চট্টগ্রাম শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪

১৫ প্রার্থীর ১০ জনই আ. লীগের

খোরশেদ আলম শিমুল, হাটহাজারী

৩১ জানুয়ারি, ২০২৪ | ১১:০০ পূর্বাহ্ণ

আসন্ন হাটহাজারী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থীরা বিভিন্ন কৌশলে দলের সমর্থন আদায়ে দলের শিষ্য নেতাদের কাছে তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। এর পাশাপাশি স্থানীয় এমপির সমর্থন আদায়েও কৌশলে তদবির চালিয়ে যাচ্ছে একাধিক প্রার্থী। উপজেলা নির্বাচনে এবার দলীয় প্রতীক নৌকা না থাকায় দিন দিন উপজেলা নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাটহাজারী উপজেলাটি বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা হিসাবে দেশব্যাপী পরিচিত।  ইতিমধ্যে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা এলাকার বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী হওয়ার কথা জানিয়ে দিচ্ছেন।

 

গত নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায়  চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী যুবলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সভাপতি এস এম রাশেদুল আলম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এর আগে নির্বাচিত হন বিএনপি নেতা সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাহাবুবুুল আলম চৌধুরী।

 

এখনও পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কথা  শোনা যাচ্ছে। তবে নির্বাচনে যারা প্রার্থী হওয়ার কথা বলছেন তাদের মধ্যে ১০ জনই আওয়ামী লীগের, বাকি ৫ জনের মধ্যে দু’জন জাতীয় পার্টির।

 

উপজেলা নির্বাচনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের মধ্যে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এস এম রাশেদুল আলম, হাটহাজারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সোহরাব হোসেন চৌধুরী নোমান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক বোর্ড সদস্য ইউনুস গনি চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক, উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, পরিবহন মালিক সমিতির নেতা মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী মঞ্জু, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য জসিম উদ্দিন শাহ, উত্তর জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি ও প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের  পিপি এডভোকেট মোহাম্মদ শামীম, ২ নম্বর ধলই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যান সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল মনছুর, উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও সাবেক ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক ২ নম্বর ধলই ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আলমগীর জামান, হাটহাজারী উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ শেখ গোলাম মোস্তফা, ১৩নং দক্ষিণ মাদার্শা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি হাজি মোহাম্মদ সরওয়ার। উল্লেখিত সম্ভাব্য প্রার্থীদের সবাই আওয়ামী ঘরানার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাদের অধিকাংশ বিভিন্ন মেরুতে বিভক্ত। এছাড়াও প্রার্থী হিসাবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন, কাশেম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তরুণ ব্যাবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম, চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির সাবেক সি. সহ-সভাপতি মো. আনিসুল ইসলাম চৌধুরী, উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মোহাম্মদ আলমগীর, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট এর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সচিব  মুহাম্মদ এনামুল হক ছিদ্দিকী।

 

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ সালাম পূর্বকোণকে বলেন, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক থাকছে না। স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগে প্রার্থী হোক, তারপর দেখা যাবে।

 

হাটহাজারী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব গিয়াস উদ্দীন চেয়ারম্যান পূর্বকোণকে বলেন, অবৈধ দখলদার সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ে আমরা লড়াই করে যাচ্ছি। কেন্দ্রীয় হাই কমান্ড যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণের  সিদ্ধান্ত দেয়, তাহলে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাটহাজারীর মীর হেলালের নেতৃত্বে আমাদের প্রার্থীকে বিজয়ী করে আনতে পারব।

 

প্রসঙ্গত ২০০৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামীলীগ নেতা অধ্যক্ষ মো. ইসমাইল আওয়ামীলীগের সর্মথন কৃতপ্রার্থী এডভোকেট  মোহাম্মদ আলীকে পরাজতি করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

 

এছাড়া ২০০৯ সালে নির্বাচনে বিজয়ী ভাইস চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মাহাবুবুল আলম  চৌধুরী ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিপুল ভোটে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সেই নির্বাচনে দ্বিতীয় হয়েছিলেন ২ নম্বর ধলই ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল মনছুর ও তৃতীয় হন ২০০৯ সালের নির্বাচিত চেয়ারম্যান প্রয়াত অধ্যক্ষ মো. ইসমাইল।

 

এরপর ২০১৯ সালের নির্বাচনে ২ নম্বর ধলই ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল মনছুর পুনরায় প্রার্থী হলে জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি এম এ সালামের অনুরোধে তৎকালীন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশেদুল আলমকে সমর্তন করে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এস এম রাশেদুল আলম  চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট