চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

ব্যবসায়িক পার্টনারদের শয্যাসঙ্গী হতে স্ত্রীকে বাধ্য করায় স্বামী খুন !

অনলাইন ডেস্ক

২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৬:৩৪ অপরাহ্ণ

গাজীপুরের শ্রীপুরে স্বামীকে খুন করে এসিডে মুখ ঝলসে দিয়ে লাশ তোশকে মুড়িয়ে রেখে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার ছয় দিনপর স্ত্রী ও শ্বশুরকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। সোমবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানী ঢাকার দক্ষিণ খান এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। স্ত্রীর বরাত দিয়ে র‌্যাব-১ এর গাজীপুরের কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, গ্রেপ্তার ওই নারী নিহত আবদুর রহমানের (৫২) চতুর্থ স্ত্রী। আবদুর রহমান পেশায় একজন জমি ব্যবসায়ী ছিলেন। ১০ ফেব্রুয়ারি আবদুর রহমান তার ব্যবসায়িক পার্টনার রতনের শয্যাসঙ্গী হতে স্ত্রীকে বাধ্য করে। ওই দিন রাত ১১টার দিকে রতন তাদের বাসা থেকে চলে যায়।

এরপর স্ত্রী পূর্বপরিকল্পিতভাবে  ১১ ফেব্রুয়ারি ভোরে বাসায় থাকা ধারালো দা দিয়ে তার স্বামী আবদুর রহমানকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলা কেটে হত্যা করেন এবং লাশ তোশকে মুড়িয়ে রাখেন। লাশ যেন চেনা না যায় সে জন্য লাশের মুখ এসিড দিয়ে ঝলসে দেয়া হয়। পরে স্ত্রী তিনদিন একই বাসায় অবস্থান করেন। লাশ সরিয়ে ফেলতে ব্যর্থ হয়ে একপর্যায়ে বাবা-মায়ের সহায়তায় ওই বাসা থেকে পালিয়ে যান। গাজীপুরসহ বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর দক্ষিণ খান এলাকায় তার চাচার বাসায় আত্মগোপন করেন স্ত্রী। সেখান থেকে সোমবার রাতে র‌্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে। আবদুর রহমানের স্ত্রী খুনের ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার কথা র‌্যাবের কাছে স্বীকার করেছেন বলেও জানান এই র‌্যাব কর্মকর্তা। ওই গৃহবধূ র‌্যাবকে আরো জানান, সেই স্ত্রী এবং আবদুর রহমান উভয়েরই বাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকায় হওয়ার সুবাদে দুজন পূর্বপরিচিত ছিলেন। ২০১৬ সালে আবদুর রহমান তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে বসবাস করতেন।

ওই সময় এই নারী টঙ্গী সরকারি কলেজে ডিগ্রি পরীক্ষার্থী ছিলেন। দুজনের মধ্যে পূর্বপরিচয় থাকার কারণে তিনি আবদুর রহমানের টঙ্গী বাসায় থেকে ডিগ্রি পরীক্ষা দিয়েছেন। সেই সুবাদে আবদুর রহমান তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। আবদুর রহমান একদিন কৌশলে কলেজছাত্রীকে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অজ্ঞান করে টঙ্গীর বাসায় একাধিকবার ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করেন। পরবর্তীতে ধর্ষণের ভিডিও এবং হত্যার ভয় দেখিয়ে আবদুর রহমান তাকে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করে আসছিলেন। ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ায় ওই কলেজছাত্রীকে প্রথম স্বামী ডিভোর্স দেন। পরে তিনি শ্রীপুর নয়নপুর এলাকায় একটি ওষুধের দোকান পরিচালনা করে জীবিকা নির্বাহ করত। আবদুর রহমান গত ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তাকে কোর্টের মাধ্যমে বিয়ে করেন এবং শ্রীপুর এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার শুরু করেন। এরপর থেকে আবদুর রহমান ব্যবসায়িক স্বার্থে আবার কখনো বিপুল টাকার বিনিময়ে তার পার্টনারদের শয্যাসঙ্গী হতে স্ত্রীকে বাধ্য করতেন। এসব নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তিনি আবদুর রহমানের কাছ ডিভোর্স চান। এতে স্ত্রী ও তার মা-ভাইকে খুন করার হুমকি দেন আবদুর রহমান। এ হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে স্বামী আবদুর রহমানকে খুন করে তিনি।

 

 

 

 

পূর্বকোণ/এম

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট