রাউজান সাব রেজিস্ট্রেরি অফিসে তিনমাস ধরে স্থায়ী সাব রেজিস্ট্রার নেই। অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব রেজিস্টার দিয়ে চলছে উপজেলার জমি রেজিস্ট্রেরি, অংশনামা রেজিস্ট্রেরিসহ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম। এ অবস্থায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রাউজানের সাধারণ মানুষকে।
সাব রেজিস্ট্রার অফিসের বিভিন্ন দলিল লেখকসহ সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জানা যায়, নিয়মিত সাব রেজিস্ট্রার সাব্বির আহমদ ৩ বছর রাউজানে কর্মরত ছিলেন। গত ২ মার্চ তিনি বদলি হয়ে রাউজান ত্যাগ করেন। এরপর নানুপুর থেকে তমাল আহমদ নামের একজন সাব রেজিস্ট্রারকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয় রাউজানে। তিনি কয়েকদিন দায়িত্ব পালন করে চলে যান। এরপর থেকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে সপ্তাহে তিনদিন করে রাউজানে পার্টটাইম হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বোয়ালখালীর নিয়মিত সাব রেজিস্ট্রার নাহিদুজ্জামান। সেবা গ্রহিতাসহ অনেকের সাথে কথা বললে তারা জানান, সাব রেজিস্ট্রার নাহিদুজ্জামান সপ্তাহে মঙ্গলবার, বুধবার ও বৃহস্পতিবার রাউজান সাব রেজিস্ট্রার অফিসে আসলেও তিনি প্রায়ই সঠিক সময়ে অফিসে আসেন না। এতে সেবা প্রার্থীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
জমি রেজিস্ট্রেরি করতে গেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় লোকজনকে।’ জমি রেজিস্ট্রেরি দিতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, ‘কিছুদিন আগে এক মহিলা রেজিস্ট্রি কাজ সম্পাদন করার জন্য অপেক্ষা করতে করতে গরমে অতিষ্ট হয়ে ‘স্ট্রোক’ করে মারা গেছেন।’ সংশ্লিষ্ট আরেক সূত্রে জানা যায়, রাউজানে নিয়মিত সাব রেজিস্ট্রার না থাকায় বর্তমানে জমি রেজিস্ট্রি অনেক কম হচ্ছে। এ কারণে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। স্থায়ী সাব রেজিস্ট্রার না থাকায় এখানে জমি রেজিস্ট্রারির চাপ বাড়ছে। এ কারণে সপ্তাহে তিনদিন এসে সব দলিল রেজিস্ট্রারি সম্পাদন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বর্তমান পার্টটাইম সাব রেজিস্ট্রারকে। একসঙ্গে অতিরিক্ত জমি রেজিস্ট্রেরির চাপ নিতে হচ্ছে পার্টটাইম সাব রেজিস্ট্রারকে। এদিকে সেবা গ্রহীতারা অভিযোগ করেন, রেজিস্ট্রেরি অফিসে নানা কারণে ঘণ্টার ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হলেও বাইরে বসার তেমন সুব্যবস্থা নেই। এ কারণে রোগী, বৃদ্ধ মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট বেশি হয়।
রাউজানের সাধারণ মানুষ দাবি করেন, রাউজানে প্রায় ৭ লক্ষ মানুষের জন্য জমি রেজিস্ট্রেরি, অংশনামা সংশোধনসহ সংশ্লিষ্ট কাজে অনিয়মিত অফিসার দিয়ে সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে একজন নিয়মিত সাব রেজিস্ট্রার জরুরি প্রয়োজন। এব্যাপারে স্থানীয় জনগণ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
পূর্বকোণ/পিআর