার ভোররাতে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের নয়াপাড়া বিওপির বিশেষ একটি টহল দল জাদিমোরা খাল সংলগ্ন পয়েন্টে অবস্থান নেয়। কিছুক্ষণ পর মাদকের চালান নিয়ে নৌকাযোগে কয়েকজন ব্যক্তি কিনারায় উঠে পালিয়ে যাওয়ার সময় বিজিবি জওয়ানরা চ্যালেঞ্জ করলে মাদক কারবারিরা বিজিবি জওয়ানদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। এতে বিজিবির ৩ জন জওয়ান আহত হন। তখন বিজিবি জওয়ানরা সরকারি সম্পদ ও নিজের প্রাণ রক্ষার্থে পাল্টা গুলিবর্ষণ করার কিছুক্ষণ পর পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে ঘটনাস্থলে তল্লাশি করে ১ লক্ষ ৫০ হাজার পিস ইয়াবা, ১টি দেশীয় অস্ত্র এবং ২ রাউন্ড তাজা কার্তুজসহ গুলিবিদ্ধ অজ্ঞাত এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য টেকনাফ উপজেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে আহত বিজিবি জওয়ানদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গুলিবিদ্ধ অজ্ঞাত মাদক কারবারিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে’। এদিকে র‌্যাব-১৫ সিটিসি-১ টেকনাফ ক্যাম্পের ইনচার্জ লে. মির্জা শাহেদ মাহতাব এক্স.বিএন পিপিএম বলেন, ‘টেকনাফে জাদিমোরা রোহিঙ্গা শিবিরের পাশের পাহাড়ে র‌্যাবের সঙ্গে গোলাগুলিতে ৭ জন রোহিঙ্গা ডাকাত নিহত হয়েছে। জাদিমোরা পাহাড়ে কুখ্যাত রোহিঙ্গা ডাকাত জকিরের অবস্থানের খবরে তিনিসহ র‌্যাবের একটি দল ওই ক্যাম্পের পাশে পাহাড়ে অভিযান চালান। এসময় পাহাড় থেকে র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় ডাকাত দল। র‌্যাবও আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়। এ অভিযানে জকির বাহিনীর ৭ জন সদস্য নিহত হয়। ডাকাত গ্রুপের অন্য সদস্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ৩টি বিদেশি পিস্তল, ৭টি ওয়ান শুটার গান, ১২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে’।

সোমবার সকালে টেকনাফ মডেল থানা পুলিশ খবর পেয়ে ওসি প্রদীপ কুমার দাশের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গহীন পাহাড়ে তল্লাশি চালিয়ে ৭টি মৃতদেহ উদ্ধার করেন। নিহতদের পরিচয় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা না হলেও রোহিঙ্গা ক্যাম্প সূত্রে নিহতরা মো. ফারুক (৩৩), নুরুল আলম নুরাইয়া (৩৯), জমিল আহমদ (৩২), মো. জুবাইর (৩৫), মো. আয়াছ (৩৭), বাচ্চু মিয়া (৩৬) ও আজু (৩০) বলে জানা গেছে। এসময় ঘটনাস্থল হতে ডাকাত সর্দার জকিরসহ আরো ৬ জন পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল হতে বিপূল পরিমাণ অস্ত্র ও বুলেট উদ্ধার করা হয়েছে।

টেকনাফ ৫০ শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সাকিয়া হক বলেন, গুলিবিদ্ধ ৭ জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। এদের প্রত্যেকের শরীরে ৪-৫টি করে গুলির চিহ্ন রয়েছে। এরা অনেক আগেই মৃত্যুবরণ করেছেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট