চট্টগ্রাম বুধবার, ০১ মে, ২০২৪

দীর্ঘ সময় এসি রুমে থাকা ঝুঁকি

অনলাইন ডেস্ক

২৪ আগস্ট, ২০২২ | ১০:১৩ অপরাহ্ণ

গরমে স্বস্তি পেতে সবাই চায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকতে। ঘরে কিংবা কর্মক্ষেত্রে দীর্ঘসময় এসির মধ্যে থাকলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে। আরাম প্রদানকারী এয়ার কন্ডিশন (এসি) নীরবে শারীরিক ক্ষতি করে থাকে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডা. অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী জানান, দীর্ঘসময় এসির নিচে থাকলে কিংবা কাজ করলে বিভিন্ন শারীরিক ক্ষতি হতে পারে। অনেক সময় নিয়ম করে এসি পরিস্কার করা হয় না। তা থেকে হতে পারে বায়ুদূষণ। বায়ুদূষণ থেকে শ্বাসযন্ত্রের অসুখ হয়ে থাকে। দীর্ঘসময় এসিতে থাকলে হতে পারে ঠান্ডা, জ্বর, মাথা ধরা ইত্যাদি।

চোখ শুষ্ক হয়ে যাওয়া: যারা দীর্ঘক্ষণ এসির মধ্যে অফিসের কাজ করেন তাঁদের ক্ষেত্রে এ সমস্যাটি খুবই প্রকট। চোখ শুষ্ক হয়ে যাওয়ার ফলে চোখ জ্বালাপোড়া করা, চুলকানিসহ অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে; যা চোখের জন্য বেশ ক্ষতিকর।

পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন: আমাদের দেশে অধিকাংশ অফিস-আদালতে এসির তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের নিচে রাখা হয়; যা স্বাভাবিক রুম টেম্পারেচারের চেয়েও বেশ কম। ফলে শরীরে খুব সহজেই পানিশূন্যতা তৈরি হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পানিশূন্যতার পরিমাণ বেশি হলে যে কোনো সময় অসুস্থ হওয়ার প্রবণতাও বেড়ে যায়। এ ছাড়া কাজে মনোযোগ কমে যায়।

শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা: অধিক সময় ধরে এসির মধ্যে কাজ করলে নাক, গলা ও চোখে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হয়। বিশেষত ঠান্ডা লাগা ও এলার্জির মতো সমস্যাগুলো খুব বেশি হয়ে থাকে। দেখা যায় হুট করে একজন একটু বেশিক্ষণ এসির মধ্যে থাকলেই নাক দিয়ে পানি পড়তে থাকে, যা ঠান্ডা লাগার অন্যতম উপসর্গ।

অ্যাজমা ও এলার্জি: যাদের আগে থেকেই অ্যাজমা ও এলার্জির সমস্যা আছে তাঁরা এসির মধ্যে থাকলে এ দুটি রোগের ঝুঁকি আরও বেড়ে যেতে পারে। এমনকি অফিস-আদালতে ব্যবহূত এসি যদি ভালোভাবে পরিস্কার না করা হয় সে ক্ষেত্রে রুমের মধ্যে ধুলাবালির পরিমাণ বেড়ে গিয়ে অ্যাজমা ও এলার্জির সমস্যা আরও বেশি ঘনীভূত হতে পারে।

সংক্রামক রোগ: এসির মধ্যে থাকার ফলে আমাদের নাকের মধ্যে যে মিউকাস মেমব্রেন থাকে, তা শুকিয়ে যায়। ফলে খুব সহজেই আমরা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হই এবং অসুস্থ হয়ে যাই। মূলত নাকের মধ্যে থাকা এই মিউকাস মেমব্রেনই আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনার প্রথম ধাপ হিসেবে কাজ করে।

অভিযোজন ক্ষমতা কমে যাওয়া: সব সময় কম তাপমাত্রায় থাকলে দেহ ওই তাপমাত্রার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়। হঠাৎ করে এসি রুম থেকে বের হয়ে বাইরের পরিবেশে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় প্রবেশ করলে হিট শকে আক্রান্ত হতে হয়। কেননা হঠাৎ করে এত বেশি তাপমাত্রার পার্থক্য শরীর বুঝতে পারে না। ফলে অভিযোজন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে; যা অনেক সময় মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

ঝুঁকি এড়াতে যা করবেন: এসিতে কাজ করেও কিছু বিষয়ের প্রতি যত্নশীল হলে শারীরিক ক্ষতি এড়ানো সম্ভব। ঝুঁকি কমাতে এসি নিয়মিত পরিস্কার করতে হবে। এসির তাপমাত্রা কক্ষ তাপমাত্রার (২৫ ডিগ্রি সে.) কাছাকাছি রাখতে হবে। তাছাড়া ঠান্ডার মৌসুমে এসির ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। সূত্র: সমকাল

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট