চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

কাশখালী কূলে সবুজের সমারোহ

জাহেদুল আলম, রাউজান

১৬ জানুয়ারি, ২০২৪ | ১১:৫৭ পূর্বাহ্ণ

রাউজানের সবজিভাণ্ডারগুলোর অন্যতম পৌরসভার কাশখালী কূলের দুই পাড়ের দুই দিগন্ত। গত মৌসুমের চাইতে এবার এখানে শীতকালীন সবুজ শাক-সবজির আবাদ বেশি হয়েছে। একে তো ভালো ফলন, তার উপর শীতকালীন শাক-সবজির ভালো দাম পেয়ে বেজায় খুশি কৃষকেরা।

কাশখালীকূলের শত শত হেক্টর জমির মাঠজুড়ে শোভা পাচ্ছে শীতকালীন শাকসবজি। ইতোমধ্যে শীতকালীন সবজি বাজারে বিক্রি করতে শুরু করেছেন কৃষকেরা। মূলত কাশখালী খালের পানির উপর ভর করে চাষাবাদ করে থাকেন ঢেউয়া হাজীপাড়া, শরীফপাড়া, সুলতানপুর, নন্দীপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার আড়াইশ কৃষক পরিবার। প্রতিবছর এখানকার চাষাবাদে নানা সমস্যায় পড়লেও এবার প্রতিকূল পরিস্থিতি তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। তবে আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে কাশকূলে পানিসংকট দেখা দিতে পারে, এমন আশংকায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকেরা।

 

স্থানীয়রা জানান, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিম, মূলা, বেগুন, লালশাকসহ হরেক রকমের শীতকালীন শাকসবজি স্থানীয় বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। পাশাপাশি উদ্বৃত্ত সবজি পার্শ্ববর্তী হাটহাজারী এবং চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন বাজারে নিয়েও বিক্রি করছেন কৃষকেরা।

 

গতকাল সোমবার উপজেলার সবজিভাণ্ডারখ্যাত শরীফপাড়া, ঢেউয়া হাজীপাড়া এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশের ৫-৬টি গ্রামের মানুষ কাশখালী খালের উপকূলের দুইপাড়ে বড় বড় জমিতে সবজি চাষ করছেন। এ সময় সবজিক্ষেত পরিচর্যায় থাকা কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা হয়।

 

আবু তাহের নামে এক কৃষক বলেন, আমি এবার চার কানি বর্গা ও খাজনা দিয়ে সবজি চাষ করেছি। এবার ফলন আগের বছরের চেয়ে ভালো হয়েছে। বাজারে ভালো দামও পাচ্ছি। গেলো রবিবার ফকিরহাটের সাপ্তাহিক ‘বাজার দিনে’ ২০ হাজার টাকার ফুলকপি-বাঁধাকপি বিক্রি করেছি। অনেকসময় সবজি হাটহাজারীর ইছাপুর বাজারে নিয়ে বিক্রি করি।

 

মো. সুমন নামে আরেকজন বলেন, এবার আমি চার কানি জমিতে টমেটোসহ প্রায় সকল প্রকারের সবজিক্ষেত করেছি। এ পর্যন্ত আমি এক লাখ টাকার সবজি বিক্রি করেছি। আশা করছি এ মৌসুমে আরও চার লাখ টাকার সবজি বিক্রি করতে পারবো।

 

তবে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, কাশখালী খালের পানির উপর ভর করে এখানে চাষ হয়। ১৫-২০ দিন পর সেই খাল শুকিয়ে গেলে পানির সংকটে পড়তে পারি। তাতে ক্ষতির আশংকা রয়েছে। কাশখালীকূলে সবজির আবাদ কমপক্ষে আরও চার মাস থাকবে। এজন্য সেচের সংকটের দুশ্চিন্তা রয়েছে।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুম কবির বলেন, রাউজানের ১৪ ইউনিয়ন ও এক পৌরসভায় প্রায় ১৪শ ৫০ হেক্টর জমিতে এবার শীতকালীন সবজি চাষ করেছে কৃষকেরা। যা গত বছর ছিল ১৪শ ৩০ হেক্টর। অর্থ্যাৎ, এবার ২০ হেক্টর জমিতে সবজিক্ষেত বেড়েছে। উপজেলার যেসব এলাকায় সবজি চাষ হয়, তার মধ্যে অন্যতম পৌরসভার কাশখালীকূল। কমপক্ষে আড়াইশ পরিবার কাশখালী কূলের ধান ও সবজির আবাদের উপর নির্ভরশীল।

 

এদিকে, এলাকাবাসী ও কৃষকেরা জানান, দুই পাড়ের অসাধু কিছু লোক ও ব্যবসায়ীরা খালে পলিথিন ও উচ্ছিষ্ট ফেলায় শুষ্ক মৌসুমে খালে পানি প্রবাহ প্রতিবন্ধকতায় পড়ে। এছাড়া কিছু কিছু এলাকায় খননের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলেও কৃষকেরা জানান।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট