চট্টগ্রাম রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪

নারীর সুস্থতায় চাই সঠিক খাদ্যাভ্যাস

অনলাইন ডেস্ক

৩১ ডিসেম্বর, ২০২২ | ৭:৪১ অপরাহ্ণ

একজন নারী, যিনি গৃহিণী কিংবা কর্মজীবী যাই হোন না কেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রচণ্ড ব্যস্ত সময় পার করেন তিনি। সংসারের কিংবা অফিসের সব কাজের প্রতি এবং সবার প্রতি সচেতন হলেও নিজের প্রতি তেমন সচেতন নন বেশির ভাগ নারীই। সঠিক সময়ে এবং নিয়মমতো খাবার গ্রহণ না করার কিংবা একটা নির্দিষ্ট রুটিন ফলো না করার জন্য অনেকেরই স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে, এমনকি অনেকের আবার ওজনাধিক্যসহ নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে।

 

সকালবেলার নাশতা:
কোনোভাবেই সকালের নাশতা বাদ দেওয়া যাবে না। অনেক নারী আছেন, সকালের নাশতা করেন না কিংবা করতে করতে অনেক বেলা হয়ে যায়। সকালের নাশতা জরুরি। কারণ সারা দিনের ক্যালরির চাহিদা পূরণ করতে হলে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ সকালের নাশতা থেকে গ্রহণ করতে হবে। তাই সুস্থ থাকতে চাইলে কোনোভাবেই সকালের নাশতা বাদ দেওয়া যাবে না।

সকালে ঘুম থেকে উঠে এক চা চামচ চিয়া সিড + এক চা চামচ লেবুর রস + এক গ্লাস কুসুম গরম পানি অথবা যাঁদের গ্যাসের সমস্যা আছে, তাঁরা খালি পেটে লেবুর রসটা বাদ দিতে পারেন। সকাল ৮টা থেকে ৮টা ৩০ মিনিট পেট পুরে সুষম খাবার দিয়ে সকালের নাশতা করা উচিত। লাল আটার রুটি দুটি, মিক্সড সবজি এক কাপ/সবজি ডাল এক কাপ, ডিম একটি অথবা চিড়া/ওটস এক মুঠ + এক কাপ দুধ/টক দই + একটি ছোট কলা ও একটি ডিম সিদ্ধ। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে ভিটামিন ‘সি’ যুক্ত যেকোনো একটি ফল বা মৌসুমি ফল এক কাপ + অল্প পরিমাণে বাদাম + এক কাপ গ্রিন টি।

 

দুপুরের খাবার: 
১.৩০-২.০০: ভাত এক কাপ/রুটি দুটি, শাক দুই টেবিল চামচ, মিক্সড সবজি হাফ কাপ, মাছ/মুরগি দুই পিস, ডাল হাফ কাপ, লেবু ও শসা। অনেকের দুপুরে খাবার খেতে খেতে বিকেল হয়ে যায় কিংবা অনেক কর্মজীবী মহিলা আছেন যাঁরা ওজনাধিক্যে ভুগছেন, তাঁরা অনেক সময় ইচ্ছা করেই দুপুরের খাবারটা বাদ দেন, যা ঠিক নয়। সময় স্বল্পতাহেতু সকালে খাবার তৈরি করা কঠিন হয়ে যায়। এ জন্য দ্রুত কিছু রান্না করার অভ্যাসটা গড়ে তুলুন। যেমন—সবজি, মাছ, ডাল আলাদা রান্না না করে একসঙ্গে সবজি, ডাল, ডিম রান্না করতে পারেন। এসবের সঙ্গে এক বা দুটি রুটি রাখতে পারেন খাদ্যতালিকায়। লাঞ্চের পরে অল্প পরিমাণে টক দই খেতে পারেন। টক দই খুব ভালো প্রোবায়োটিক। প্রোবায়োটিক হজমে সাহায্য করে এবং টক দই ভালো ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির মাধ্যমে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

বিকেলের নাশতা:
বিকেলের নাশতায় ভেজিটেবল চিকেন স্যুপ কিংবা যেকোনো সালাদ, ফলের সালাদ অথবা এক কাপ গ্রিন টি, একটি বিস্কুট এবং যেকোনো একটি ফল রাখতে পারেন।

 

রাতের খাবার:
রাতের খাবারের সময়টা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রাতে কী খাচ্ছেন তার চেয়ে জরুরি কখন খাচ্ছেন। নানা কারণে নারীদের রাতের খাবার খেতে অনেকটা দেরি হয়ে যায়। বেশির ভাগ নারীরই রাতের খাবার হয় নাকেমুখে অর্থাৎ বেশি রাতে নাকেমুখে কোনো রকমে খেয়েই শুয়ে পড়েন। এতে খাবার ঠিকমতো হজম হয় না। ফলে ওজনাধিক্য, ব্লাড সুগার বেড়ে যেতে পারে। তাই রাতের খাবার খেতে হবে সময়মতো, ঘুমাতে যাওয়ার দু-তিন ঘণ্টা আগে। আর এ জন্য সময়টা হওয়া উচিত সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে।

খাবার হতে পারে রুটি দুটি/ভাত হাফ কাপ, সবজি এক কাপ এবং মাছ/মুরগির মাংস এক টুকরা। রাতে ভালো ঘুম হওয়ার জন্য এক কাপ লো ফ্যাট মিল্ক কিংবা হাফ কাপ প্রোবায়োটিক টক দই খেতে পারেন সঙ্গে এক চা চামচ চিয়া সিড দিয়ে। একজন নারীকে সুস্থ ও শারীরিক কর্মক্ষম থাকার জন্য প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে এবং প্রতিদিন ছয়-সাত ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। তথ্যসূত্র: কালের কণ্ঠ

লেখক: ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট এন্ড ডায়েটিশিয়ান, উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতাল

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট