চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

রমজানে রোজাদারদের শ্রেণি বিভাজন

২ জুন, ২০১৯ | ২:৫৬ পূর্বাহ্ণ

পূর্বসূরী আলিমগণ রমজানে যারা রোজা রাখেন তাদেরকে তিনভাগে ভাগ করেছেন। প্রথমত যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছে। অর্থাৎ তারা রোজা রেখেছে ঠিকই কিন্তু রোজার হক আদায় করেনি। তারা শুধুমাত্র খাবার ও স্ত্রী সম্ভোগ থেকে বিরত থেকেছে। তাদের জবান মিথ্যা, গীবত, অশ্লীল ও অনর্থক কথাবার্তা থেকে বিরত থাকেনি; তাদের কান শরীয়তের নিষিদ্ধ বিষয়সমূহ শোনা থেকে বিরত থাকেনি; নিষিদ্ধ বিষয়ের প্রতি দৃষ্টিপাত থেকে তাদের চোখ বিরত থাকেনি, তাদের হাত হারাম উপার্জন থেকে বিরত হয়নি। তাদের পরিণতি হয়েছে তারা শুধু শুধুই ক্ষুধার্থ ও পিপাসার্ত থেকেছে। এদের সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “এমন অনেক রোজাদার রয়েছে যাদের রোজা থেকে ক্ষুধা ও পিপাসা ছাড়া কিছুই অর্জিত হয় না, এমন অনেক রাত্রিকালীন ইবাদাতকারী রয়েছে রাতজাগা ছাড়া তাদের কোন কিছু অর্জিত হয় না।” (সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং ৩২৩৬) দ্বিতীয়ত যারা সর্বদা মধ্যম পন্থা অবলম্বন করেন। তারা খাদ্য ও স্ত্রীর সাথে মেলামেশার পাশাপাশি আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন এমন সব কিছু থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখেন এবং নিজের রোজাকে সব ধরনের অশ্লীলতা থেকে মুক্ত রাখেন। এ শ্রেণির রোজাদার সম্পর্কে জাবির ইবন আব্দুল্লাহ (রা.) বলেন, “তুমি রোজা রাখলে সাথে সাথে যেন তোমার শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তিও হারাম ও মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। (লাতাইফিল মাআরিফ, ১৬৮) তৃতীয়ত ঐসব রোজাদার যারা যথার্থ হক আদায় করে রোজা পালন করে। তাঁরা সর্বদা ভাল কাজ ও পূণ্য অর্জনে প্রতিযোগিতা করে। তাঁরা রোজার আনুসঙ্গিক সব দাবিই পূরণ করে। এ তিন ধরনের মানুষের বিবরণ দিয়ে আল্লাহ বলেন, “এরপর আমি কিতাবের অধিকারী করলাম তাদেরকে যাদেরকে আমার বান্দাদের মধ্য থেকে মনোনীত করেছি, তবে তাদের কেউ নিজেদের প্রতি অত্যাচারী, কেউ মধ্যমপন্থী এবং কেউ আল্লাহর ইচ্ছায় কল্যাণের কাজে অগ্রগামী। এটাইতো মহা অনুগ্রহ।” (সুরা আল-ফাতির: ৩২)
অতএব রমজানের এই বিদায় লগ্নে আমাদের আত্মসমালোচনা করার সময় এসেছে যে, আমরা কোন শ্রেণির রোজাদার হিসেবে রমজানকে বিদায় দিতে চলেছি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট