চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ মাগফিরাতের মনযিলে নিয়ে যায় রোজাদারকে

রায়হান আজাদ

২৬ মার্চ, ২০২৩ | ১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ

রমজান মাসের প্রতিটি দিবস যেমনি ধর্মীয় উপলক্ষ তেমনিভাবে রাত্রিবেলাও রোজাদারের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। দিনের বেলায় সিয়াম সাধনা আর রাত্রিকালীন নফল নামাজের মাধ্যমে রোজাদার আল্লাহ তা‘য়ালার সান্নিধ্য লাভে সক্ষম হয়। হাদীস শরীফে এসেছে, “মান ক্বামা রমজানান ঈমানান ওয়া ইহতিছাবান গুফিরা লাহু মা তাকাদ্দামা মিন জনবিহি” অর্থাৎ যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে রমজানে নামাজ আদায় করবে তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।-(মেশকাত শরীফ) তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ নামাজ যদিও ফরজ নয়, তবু এ নামাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সীমাহীন। বান্দা আল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য তাহাজ্জুদের বিকল্প নেই। মাহে রমজানে যেহেতু প্রতিটি নফলের জন্য ফরজের সাওয়াব দেয়া হয়, সেহেতু এই সময়ে তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ অত্যন্ত ফজিলত সমৃদ্ধ ইবাদত।

 

তারাবীহ নামাজ হানাফি মাযহাব অনুযায়ী বিশ রাকাআত পড়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ। প্রসিদ্ধ হাদীস সংকলন ছহীহ মুসলিম শরীফ থেকে জানা যায়, রাসুল সা. রমজান মাসে নিজে তারাবীহ পড়েছেন এবং এ নামাজ আদায়ে সাহাবীদেরকে বিশেষভাবে ঊৎসাহ দিয়েছেন। তবে এটি ফরজ হিসেবে নয়। তারাবীহ নামাজ পুরুষেরা মসজিদে জামায়াত সহকারে পড়তে পারে। চাইলে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় মহিলারাও মসজিদের জামায়াতে হাজির হতে পারে। তবে মহিলাদের বিনা জামায়াতে ঘরে পড়াই উত্তম।

 

এশার ফরজ ও সুন্নাতের পর থেকে সোবহি সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত তারাবীহ নামাজ পড়ার নির্ধারিত সময়। আমাদের দেশে দেখা যায়, পানজাগানা ফরজ নামাজের চেয়ে তারাবীহর জামায়াতের গুরুত্ব অনেক বেশি দেয়া হয়-এটি সঠিক নয়। পাঞ্জাগানা ফরজ তরক করে তারাবীহতে খতম দানে ওঠেপড়ে লেগে থাকলে-তা কোন কাজে আসবে না। তাই আমাদেরকে আগে পাঁচওয়াক্ত নামাজ জামাআতে আদায়ে সর্বোচ্চ যতœশীল হতে হবে। মনে রাখতে হবে ইসলামে ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত, মোস্তাহাব-এ ধারাবাহিকতা অনুসারে যথাযথ তাকিদের সাথে শরীয়তের হুকমসমূহ পালন করতে হয়।

 

রমজান মাসে পুরুষদেরকে বিতরের নামাজ তারাবীহর সাথে জামায়াতে পড়তে হয়। পুরো রমজানে তারাবীহর মধ্যে কুরআনুল কারীম খতম করা সুন্নাত। তবে অবশ্যই এটি হতে হবে ধীরে-সুস্থে, অর্থ ও ভাব বুঝার আগ্রহ নিয়ে। তাড়াহুড়া করে যেনতেনভাবে খতমে তারাবীহ পড়ার শরঈ কোন মূল্য নেই। কোন্ধসঢ়; কোন্ধসঢ়; মসজিদে তারাবী‘র ক্বিরাত এতই দ্রুত পড়া হয় যে মুকতাদিরা কোন কিছুই বুঝে ওঠতে পারে না-এতে এখলাছ নেই। ৭ দিনে কিংবা ১০ দিনে তাড়াহুড়া করে খতমে তারাবীহ সম্পন্ন করার প্রয়াস ফলপ্রসূ নয়। ইসলামিক ফাউ-েশন মাসব্যাপী খতমে তারাবীহ’র যে সুন্দর সিডিউল পেশ করেছে তা সারাদেশে অনুসরণযোগ্য; এটি নিরাপদ।

 

আসুন, আমরা রমজান মাসে ফরজ আদায়ের পাশাপাশি বেশি বেশি নফল নামাজ ও যিকর-আযকারের মাধ্যমে দুনিয়া ও আখিরাতে সাফল্য এবং অত্যধিক ফয়জ-বরকত হাছিল করি। হে আল্লাহ! আমাদেরকে তৌফিক দান করুন।-আমিন

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট