চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

শিমুল মুস্তাফার আবৃত্তিসন্ধ্যা

‘আপোস করিনি কখনোই আমি, এই হল ইতিহাস’

আশরাফুন নুর

১৮ মে, ২০১৯ | ২:১১ পূর্বাহ্ণ

ব্রিটিশ শাসনামলে ইংরেজদের সাথে আপোস করেননি ক্ষুদিরাম বসু, মাস্টারদা সূর্যসেনসহ এমন আরো অনেক বীর বাঙালি। ১৯৫২ সালেও রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে আপোস করেননি রফিক, জব্বার, সালামসহ অন্যরা। একাত্তরে ৭ কোটি বাঙালিকে সঙ্গী করে পাকিস্তানের সাথে আপোস করেননি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
এভাবেই একের পর আন্দোলন করে আপোসহীন থেকে বাঙালি পেয়েছে স্বাধীনতার টকটকে লাল সূর্য। বাঙালি ও বাংলাদেশের ইতিহাস যন আপোষহীনতারই ইতিহাস। তাই স্বাধীনতার চেতনাকে সামনে রেখেই সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের ‘আমার পরিচয়’ কবিতার ‘আপোস করিনি কখনোই আমি, এই হল ইতিহাস’ এই লাইনটিকে একান্ত নিজের করে নিয়েছেন আবৃত্তিশিল্পী শিমুল মুস্তাফা।
আলো আঁধারি মঞ্চ থেকে দৃপ্তকণ্ঠে ভেসে আসে ‘পরিচয়ে আমি বাঙালি/ আমার আছে ইতিহাস গর্বের/ কখনোই ভয় করিনাকো আমি উদ্যত কোন খড়গের, একই হাসিমুখে বাজায়েছি বাঁশি, গলায় পড়েছি ফাঁস/ আপস করিনি কখনোই আমি, এই হলো ইতিহাস।’…। ভরাট এ কণ্ঠ শুনে না দেখে বুঝা যায় এ আবৃত্তিশিল্পীর পরিচয়। মঞ্চের আলো আঁধারি থেকে কবিতাটি দৃপ্ত উচ্চারণে আবৃত্তি করতে করতে আলোতে আসেন জনপ্রিয় আবৃত্তিশিল্পী শিমুল মুস্তাফা।
‘আপস করিনি কখনোই আমি, এই হলো ইতিহাস’ এ লাইনটিকে ধারণ করে গত ২৫ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে শুরু হয় জনপ্রিয় আবৃত্তিশিল্পী শিমুল মুস্তাফার আবৃত্তিসন্ধ্যা। ‘তারুণ্যের উচ্ছ্বাস’ প্রতিষ্ঠার যুগপূর্তি উপলক্ষে আবৃত্তি সংগঠনটি বছরব্যাপী যুগপূর্তির অনুষ্ঠানমালার চতুর্থ নিবেদন এই আবৃত্তিসন্ধ্যার আয়োজন করেছেন।
মঞ্চে আসার পর থেকে শিমুল মুস্তাফা প্রেম, দ্রোহ, প্রকৃতি ও ইতিহাসমাখা প্রায় ত্রিশটি কবিতা আবৃত্তি করেন। তাঁর পরিবেশনায় উঠে আসেল কবি শামসুর রাহমান, নির্মলেন্দু গুণ, সলিল চৌধুরী, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, পূর্ণেন্দু পাত্রী, জয় গোস্বামী ও রফিক আজাদের বেশ কিছু কবিতা। এছাড়াও শিমুল মুস্তাফার কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বাঁশি’, কাজী নজরুল ইসলামের ‘কামাল পাশা’, শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘অবণী বাড়ী আছো’, হুমায়ুন আজাদের ‘আমাদের মা’ কবিতার পরিবেশনা মুগ্ধ করে দর্শকদের। অনুষ্ঠানের আবহ প্রক্ষেপণে ছিলেন নিখিলেশ বড়–য়া এবং রনি দে।
এ আবৃত্তিসন্ধ্যা পুরোটা সময় জুড়ে কবিতার সান্নিধ্যে থাকা কবিতাপ্রেমীদের কাছে এক একটি কবিতা যেনো ছিলো স্লোগানের মতো। যা আমাদের চিন্তা-চেতনাকে জাগ্রত করে, প্রেরণা জোগায়, আমাদের করে তুলে সৃষ্টিশীল, জীবনকে শেখায় ভালবাসতে, আত্মসংস্কৃতিকে ও জাতীয় সংস্কৃতিকে করে সমৃদ্ধ।
বারকোড রেস্টুরেন্ট গ্রুপের সহযোগিতায় এ আয়োজনে আবৃত্তিশিল্পী মুজাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন তরুণ শিল্পোদ্যোক্তা এবং বারকোড রেস্টুরেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল হক। এসময় তিনি আবৃত্তিশিল্পী শিমুল মুস্তাফাকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন এবং স্মারক উপহার তুলে দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম। যুগপূর্তির বছরটিকে ঘিরে আরও সৃষ্টিমুখর করে স্মরণীয় করে রাখার উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান আবৃত্তিশিল্পী মুজাহিদুল ইসলাম।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট