চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

পবিত্র আশুরার ফজিলতপূর্ণ রোজা

সম্মান-শ্রদ্ধা বাড়ে ক্ষমায়, পরিপূর্ণতা হয় আল্লাহর ভালোবাসায়

উমায়রা সুলতানা সাফফানা

১০ জানুয়ারি, ২০২০ | ৯:৩০ পূর্বাহ্ণ

কেউ ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে নয়। ভালো-মন্দের মিশেলে মানুষের জীবন। কারও ভুল হলে তার প্রতি ক্রোধ দেখানো, জেদ-উত্তেজনা কিংবা প্রতিশোধে কাতর হওয়া ভীষণ নিন্দনীয়। এসব আচরণ মানুষকে ছোট করে। আমলনামা থেকে সওয়াব মুছে দেয়।

বিপরীতে ক্ষমা মানুষের সম্মান ও মর্যাদা বাড়ায়। কাউকে ক্ষমা করে একজন সাধারণ মানুষও হয়ে উঠতে পারেন অসাধারণ। ক্ষমাশীল মানুষ ধৈর্যশীল ও উদারপ্রকৃতির হন। যাদের এ ধরনের গুণাগুণ রয়েছে, তারা আল্লাহতায়ালার বিশেষ নেয়ামতপ্রাপ্ত। ক্ষমাকারী ধৈর্যবান ও সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত।

মহান আল্লাহ অত্যন্ত দয়ালু ও ক্ষমাশীল। তিনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। যে অন্যকে ক্ষমা করে তাকেও তিনি ভালোবাসেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, ‘যারা সুসময়ে ও দুঃসময়ে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সংবরণ করে ও মানুষকে ক্ষমা করে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৩৪)

মানুষ অন্যের রূঢ় বা কটু কথাবার্তায় ব্যথা পান। কারও অশোভনীয় আচার-আচরণ কষ্ট দেয়। পারস্পরিক মতবিরোধ তৈরি হয়। অনেক সময় মতবিরোধ ও মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে পরস্পরের মধ্যে সংঘাত ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আল্লাহ তা’য়ালা মানুষকে আদেশ দিয়েছেন, তারা যেন একে-অপরকে ক্ষমা করে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যদি তোমরা ভালো কিছু প্রকাশ করো কিংবা গোপন করো অথবা মন্দ ক্ষমা করে দাও, তবে নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, ক্ষমতাবান।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ১৪৯)

ক্ষমাকারীকে আল্লাহ তা’য়ালা বিশেষভাবে পুরস্কার দেবেন। পরস্পরের মধ্যে বিরোধ নিষ্পন্নকারীও আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার পাবেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আর মন্দের প্রতিফল মন্দ। অতঃপর যে ক্ষমা করে দেয় এবং আপস নিষ্পত্তি করে, তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে রয়েছে। নিশ্চয় আল্লাহ অত্যাচারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা শুরা, আয়াত: ৪০)

ক্ষমা করলে কারও মর্যাদা কমে না। বরং ক্ষমাশীল ব্যক্তির মর্যাদা বহু গুণে বৃদ্ধি পায়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘সদকা করলে সম্পদের ঘাটতি হয় না। যে ব্যক্তি ক্ষমা করে, আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আর কেউ আল্লাহর সস্তুষ্টির জন্য বিনীত হলে, তিনি তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ২৫৮৮)

উদারতা ও সহিষ্ণুতা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। কোমলতা ও হৃদয়ের আর্দ্রতা মুমিনদের বিশেষ একটি গুণ। আল্লাহর রাসুল (সা.) যখন সাহাবি মুয়াজ (রা.) ও মুসা (রা.)-কে ইয়ামেনে পাঠান ও আদেশ দেন, ‘লোকদের প্রতি কোমলতা করবে, কঠোরতা করবে না, তাদের সুখবর দেবে, ঘৃণা তৈরি করবে না। পরস্পর একমত হবে, মতভেদ করবে না।’ (বুখারি, হাদিস: ৩০৩৮)

বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরোধ দেখা যাওয়া স্বাভাবিক। তবে এমন হলে, প্রত্যেকের দায়িত্ব হলো অন্যকে ক্ষমা করে দেওয়া। পারস্পরিক ভুল-ত্রুটিগুলোকে শুধরে দেওয়া। এতে সম্পর্ক মজবুত ও অটুট হয়।’’

 

পূর্বকোণ/আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট