চট্টগ্রাম শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

কোরবানির ঈদে করণীয় আমলসমূহ

রায়হান আজাদ

৯ জুলাই, ২০২২ | ১:০৮ অপরাহ্ণ

ঈদুল আজহা বা কোরবানি মুসলিম উম্মাহর অন্যতম ঈদ বা উৎসব। এ দিনকে দুনিয়া ও আখিরাতে অর্থবহ করে তুলতে আমাদের কতিপয় দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। হাজীগণ যেমন, কোরবানি দেয়ার পর চুল ও নখ কাটে তেমনি সকল কোরবানিদাতাও নিজ কোরবানি দেয়ার পরই চুল ও নখ কাটবে। এতে প্রচুর সাওয়াব রয়েছে।

ইয়াওমে আরাফা তথা জিলহজ মাসের ৯ তারিখ একটি রোজা রাখবে তাতে এক বছর আগের ও পরের গুনাহ মাফ হয়। পবিত্রভূমি মক্কায়ে মুকাররমায় হাজীরা যেভাবে ইহরাম বাঁধার পর তালবিয়া পাঠ করে তেমনিভাবে ৯ জিলহজ ফজর হতে ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত ফরজ নামাজের পর তাকবিরে তাশরিক পড়তে হবে।

পুরুষেরা উচ্চস্বরে আর মহিলারা মৃদুস্বরে উচ্চারণ করবে। নতুন ও পরিচ্ছন্ন জামা-কাপড় পরিধান করে সুগন্ধি লাগিয়ে ঈদগাহে আল্লাহ আকবর ধ্বনি দিতে দিতে একপথে গমন করে অন্যপথে ফেরা সুন্নাত। নবীজি ঈদুল ফিতরের দিন কিছু না খেয়ে ঈদগাহে যেতেন না কিন্তু ঈদুল আজাহার সময় ঈদের নামাজের আগে কিছু খেতেন না। তাই আমাদেরও উচিত ঈদের নামাজের পর কোরবানি করেই কিছু খেতে যাওয়া।

কোরবানি কবুল হওয়ার জন্য খোদাভীরু মন থাকা প্রয়োজন। নির্ভেজাল চেতনা ও আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে কোরবানি করতে হবে। আল কুরআনে এসেছে “আল্লাহ তা‘য়ালার নিয়ম হল, তিনি আল্লাহভীরু পরহেজগারদের কর্মই গ্রহণ করেন”। সকল দৈহিক ও আর্থিক ইবাদত কেবলমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে হতে হবে। সামাজিক লৌকিকতা ও অহমিকা থাকলে কোরবানিসহ কোন ইবাদতই গ্রহণযোগ্য হবে না। খালিছ নিয়তে ইবাদত করার লক্ষ্যে আল্লাহ পাক তার বান্দাদেরকে মুনাজাত শিখিয়েছেন “ বল, আমার নামায আমার কোরবানি আমার জীবন আমার মরণ সবকিছু আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের জন্য । তার কোন শরীক নেই, এ নির্দেশই আমাকে দেয়া হয়েছে আর আমি হলাম সবার আগে তার অনুগত-ফরমাবরদার। (সুরাতুল আনআম- ১৬২-১৬৩)

কোরবানির তাৎপর্য সম্পর্কে আল কোরআনে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলা হয়েছে “ওসব (কোরবানি) পশুর রক্ত মাংস আল্লাহর দরবারে কিছুই পৌঁছে না। বরঞ্চ তোমাদের পক্ষ থেকে তার কাছে পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া-খোদাভীতি । (সুরা আল হাজ্জ- ৩৭)

মূলত, গোশত ও রক্তের নাম কোরবানি নয়, কোরবানি হল আল্লাহ তা’য়ালার নির্দেশ পালন, আত্মত্যাগ ও সকল কুপ্রবৃত্তির উপর ছুরি চালানোর নাম। কালোবাজারি ও অসদোপায়ে উপার্জিত সম্পদ দিয়ে কোরবানি করলে তা গৃহীত হবে না। হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে “আল্লাহ তা’য়ালা হালাল বস্তু ছাড়া আর কোন কিছুই কবুল করেন না। (ছহিহুল বুখারি)।

সামর্থ্যবান ব্যক্তিকে কোরবানি করার জোর তাগিদ দিয়ে রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তির সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদের মাঠের ধারে কাছেও না আসে। (ইবনে মাজা ও আহমদ)

আমাদের মাঝে সক্ষম যারা তাদের উচিত কোরবানি প্রদানের মাধ্যমে আল্লাহর রেজামন্দি হাছিল করা এবং পবিত্র ও ফজিলতময় এ দিনের যথার্থ কদর করা। আল্লাহ আমাদের সে তৌফিক দান করুন, আমিন।

পূর্বকোণ/এএস

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট