চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

পবিত্র আশুরার ফজিলতপূর্ণ রোজা

আল্লাহর জন্য হবে পরস্পরের ভালোবাসা

অনলাইন ডেস্ক

১৩ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ১০:০০ পূর্বাহ্ণ

‘ভালোবাসা’ আমাদের পারস্পরিক বন্ধন দৃঢ় করে, মজবুত করে। ভালোবেসে মানুষ একে অন্যের পাশে থাকে। বিপদে-আপদে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাই দুনিয়ার জীবনে পারস্পরিক ভালোবাসার গুরুত্ব অনেক। তবে তথাকথিত অশ্লীল ও নোংরা ভালোবাসা কখনই সমর্থনযোগ্য নয়। গ্রহণীয় নয় অবৈধ প্রেমখেলাও। ভালোবাসা শুধু আল্লাহর জন্যই হওয়া চাই। সামাজিক ও ধর্মীয় ব্যাপারে একে অন্যকে ভালোবাসবো। বিপদে-আপদে তার পাশে থাকব। ধর্মীয় অনুশাসনের ভেতরে থেকে জীবনকে উপভোগ করব।

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন বলবেন, আমার মহিমা ও শ্রেষ্ঠত্বের জন্য পরস্পরকে যারা ভালোবেসেছিল তারা কোথায়? আজকের দিন আমি তাদের আমার (আরশের) ছায়ায় আশ্রয় দেব, যেদিন আমার (আরশের) ছায়া ছাড়া অন্য কোনো ছায়া নেই।’ (মুসলিম, রিয়াজুস সালেহীন : ৩৮২)

আমরা ভালোবাসবো পিতা-মাতাকে। স্বামী বা স্ত্রীকে। নিজের সন্তানকে। ভাই-বোনকে। তারচেয়েও বেশি ভালোবাসবো নবী মুহাম্মদকে (সা.)। হযরত আনাস (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যার মধ্যে তিনটি গুণ রয়েছে, সে ঈমানের স্বাদ অনুভব করবে। ১. তার কাছে অন্য সবার তুলনায় আল্লাহ ও রাসুল (সা.) প্রিয়তর হয়; ২. কাউকে ভালোবাসলে আল্লাহর জন্যই ভালোবাসে; ৩. আগুনে ফিরে যাওয়াকে যেমন অপ্রিয় জানে, কুফরিতে ফিরে যাওয়াকে তেমন অপ্রিয় মনে করে।’ (বুখারি : ১৬; মুসলিম : ৪৩)

কাউকে ভালোবাসতে হলে আল্লাহর জন্য ভালোবাসা চাই। আবার কারও সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হলে তাও আল্লাহর জন্যই করা চাই। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সাত শ্রেণির লোককে আল্লাহ তায়ালা তার ছায়া দেবেন, যেদিন (বিচার দিবসে) তার ছায়া ব্যতীত আর কোনো ছায়া থাকবে না। ১. ন্যায়পরায়ণ শাসক; ২. সেই যুবক যে আল্লাহর ইবাদতে বড় হয়েছে; ৩. সে ব্যক্তি যার অন্তর সর্বদা মসজিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে, সেখান থেকে বের হয়ে আসার পর তথায় ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত; ৪. এমন দুই ব্যক্তি যারা আল্লাহর ওয়াস্তে পরস্পরকে ভালোবাসে। আল্লাহর ওয়াস্তে উভয়ে মিলিত হয় এবং তার জন্যই পৃথক হয়ে যায়; ৫. এমন ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে আর তার চক্ষু অশ্রু বিসর্জন দিতে থাকে; ৬. এমন ব্যক্তি যাকে কোনো সভ্রান্ত সুন্দরী নারী আহ্বান করে আর সে বলে আমি আল্লাহকে ভয় করি এবং ৭. সে ব্যক্তি যে গোপনে দান করে এমনকি তার বাম হাত জানতে পারে না তার ডান হাত কী দান করে।’ (বুখারি : ৬৬০, মুসলিম : ১০৩১)

দ্বীনি কল্যাণের কারণে কাউকে ভালোবাসলে বা কাউকে ভালো লাগলে- তা প্রকাশ করা চাই। হযরত আবু কারিম মিকদাদ ইবনে মাদীকারির (রা.) হতে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘যখন কোনো মানুষ তার ভাইকে ভালোবাসে, তখন সে যেন তাকে জানিয়ে দেয় যে, সে তাকে ভালোবাসে।’ (তিরমিজি, রিয়াজুস সালেহীন : ৩৮৮)। এতে করে সেই লোকও আপনার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করবে। তখন পরস্পর বন্ধন আরও দৃঢ় হবে, মজবুত হবে। তবে আমি কাকে ভালোবাসছি, কার সঙ্গে বেশি সময় কাটাচ্ছি এসব বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে। কারণ, দুনিয়াতে আমি যাকে ভালোবাসবো, পরকালেও সে আমার সঙ্গী হবে। হাদিসে আছে- হজরত আবু মুসা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘মানুষ (দুনিয়াতে) যাকে ভালোবাসে (কিয়ামতে) সে তারই সাথী হবে।’ (রিয়াজুস সালেহীন : ৩৭২)। তাই, বুঝে-শুনে ভালোবাসা উচিত।

পূর্বকোণ/রাশেদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট