ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে চুক্তি করতে যাচ্ছে বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের দাবিতে ফিলিস্তিনি জনগণের কয়েক দশকের সংগ্রামকে পাশ কাটিয়ে আজ মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউসে তিন দেশের মধ্যে এ সংক্রান্ত ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, ইরানের বিরুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যের যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোর কৌশলগত সখ্যতার বিষয়টিও এ চুক্তির মাধ্যমে আরও স্পষ্ট হবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, এ চুক্তির ফলে হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থিতিতে চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে নাটকীয় একটি মাসের সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন কয়েক দশকের বিরোধ নিষ্পত্তি ছাড়াই চলতি মাসেই প্রথমে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও পরে বাহরাইন তেল আবিবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঘোষণা দেয়।
ট্রাম্পের উদ্যোগে আয়োজিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান ও বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল লতিফ আল জায়ানি নিজ নিজ দেশের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন।
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন অঙ্গীকারাবদ্ধ হওয়ার আগে ১৯৭৯ সালে মিশর এবং ১৯৯৪ সালে জর্ডান ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে ফিলিস্তিনিদের বিরোধিতা ও তীব্র প্রতিবাদের সত্ত্বেও দুটি আরব দেশের ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের ঘোষণা ট্রাম্পের অভাবনীয় কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হবে।
৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইসরায়েলের সঙ্গে আমিরাত ও বাহরাইনের ‘শান্তি চুক্তি’ ইসরায়েলপন্থি এভেঞ্জেলিকাল খ্রিস্টানদের ভোট টানতেও বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে। রিপাবলিকান ঘাঁটিগুলোতে জয় নিশ্চিত করতে এ ভোটারদের সমর্থন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের ভেতর দিয়ে দেশদুটি মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তার এবং তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের বিকাশ নিয়ে তাদের যৌথ উদ্বেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটাল বলেও ধারণা অনেকের।
শুরু থেকেই ইসরায়েলের সঙ্গে আমিরাত ও বাহরাইনের চুক্তির বিরোধিতা করে আসছে ইরান।
ট্রাম্পকন্যা ইভাঙ্কার স্বামী জারেড কুশনারই তেল আবিবের সঙ্গে দুই আরব দেশের চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছেন। সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউসের এই জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা বলেছেন, অতীতের সংঘাতের দিকে নজর না দিয়ে মানুষ এখন অন্তহীন সম্ভাবনায় ভরা প্রাণবন্ত ভবিষ্যতের দিকে নজর দিচ্ছে।
মার্কিন প্রশাসনের ‘টার্গেটে’ উপসাগরের অন্যতম প্রভাবশালী দেশ সৌদি আরব রয়েছে। তবে ইঙ্গিত মিলেছে রিয়াদ এখনই তেল আবিবের সঙ্গে সম্পর্ক স্থানে ‘প্রস্তুত নয়’।
তিনি আরও আরব দেশকে ইসরায়েলের সঙ্গে একই ধরনের চুক্তিতে নিয়ে আসতে চেষ্টা করছেন বলেও জানিয়েছে রয়টার্স। ধারণা করা হচ্ছে, তেল আবিবের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনেএখন ওমানকে রাজি করাতে চেষ্টা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। গত সপ্তাহে দেশটির সুলতানের সঙ্গে ট্রাম্পের কথাও হয়েছে।
পূর্বকোণ/আরপি