চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ডেকোরেটার্স কলোনির শতাধিক বস্তিঘর ছাই

ফের একইস্থানে আগুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৪:৪৭ পূর্বাহ্ণ

পোড়া ক্ষত শুকানোর আগেই ফের অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন নওশা মিয়া গলির ডেকোরেটার্স কলোনিতে। আগুনে পুড়েছে প্রায় শতাধিক বস্তিঘর। গতকাল (শুক্রবার) সকাল সাড়ে দশটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে একই জায়গায় দুই বার আগুন লাগার ঘটনাকে ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখছেন স্থানীয়রা। আর ক্ষতিগ্রস্তরা বলছে ‘পরিকল্পিতভাবে’ আগুন লাগানো হয়েছে। একই জায়গায় বারবার অগ্নিকা-ের কারণ বরাবরের মতো ‘অজানাই’ রয়ে গেছে। যদিও ফায়ার সার্ভিস বলছে, তদন্ত সাপেক্ষে বিষয়টা খতিয়ে দেখা হবে। অন্যদিকে আগুন লাগার কারণ পরিকল্পিত কিনা তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া কথা জানিয়েছেন পুলিশ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, শুক্রবার (গতকাল) সকাল সাড়ে দশটার দিকে হুমাযুন কলোনির ১৩ নম্বর ঘর থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে তা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিটের ১৫টি গাড়ি প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও পুড়ে যায় শতাধিক ঘরের প্রায় দেড়’শ পরিবারের মালামাল।

এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি একই সময়ে আগুন লাগে পাশের বস্তিতে। সেখানে আগুনে প্রায় তিন’শ পরিবারের ঘর পুড়ে যায়। যারা নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসা-বাড়িতে, পোশাক কারখানায় ও দিনমজুরের কাজ করেন। তবে তাদের এখনো মাথা গোঁজার ঠাঁই না হতেই আগুনে নিঃস্ব পাশের বস্তির বাসিন্দারা।
আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. আজিজুল ইসলাম পূর্বকোণকে বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে আগুনের সূত্রপাত জানা যায়নি, তবে এ বিষয়টি তদন্ত করা হবে। যেহেতু একই জায়গায়, মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে, আবার জায়গা নিয়ে বিরোধ রয়েছে’। সব বিষয় মাথা রেখেই তদন্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।

সরেজমিনে দেখা যায়, গত সপ্তাহে আগুন লাগার ঠিক উত্তর-পশ্চিম দিকে থাকা ঘরগুলোতে আগুন লাগে। যেখানে একটি অংশের মালিক শাহনেওয়াজ বাবু আর অন্যঅংশের মালিক হুমায়ন। হুমায়ন ও বাবু দুইজনই আপন ভাই। গত সপ্তাহে আগুনে পুড়ে যায় বাবুর মালিকানাধীন কলোনি। দুই কলোনির দূরত্ব প্রায় এক’শ গজ। তবে এমন অগ্নিকা- মেনে নিতে পারছেনা বস্তিতে বসবাসকারিরা। তাদের অভিযোগ গত সপ্তাহের আগুনের কারণ থাকলেও গতকালের আগুন ‘ইচ্ছাকৃতই’।

একাধিক ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা পূর্বকোণকে বলেন, ‘আমাদের উচ্ছেদ করতেই বারবার আগুনের ‘নাটক’। এটা যে ইচ্ছেকৃতভাবে হচ্ছে, তা যে কেউই সহজে বুঝবে। গত সপ্তাহেও একই সময়ে আগুনের ঘটনা ঘটে, ঠিক আজও একই সময়ে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। এতেই বুঝা যায় নিছক কোন দুর্ঘটনা নয়। পুরোপুরিই পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগানো হয়েছে’।

জানতে চাইলে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক পূর্বকোণকে বলেন, ‘অগ্নিকা-ের কারণ নিয়ে বিভিন্ন তথ্য পাচ্ছি। আমরাও সব দিকে দেখছি, যদি পরিকল্পিত হয়, তাহলে অভিযুক্তদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে’।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট