চট্টগ্রাম বুধবার, ০১ মে, ২০২৪

বিরল কনকসুধা ফুল

অনলাইন ডেস্ক

৩ নভেম্বর, ২০২২ | ১২:১৩ পূর্বাহ্ণ

কনকসুধা লতাজাতীয় গাছ। একবার লাগিয়ে দিলে ফুল দেয় বছরের পর বছর। মাচা বা অন্য গাছ আশ্রয় করে বেড়ে ওঠে। গ্রীষ্মকালে গাঢ় সবুজ পাতায় ভরে যায় গাছ।

উজ্জ্বল সবুজ বর্ণের পাতা ছয়-সাত ইঞ্চি লম্বা হয়। বল্লমাকৃতির পাতার শিরাগুলো স্পষ্ট। কনকসুধার পাতাও বেশ সুন্দর। পাতা ছিঁড়লে বের হয় দুধসদৃশ কষ।

 

বসন্তে কনকসুধা লতার অগ্রভাগে গুচ্ছ গুচ্ছ ফুল ফুটতে থাকে। নিচের দিকে মুখ করে থাকা কলিগুলো প্রথমে থাকে সবুজ রঙের। ফুল ফোটার আগে কলি অনেকটা অ্যালামন্ডা বা ঘণ্টা ফুলের কলির মতো দেখায়। ফুলের রং সোনালি হলুদ। পাপড়িগুলোর মিলনস্থলে সোনালি হলুদের ওপর উজ্জ্বল কমলা রঙের নকশা করা। পাঁচটি পাপড়ির অগ্রভাগ ঘড়ির কাঁটার ঘোরার দিকে বাঁকানো। সেখানে আরো আছে ঢেউখেলানো নকশা। সব মিলিয়ে চমৎকার এই ফুল সহজেই নজর কাড়ে। ফুলটিতে রয়েছে হালকা সুগন্ধ।

কনকসুধাগাছে ফুল থাকে হেমন্তকাল পর্যন্ত। বাগানবিলাসীরা বলে, এ দেশে ফুলগাছটিতে ফল হয়নি। বংশবিস্তার হয়েছে গুটিকলমের মাধ্যমে। তাদের তথ্য মতে, সাত-আট দশক ধরে কনকসুধা ফুল এ দেশে দেখা যায়। কিন্তু আজ পর্যন্ত ফুলটি বিরল রয়ে গেছে। ঢাকার বিখ্যাত বলধা গার্ডেনের দুর্লভ উদ্ভিদগুলোর একটি কনকসুধা।

 

গত শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে গাজীপুরের বলধা এস্টেটের জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী ঢাকার ওয়ারীতে ওই উদ্যান গড়ে তুলেছিলেন। প্রকৃতিপ্রেমী নরেন্দ্র নারায়ণ বিশ্বের ৫০টি দেশের ২০০ জাতের গাছ দিয়ে সাজিয়েছিলেন বাগানটি। বলধার কনকসুধাগাছটি সংগ্রহ নিয়ে প্রচলিত রয়েছে চমকপ্রদ এক কাহিনি।

জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী গাছটি শ্রীলঙ্কা থেকে সংগ্রহ করার পর ভুল জাহাজে তুলে দেন। ওই গাছ নিয়ে সেই জাহাজ চলে যায় সুদূর অস্ট্রেলিয়ায়। এ নিয়ে জমিদারের খুব মন খারাপ হয়। পরে অবশ্য গাছটি তাঁর শখের উদ্যানে ঠিকই ঠাঁই করে নেয়।

 

নরেন্দ্র নারায়ণের লাগানো সেই গাছ এখনো বলধা গার্ডেনে ফুল দিয়ে চলেছে। আগে অনেক ফুল ফুটলেও এখন ফুলের সংখ্যা কম হয়। কনকসুধা লতা রয়েছে ময়মনসিংহে অবস্থিত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়েও। কিছু ব্যক্তিগত বাগানেও দেখা যায় এটি। বিরল এই ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম Odontodenia macrantha। তথ্যসূত্র: কালের কণ্ঠ

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট