চট্টগ্রাম শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

ধর্মসভায় মুসলিম নির্মূলের ডাক: ভারতীয় দূতকে তলব পাকিস্তানের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৮ ডিসেম্বর, ২০২১ | ১:২৫ অপরাহ্ণ

ভারতের হরিদ্বারে অনুষ্ঠিত ‘ধর্ম সংসদে’ মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতের সিনিয়র কূটনীতিককে তলব করেছে পাকিস্তান সরকার।

হিন্দুস্থান টাইমস জানায়, গত ১৭ থেকে ১৯ ডিসেম্বর উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারের বেদ নিকেতন ধামে ধর্ম সংসদের আয়োজন করে হিন্দু রক্ষা সেনা। সেখানে উসকানিমূলক বক্তব্য পেশ করেছিলেন সাধুরা।

পাকিস্তান সরকারের প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ডন পত্রিকাও।

ভারতীয় হাইকমিশনের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্সকে ইসলামাবাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে ‘ভারতীয় মুসলিমদের বিরুদ্ধে হিন্দুত্ববাদী বিদ্বেষ’ ছড়ানো প্রসঙ্গে উদ্বেগের কথা জানানো হয়। বিষয়টি ভারত সরকারকেও জানাতে বলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

তবে কূটনীতিককে তলব করার বিষয়ে ভারতের তরফ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

হিন্দু রক্ষা সেনার প্রবোধানন্দ গিরি এবং অন্যান্য হিন্দুত্ববাদী ব্যক্তিত্বদের উল্লেখ করে পাকিস্তান এক বিবৃতিতে বলে, জাতিগত নির্মূলের ডাক দেওয়ার পরও কেউ কোনো দুঃখ প্রকাশ করেনি বা ভারত সরকার এখনো পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বিষয়টি খুবই নিন্দনীয়।

জাতিসংঘ, ওআইসি ও সংশ্লিষ্ট মানবাধিকার সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে, বিশেষ করে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সামষ্টিক ও নিয়মতান্ত্রিক মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং আসন্ন গণহত্যা থেকে তাদের বাঁচানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান। ভারতকে দায়বদ্ধ করার কথাও বলে দেশটি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, প্রকাশ্যে সাধুদের কট্টরপন্থার ডাকে সমালোচনার ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, এ ঘটনায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩এ ধারায় ওয়াসিম রিজভি ওরফে জিতেন্দ্র ত্যাগীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। তিনি উত্তরপ্রদেশের শিয়া ওয়াকফ বোর্ডের সাবেক প্রধান। পরে ইসলাম ছেড়ে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেন তিনি। তা ছাড়া এই ঘটনায় এফআইআর-এ সন্ন্যাসিনী অন্নপূর্ণা মা ও হিন্দু মহাসভার সাধারণ সম্পাদক ধর্মদাস মহারাজের নামও যুক্ত হয়। উত্তরাখণ্ড পুলিশের ডিজিপি অশোক কুমার এই ঘটনার প্রেক্ষিতে জানিয়েছেন, বিদ্বেষমূলক বার্তা নিয়ে এমন মন্তব্য কিছুতেই বরদাশত করা হবে না।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, শুধু উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারই বিদ্বেষমূলক কথা শোনা যাচ্ছে আরও কিছু অনুষ্ঠানে। যেমন; ছত্তিশগড়ের রায়পুরে ধর্মীয় মঞ্চ থেকে মোহনদাস গান্ধীকে কটু কথা বলেই ক্ষান্ত থাকেননি ধর্মগুরু কালীচরণ মহারাজ, বলেছেন তাকে হত্যা করে প্রকৃত দেশপ্রেমের কাজ করেছেন নাথুরাম গডসে। হিন্দুত্ববাদী এই সন্তের কথায়, গান্ধীই দেশ ভাগ করিয়েছেন এবং তার জন্যই ভারত হিন্দু রাষ্ট্র হয়ে উঠতে পারেনি। অন্য ধর্মকে বিঁধেও নানা আক্রমণাত্মক কথা বলেছেন কালীচরণ।

কংগ্রেস শাসিত ছত্তিশগড় সরকার এই সন্তের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক বিভেদ তৈরির চেষ্টা এবং হিংসায় উস্কানি দেওয়ার দায়ে এফআইআর করেছে।

আরও জানা যায়, হরিদ্বার ও দিল্লির ধর্মসংসদে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও মুসলিমদের গণহত্যা করার আহ্বানের ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের ৭৬ জন আইনজীবী ভারতের প্রধান বিচারপতি এনভি রমনাকে চিঠি লিখেছেন।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট