১৩৫ বছর ধরে বাড়ির মধ্যেই বোতলে লুকনো ছিল গোপন বার্তা। সেই বোতল বা গোপন বার্তা যে বাড়ির মধ্যে আছে তা-ও কোনও দিন ঘুণাক্ষরে টের পাননি গৃহকর্ত্রী। বাড়িতে কলমিস্ত্রি কাজ করছিল। দেওয়াল খুঁড়তেই বেরিয়ে এল বোতল এবং তার ভিতরে থাকা গোপনবার্তা। বোতলের ভিতরের থাকা কাগজের বার্তা দেখে রীতিমতো হতবাক ওই পরিবারের সদস্যরা।
সম্প্রতি স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে ইলিদ স্টিম্পসন নামে এক নারী তার বাড়িতে কয়েকটি কাজ করানোর জন্য কলমিস্ত্রি পিটার অ্যালানকে ডেকে পাঠান। তখনই এ ঘটনা ঘটে।
অ্যালান নামে এক কলমিস্ত্রিকে ওই বাড়ির এক দেওয়ালে পাইপলাইনের কাজ করতে বলেন বাড়ির মালিক ইলিদ। হাতুড়ি দিয়ে ওই কাঠের দেওয়ালে আঘাত করতেই বেরিয়ে আসে একটি বোতল। অ্যালান দেখেন ওই মুখবন্ধ বোতলটি ধুলো এবং কাঠগুড়োয় মাখা। বোতলের ভিতরে এক টুকরো কাগজ লম্বা করে পাকিয়ে ঢোকানো রয়েছে বলেও লক্ষ করেন অ্যালান।
মাথামুন্ডু কিছুই না বুঝে এক দৌড়ে ইলিদকে ডেকে নিয়ে আসেন অ্যালান। ওই জায়গায় বোতল কীভাবে এলো? কেই বা ওই বোতল সেখানে রাখল, তা নিয়ে দ্বন্ধে পড়েন ইলিদও। বোতলটি একটু নেড়েচেড়ে ইলিদ দেখেন, এই বোতলের বয়স কম করে হলেও ১০০ বছরের বেশি। বোতলের ভিতরে পাকানো কাগজ বের করতেও কৌতূহলি হয়ে পড়েন তিনি।
বোতলের ভেতর পাকানো কাগজ দেখে ইলিদ বুঝতে পারেন, এই কাগজ আদতে একটি চিঠি। সেই চিঠির লেখা পড়ে আরও বিস্মিত হয়ে যান তিনি। অনেক চেষ্টা করেও ইলিদ চিঠির ভিতরে থাকা সেই গোপন এবং ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তার অর্থ উদ্ধার করতে পারেননি।
ইলিদ প্রাথমিকভাবে শুধু বোঝেন, এই কাগজের লেখা এবং বোতল অন্ততপক্ষে ১৩৫ বছরের পুরনো। ১৩৫ বছরের পুরনো একটি তারিখে এই চিঠি লেখা হয়। যে বোতলে এই চিঠিটি রাখা ছিল, তা একটি হুইস্কির বোতল বলেও বুঝতে পারেন তিনি। ১৩৫ বছর ধরে এই বোতল তার বাড়ির কাঠের দেওয়ালের ভিতরেই লুকোনো ছিল।
ধুলোমাখা ওই হুইস্কির বোতলটির ভিতরে যে চিঠি ছিল, তা ১৮৮৭ সালের ৬ অক্টোবর লেখা। এরপর বহু বসন্ত পেরিয়ে গেলেও গোপনই রয়ে গিয়েছে এই বোতলে থাকা বার্তা।
কিন্তু কী লেখা ছিল সেই চিঠিতে? চিঠিতে লেখা ছিল, ‘জেমস রিচি এবং জন গ্রিভ এই মেঝেটি তৈরি করেছিলেন। কিন্তু তারা এই বোতলের হুইস্কি খাননি। ৬ অক্টোবর, ১৮৮৭। যে এই বোতলটি খুঁজে পাবে সে নিশ্চয়ই ভাবতে পারে যে আমরা রাস্তার ধুলোর মতো উড়ে গিয়েছি।’
দুর্ভাগ্যবশত বোতলের ঢাকনা না খুলতে পারায় বোতলটি ভেঙে ওই চিঠি বার করতে হয় ইলিদকে। ইলিদের ধারণা এই অর্থহীন লেখার মধ্যে কোনও গোপন বার্তা লুকনো রয়েছে। সেই বার্তা হতে পারে গুপ্তধনেরও। সবার কাছ থেকে কোনও গোপন তথ্য লুকোতেই অর্থহীন ভাবে ওই চিঠি লেখা হয়েছে।
এই বিষয়ে ইলিদ এক সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘আমি ভাবছি, এই চিঠি সংরক্ষণ করে রাখব। যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই চিঠির বিষয়ে জানতে পারে।’
পূর্বকোণ/পিআর