চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ওবায়দুল কাদেরকে ‘ফোন করেননি’ মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক হ ঢাকা অফিস

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৬:৪৯ পূর্বাহ্ণ

কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ফোন করেননি বলে দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওবায়দুল কাদেরকে ফোন করার বিষয়টি অস্বীকার করে মির্জা ফখরুল গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব স্বভাবসুলভ অসত্য বলেছেন। আমি যে তাকে ফোন করেছি তা কে শুনেছে?’ মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে পাল্টা প্রশ্ন করে জানতে চাই, কখন তাকে ফোন করা হয়েছে? কে শুনেছে তার কথা?’

খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘সরকারের এখন আর এ বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। সম্পূর্ণ মানবিক কারণে তাকে মুক্তি দেওয়াটা অত্যন্ত জরুরি।’ খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের গুরুতর অবনতি হয়েছে বলে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই মুহূর্তে তার শরীরের যা অবস্থা, ট্রিটমেন্টের জন্য বিদেশে পাঠানো প্রয়োজন। এজন্য তার পরিবার থেকেই আবেদন জানানো হয়েছে।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমাদের কথা পরিষ্কার। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি নিয়ে আমরা আজকে নয়, গত দুই বছর ধরেই কোর্টে যাচ্ছি, কথা বলছি, রাস্তায় নামছি, চিৎকার করছি। সারা দেশবাসী এই মুহূর্তে ম্যাডামের মুক্তির দাবি করছে। একই সঙ্গে আজকে তার (খালেদা জিয়া) পরিবারও করছে। কয়েকদিন আগেই তার পরিবার উন্নত চিকিৎসার জন্য লিখিতভাবে বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছে। আর বাকি প্রশ্নগুলো সব অবান্তর থাকে। এগুলো আর প্রশ্ন থাকে না।’

গতকাল শুক্রবার ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ফোন করেছিলেন। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর সঙ্গে গতকালও কথা বলে জানতে পেরেছি, আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও আবেদন আসেনি। খালেদা জিয়ার পরিবারের লোকজন ও দলের লোকেরা বিচ্ছিন্নভাবে তার মুক্তির বিষয়ে কথা বলছেন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের আবেদনটা জানাতে বলেছেন, মৌখিকভাবে। আমি সেটা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি। আমি এটুকু বলতে পারি, এছাড়া কোনও লেনদেন বা কথাবার্তা হয়নি। কাল টকশোতে শুনলাম, তলে তলে আলোচনা অনেক দূর এগিয়ে গেছে, আমার মনে হয় বাস্তবে বিষয়টা তেমন কিছু নয়।’ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি আগে থেকেই বলে আসছি, খালেদা জিয়ার এই মামলাটি রাজনৈতিক মামলা নয়। সরকারের বিবেচনার বিষয়টা তখনই আসে, যখন বিষয়টি রাজনৈতিক বিবেচনার হয়। কিন্তু খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় সাজা ভোগ করছেন। রাজনৈতিক মামলা হলে সরকারের পক্ষে বিবেচনার বিষয় ছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা যাবে। তবে প্যারোল কি কি কারণে দেওয়া যায় এবং দোষী বন্দীকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া যায় কিনা, আর তারা কি কি কারণে প্যারোলে মুক্তি চান, এসব বিষয় উল্লেখ করে লিখিতভাবে কোনও আবেদন তারা এখনও করেননি।’

খালেদা জিয়ার দল কিংবা পরিবার যদি আবেদন করেন তবে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘যদিটা পরে দেখা যাবে।’ আমাদের বক্তব্য হচ্ছে প্যারোলের আবেদনের সঙ্গে বিষয়টির মিল আছে কিনা, এটা খতিয়ে দেখা। তাদের আবেদন খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার জন্য যৌক্তিক কিনা, এ বিষয়টি অবশ্যই দেখা হবে। ‘যেহেতু খালেদা জিয়াকে আদালত দোষী ঘোষণা করেছে, কাজেই মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্টটা আদালতের কাছেই যেতে হবে।’
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সাংবাদিকদের করা অপর এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে অমানবিক কোনও কিছু সরকার করতে পারে না। তাকে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়টি সরকারের মাথায় আছে। তবে একটা বিষয় হচ্ছে তার শারীরিক অবস্থার বিষয়টা তার দলের লোকেরা যেভাবে বলেন, চিকিৎসকরা কিন্তু সেভাবে বলছেন না।’ বিএনপির ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদককে ফোন করা ও সরকারকে আন্দোলনের হুমকি বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এটা বিএনপির দ্বিচারিতা।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট