চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

প্রবাসীদের অর্ধেকই অদক্ষ

৪৬ বছরে বিদেশে কর্মসংস্থান হয় এক কোটি ২৭ লাখ ২ হাজার ১৭৬ জন। এর মধ্যে ৬০ লাখ ৬০৪ জন গেছে অদক্ষ। যা মোট কর্মসংস্থানের ৪৭.২৪%

মোহাম্মদ আলী 

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ | ৪:০৭ অপরাহ্ণ

৪৬ বছরে বিদেশে এক কোটি ২৭ লাখ ২ হাজার ১৭৬ জনের কর্মসংস্থান হলেও অর্ধেকই গেছেন অদক্ষ শ্রমিক। এতে ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। সময়মতো কাজের সুযোগ না পেয়ে অদক্ষ শ্রমিকরা বিদেশে বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন। এছাড়াও ভাষাগত দক্ষতার অভাবে বিদেশের আইনকানুন সহজে বুঝতে পারেন না তারা। তাতে নষ্ট হয় দেশের ভাবমূর্তিও।

 

তবে অদক্ষ শ্রমিক কমাতে সরকার নানামুখী কার্যক্রম চালাচ্ছে। বিশেষ করে দেশের প্রতিটি উপজেলায় নির্মাণ করছে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। সেখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বিদেশে যেতে পারবে দক্ষ জনশক্তি।

 

বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো সূত্র জানায়, বিগত ৪৬ বছরে বিদেশে এক কোটি ২৭ লাখ ২ হাজার ১৭৬ জনের কর্মসংস্থান হয়। এরমধ্যে পেশাদার গেছেন মাত্র ২ লাখ ৩৬ হাজার ৯৭৮ জন, যা মোট কর্মসংস্থানের ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ। একই সময়ে দক্ষ শ্রমিক গেছেন ৪৪ লাখ ৫৫ হাজার ৮৫৫ জন, যা মোট কর্মসংস্থানের ৩৫ দশমিক ১১ শতাংশ। স্বল্প দক্ষ শ্রমিক গেছেন ২০ লাখ ৪ হাজার ৭৩৯ জন যা মোট কর্মসংস্থানের ১৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি গেছেন অদক্ষ শ্রমিক। সংখ্যায় হচ্ছে ৬০ লাখ ৬০৪ জন। যা মোট কর্মসংস্থানের ৪৭ দশমিক ২৪ শতাংশ।

 

সূত্র আরো জানায়, স্বাধীনতার পর ১৯৭৬ সাল থেকে বিদেশে বাংলাদেশি জনশক্তির কর্মসংস্থান শুরু হয়। ওই বছরই বাংলাদেশ থেকে বিদেশে জনশক্তি কর্মসংস্থান হয় ৬ হাজার ৮৭ জন। এরমধ্যে পেশাদার ৫৬৮ জন, দক্ষ শ্রমিক ১ হাজার ৭৭৫ জন, স্বল্প দক্ষ ৫৪৩ জন এবং অদক্ষ ৩ হাজার ২০১ জন। এরপর বিদেশে বাড়তে থাকে বাংলাদেশি শ্রমিকের কর্মসংস্থান। কিন্তু যে হারে কর্মসংস্থান বাড়ছে, সে হারে বাড়ছে না দক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা।

 

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল আলম মজুমদার দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘দেশে-বিদেশে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা মেঠাতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। নির্মাণ করছে টিটিসি (কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র)। যাতে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদী প্রশিক্ষণ নিয়ে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হতে পারে। তাতে বাড়বে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহও’।

মোহাম্মদ জহিরুল আলম মজুমদার বলেন, ‘চট্টগ্রামের ৬ উপজেলায় টিটিসি নির্মাণের কাজ চলছে। অবশিষ্ট ৮ উপজেলায় টিটিসি নির্মাণ করা হবে’।

সূত্র জানায়, মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি শ্রমিকরা কাজ করছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ কয়েকটি দেশ হচ্ছে- সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমান, কাতার, বাহরাইন, লেবানন, জর্ডান, লিবিয়া, সুদান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা, ইতালি, জাপান, মিশর, ব্রুনাই, মরিশাস, ইরাক, মালদ্বীপ ইত্যাদি। এসব জনশক্তি মোট ১৩৭টি পেশার ক্যাটাগরিতে চাকরি নিয়ে বিদেশে যান। তবে সবচেয়ে বেশি যায় নির্মাণ শ্রমিক, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রিশিয়ান, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, প্লাম্বিং, ড্রাইভিং পেশায়।

 

পূর্বকোণ/পি-মামুন

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট