চট্টগ্রাম বুধবার, ০১ মে, ২০২৪

ইসরায়েল ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী একসূত্রে গাঁথা

তারেক আজিজ চৌধুরী

১৬ অক্টোবর, ২০২৩ | ১১:০০ অপরাহ্ণ

আজ থেকে ৯৩ বছর পূর্বে ১৯৩০ ইংরেজি পোলেন্ট থেকে একদল ইহুদি আগমন ঘটে ফিলিস্তিনে। ইহুদিদের ইউরোপে কেউ পছন্দ করত না। ১৯৩৩ সালে হিটলার ইহুদিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছিল। দিশেহারা হাজার হাজার ইহুদি ফিলিস্তিনে প্রবেশ করতে শুরু করল। ফিলিস্তিনের গাজা শহর থেকে ২ কিলোমিটার দূরে তাদের অবস্থান। তারা সেখানে কৃষি কাজ শুরু করে দিলেন এবং ধীরে ধীরে কৃষি খামার গড়ে তুলতে শুরু করল বিভিন্ন স্থানে। ইহুদিরা অন্যদেশ থেকে যেহেতু এসেছে ফিলিস্তিনের আরবরা তাদেরকে সমাদর করতে লাগল। স্থানীয় আরব ও ইহুদিদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠতে লাগল। সহমর্মিতা কোন ঘাটতি ছিল না। আস্তে আস্তে ইহুদিরা ফিলিস্তিনে আসতে শুরু করল। ইচ্ছেমতো জমি কিনতে লাগল। ইহুদিদের ষড়যন্ত্র ফিলিস্তিনের সহজ সরল আরবেরা বুঝতে পারেনি বলে আজ নিজ দেশে নিজের জন্মভূমিতে ভাড়াটিয়া হয়ে গেছে। ফিলিস্তিনের আরবদের সহজ সরলতার কারণে ৭ লাখ মানুষ নিজের জমি ঘর-বাড়িবিহীন আতংকে অতিবাহিত করছে। নিজ দেশে নিজারা আজ বাস্তুহারা।

 

মায়ানমারে (বার্মা) রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সেই দেশের রাষ্ট্র কতৃক কঠোর অবস্থান দেখে বাংলাদেশের সহজ সরল মানুষ তাদের স্থান দিয়েছে। ঠিক ইহুদিদের ফিলিস্তিনের আরবেরা স্থান দিয়েছিল। বাংলাদেশের মানুষ রোহিঙ্গাদের সমাদর করে যাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের জন্য ক্যাম্পে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন দেশি আন্তর্জাতিক সংস্থা সুযোগ সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। যার কারণে ফিলিস্তিনের ইহুদিদের মতো বাংলাদেশের রোহিঙ্গারা কিছু রাজনৈতিক নেতা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্নস্থানে স্থাপনা করে যাচ্ছে। এমনকি বাংলাদেশের নাগরিক পাসপোর্ট করে প্রবাসে পাড়ি জমিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। যার কারণে বিভিন্ন দেশে শ্রমবাজারে বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। বাংলাদেশের রোহিঙ্গাদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তা বাংলাদেশের জন্য কল্যাণকর নয়। রোহিঙ্গারা আজ দেশের বাইরে যেভাবে বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট করছে ঠিক তেমন বাংলাদেশেও খুন, চুরি, ডাকাতি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারদিকে বাংলাদেশের মানুষ আতঙ্কিত অবস্থায় জীবনযাপন করে যাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের স্বভাব চরিত্র সম্পর্কে সৌদি আরব প্রবাসী বাংলাদেশিরা জানতে পারে। তারা কোন স্বভাবের লোক। বার্মার রোহিঙ্গাদের স্বভাব চরিত্র না থাকার কারণে সৌদি আরবে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয় না। বিশেষ করে পবিত্র মক্কা হারামাইন শরিফে। কিছু অসাধু রাজনৈতিক নেতা ও বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের অসাধু মুনাফালোভী ব্যক্তির কারণে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের ভোটার আইডি কার্ড, পাসপোর্ট সংগ্রহ করে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি দাবি করে বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে। যার কারণে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি প্রবাসীদের সুনাম নষ্ট হচ্ছে।

 

ফিলিস্তিন ইহুদিদের যড়যন্ত্র বুঝতে না পারায় নিজ দেশে পরাধীন। ঠিক বিশ্বের ষড়যন্ত্র বুঝতে না পারলে বাংলাদেশে আগামীতে ফিলিস্তিনের মতো অবস্থা তৈরি হতে পারে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দেশি অস্ত্র তৈরি হচ্ছে যা আমরা দেশের বিভিন্ন নিউজে দেখতে পেয়েছি। একটু লক্ষ্য করলে বোঝা যায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একটু উচ্চস্বরে সাউন্ড হলে যেভাবে বিদেশি দাতা সংস্থা অনুদান নিয়ে এগিয়ে আসে। এদের কাউকে কোন সময় বাংলাদেশের বন্যায় পানিবন্দী মানুষকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। এইগুলো বাংলাদেশের জন্য অশনি সংকেত মাত্র। বাংলাদেশ সরকার যদি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নজরদারি না করে এবং তাদেরকে নিজ দেশে ফেরত না পাঠায় তা হলে বাংলাদেশের জনগণকে নিজ দেশে পরাধীন হয়ে থাকতে হবে আগামীতে।

 

লেখক: তরুণ সংগঠক ও সমাজকর্মী

 

পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট