চট্টগ্রাম শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪

হাঁটলে দূরে থাকবে ৮ রোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ জানুয়ারি, ২০২৩ | ১২:১৩ অপরাহ্ণ

এই ছোট্ট ছোট্ট পায়ে চলতে চলতে ঠিক পৌঁছে যাব…। পৌঁছে তো যেতে হবেই। তবে চাঁদের পাহাড়ে নয়, বরং প্রতিদিনের নিয়মে সুস্বাস্থ্য ও রোগমুক্ত শরীরের দিকে আরও এক ধাপ এগোতে হলে হাঁটা জরুরি। কারণ নিয়মিত হাঁটলেই অনেক মারাত্মক রোগ থেকে মুক্তি মিলবে সহজেই। শরীর থাকবে সুস্থ। মন থাকবে একবারে চাঙা।

 

হৃৎপিণ্ডের সমস্যায় 

চিকিৎসকরা বলছেন, প্রতি সপ্তাহে মাত্র আড়াই ঘণ্টা হাঁটলেই হার্টের অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব। অর্থাৎ কেউ যদি দিনে মাত্র ২১ মিনিট হাঁটাহাঁটি করেন, তা হলে তার হার্ট তো ভাল থাকবেই, সেই সঙ্গে হৃদ্যন্ত্রগত অসুস্থতা প্রায় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমার সম্ভাবনা রয়েছে। হাঁটাহাঁটিতে খারাপ কোলেস্টেরল দূর হয়ে রক্তে ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে।

 

ওবেসিটি রুখতে 

অনেকে বলেন, হাঁটা হচ্ছে সহজতম এক্সারসাইজ। কিন্তু কাজটা অতটাও সহজ নয়। রীতিমতো ঘাম ঝরিয়ে দ্রুত পায়ে একই গতিতে হাঁটা ওজন কমাতে সাহায্য করে। ব্রিস্ক ওয়াকিং ওবেসিটির হার কমাতে পারে। হাঁটার ফলে কাভ্স, স্কোয়াড্স আর হ্যামস্ট্রিংয়ে টান পড়ে। ফলে নিয়মিত হাঁটলে পা, হিপের টোনিংয়েও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

 

ভিটামিনের ঘাটতিতে

দিনের বেলায় হাঁটাচলা করলে সূর্যরশ্মি শরীরে প্রবেশ করে। ফলে শরীরে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি কমে। শক্ত, মজবুত হাড় পেতে ও আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেমের খেয়াল রাখার জন্য এটি জরুরি। এ ছাড়া ভোরবেলা বাতাসে দূষণও তুলনামূলক ভাবে কম থাকে। ফলে নির্মল বাতাসে শ্বাস নিয়ে শরীরকে আরও সতেজ করে তুলতে পারেন।

 

ডায়াবেটিসের সমস্যায় 

ডায়াবেটিস যে বহু রোগের উৎস, সে কথা এখন সবার জানা। সুগার লেভেলকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে অনেক শারীরিক সমস্যা থেকে রেহাই মিলে। এ জন্য হাঁটার বিকল্প নেই। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৩০ মিনিট হাঁটা বা ২৪০০ স্টেপ পথ চলা থেকে শুরু করে দৈনিক লক্ষ্য বাড়াতে হবে ৭৭ মিনিট হাঁটা বা ৬৪০০ স্টেপ চলাফেরা পর্যন্ত।

 

রক্তচাপের সুরক্ষায় 

আপনি যত হাঁটবেন, আপনার রক্তচাপও ততটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে। অর্থাৎ উচ্চরক্তচাপজনিত সমস্যার কারণে যারা রোজ ওষুধ খেতে বাধ্য হন, তারা এই সমস্যা অনেকটাই কমিয়ে আনতে পারেন হাঁটাহাঁটির মাধ্যমে।

 

ক্যানসারের প্রবণতায় 

সপ্তাহে ৩ ঘণ্টা হাঁটলে ইউটেরাইন আর ব্রেস্ট ক্যানসারের আশঙ্কা প্রায় ১৭% পর্যন্ত কমতে পারে। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির স্টাডি বলছে, হাঁটার সময়টা আরও বাড়ালে ক্যানসারের আশঙ্কা নাকি প্রায় ৫৪% অবধিও কমার সম্ভাবনা থাকে।

 

স্মৃতিরক্ষায় 

হাঁটাহাঁটি করলে স্মৃতিশক্তিও রীতিমতো উর্বর থাকে। রোজকার ব্রিস্ক ওয়াকিং মস্তিষ্কের সঙ্কোচন কমিয়ে দেয়। ফলে প্রৌঢ় ও বৃদ্ধ বয়সে হাঁটাহাঁটি পুরনো দিনের ঘটনাকে মনে করিয়ে দেয় সহজে। হাঁটাহাঁটির ফলে ডিমেনশিয়াও আসে দেরিতে।

 

বার্ধক্য প্রতিরোধে 

বয়স বাড়া মানেই বৃদ্ধ হয়ে যাওয়া নয়। তাই এই সময়ে ঘরকুনো হয়ে না থেকে হাঁটাহাঁটি করুন। এতে অথর্ব হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কমবে। তাই ৭০ থেকে ৭৯ বয়সী মানুষেরা যদি নিয়ম মেনে অল্প হাঁটাচলা করেন, তা হলে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সচল থাকে বেশি।

 

জাতীয় হাঁটা দিবস আজ 

কেবল হেঁটেই অনেক কঠিন রোগ থেকে মুক্তি মিললেও দেশের অধিকাংশ মানুষ নিয়মিত হাঁটেন না। এমন বাস্তবতায় মানুষকে সচেতন করতে বাংলাদেশে প্রতি জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় শনিবার উদযাপিত হয় জাতীয় হাঁটা দিবস। নানা আয়োজনে সারাদেশে দিবসটি উদযাপিত হবে আজ। চট্টগ্রামেও মানুষকে সচেতন করতে নেওয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি।

 

পূর্বকোণ/আরএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট