চট্টগ্রাম রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

এলার্জিক কন্টাক্ট ডারমাটাইটিস

১৭ এপ্রিল, ২০২২ | ১:০৫ অপরাহ্ণ

এলার্জিক কন্টাক্ট ডারমাটাইটিস হচ্ছে স্পর্শ জনিত কারণে ত্বকের একপ্রকার প্রদাহ। তবে এটি ইরিট্যান্ট কন্টাক্ট ডারমাটাইটিসের মতোন সাথে সাথে দেখা যায় না। এটি কিন্তু সত্যিকারের এলার্জি। যে পদার্থ বা পদার্থগুলির স্পর্শে এই ডারমাটাইটিস হয় তাকে এলার্জেন বলা হয়। এই এলার্জেন বা এলার্জেনগুলির স্পর্শে আমাদের শরীরে ডিলেড হাইপার সেনসিটিভ এলার্জিক রিয়েকশন দেখা দেয় এবং ৪৮-৭২ ঘন্টা পর থেকে ত্বকে লক্ষণ-উপসর্গ প্রকট হয়ে দেখা দেয়। মনে রাখতে হবে, সবার মধ্যেই যে এই এলার্জেন জনিত রিয়েকশন দেখা দেবে তা কিন্তু নয়। কিছু কিছু মানুষের মধ্যেই কেবল এটি হয়ে থাকে। দেখা গেছে মহিলাদের এর প্রকোপ একটু বেশি।

এলার্জেন এর বিস্তৃত পরিধির মধ্যে রয়েছে নিকেল বা ধাতু জাতীয় পদার্থ, নানা রকমের প্রসাধনী, চুলের কলপ, জুতার চামড়ায়সহ পেশাগতভাবে ব্যবহৃত নানা ধরণের কেমিক্যাল, বিভিন্ন এন্টি-বায়টিক মলম, ইত্যাদি। সূর্যের আলোতে যে আলট্রা-ভায়োলেট রশ্নি থাকে- তা থেকেও কিন্তু এলার্জিক কন্টাক্ট ডারমাটাইটিস হতে পারে, আবার কিছু কিছু সময় বিভিন্ন সানস্ক্রিন অথবা এন্টিব্যাক্টেরিয়াল সাবান ব্যবহারে পরে রোদের ওই রশ্নির প্রভাবে এটি দেখা দিতে পারে। সূর্যালোকের জন্য এই রোগাবস্থাকে অনেকসময় ফটো-কন্টাক্ট ডারমাটাইটিস বলা হয়ে থাকে।

এলার্জিক কন্টাক্ট ডারমাটাইটিস এর লক্ষণ উপসর্গ এবং তীব্রতা, এলার্জেন এর প্রকার, পরিমাণ, মাত্রা, স্পর্শ সময়, ত্বকের সহনশীলতা, আবহাওয়া, ইত্যাদির উপর নির্ভর করে। সুনির্দিষ্ট এলার্জেনের স্পর্শ লাগার কিছু সময় পর থেকে চামড়ায় একপ্রকার জ্বালা-পোড়া শুরু হয়, ধীরে ধীরে লক্ষণ-উপসর্গ ফুটে উঠে এবং পরে ঐ এলার্জেনের স্পর্শ আর না থাকলে কমে যেতে থাকে।

সাধারণত এলার্জেনের স্পর্শ স্থানেই রোগটি দেখা যায়, তবে হাতের মাধ্যমে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে এটি ছড়িয়ে যেতে পারে। স্থানীয়ভাবে লালচে ভাব ও জ্বালাপোড়া দিয়ে রোগটি শুরু হয়ে, বিচি, ফুসকুড়ি, ফোস্কা, ফোলাভাব, শুকনা বা আঠালো ঘা যুক্ত হতে পারে। সেই সাথে থাকে মাঝারি থেকে তীব্র চুলকানি। রোগের তীব্রতা বেশি হলে স্থানীয় লিম্ফ-গ্ল্যান্ড ফুলে যেতে পারে। খুব কম দেখা গেলেও খাদ্য-দ্রব্যের সাথে এলার্জেন পেটে চলে গেলে বেবুন সিনড্রোম বা সারাদেহ জুড়ে রোগটি ছড়িয়ে যেতে পারে। রোগটি নির্ণয় করতে সঠিক ইতিহাস এবং ইরিট্যান্ট কন্টাক্টসহ নানান ধরণের ডারমাটাইটিস, একজিমা বা ফাংগাল চর্মরোগ পৃথক করা প্রয়োজন।

প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে- জানা এলার্জেনগুলোর স্পর্শ এড়িয়ে চলা। যাদের একবার এলার্জিক কন্টাক্ট ডারমাটাইটিসের কারণ নির্দিষ্ট হয়েছে তাদেরকে অবশ্যই ওই কারণ বা এলার্জেন স্পর্শ থেকে বিরত থাকতে হবে, নতুবা বার বার আক্রমণের সম্ভাবনা থেকে যায়। প্রতিকারক চিকিৎসার প্রথমেই জানা না থাকলে এলার্জেন নির্ণয় ও স্পর্শ বন্ধ করতে হয়। তারপর অবস্থা অনুযায়ী বিভিন্ন ইমোলিয়েন্ট, স্টেরয়েড, ক্যালসিনিউরিন মলম ব্যবহার করা হয়ে থাকে। প্রয়োজনে মুখে খাবার এন্টি-বায়টিক, স্টেরয়েড, ইমিউনো-সাপ্রেসিভসহ ফটো-থেরাপি প্রয়োগ করা হয়।

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট