চট্টগ্রাম বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

দেশে ২৮ শতাংশ মৃত্যুই পরিবেশ দূষণজনিত কারণে

মরিয়ম আকতার

৩ অক্টোবর, ২০১৯ | ২:১৪ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দূষণ ও পরিবেশগত ঝুঁকির কারণে যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত তার একটি বাংলাদেশ। বাংলাদেশে প্রতিবছর যত মানুষের মৃত্যু হয় তার ২৮ শতাংশই মারা যায় পরিবেশ দূষণজনিত অসুখ-বিসুখে।

(গত সংখ্যার পর)

পিএম ২.৫ হচ্ছে এমন এক ধরনের কঠিন বা জলীয় অতি সূক্ষ্মকণা যা আড়াই মাইক্রোন বা তার নিচে চওড়া। এর কণা এতই সূক্ষ্ম যে খুব সহজেই প্রশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসের গভীরে পৌঁছে যায়। সেখান থেকে হার্ট হয়ে রক্তের মাধ্যমে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। যা শ্বাসতন্ত্রের নানাবিধ রোগ যেমন হাঁচি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, নাক দিয়ে পানি পড়া থেকে শুরু করে এমন ছোটখাটো অসুখ, ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসসহ হার্ট এ্যাটাক এবং ক্যান্সারের মতো প্রাণঘাতী রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, বায়ুদূষণের কারণে মানুষের তৎক্ষণাৎ বা দ্রুত মৃত্যু হয় না। এটা একধরনের নীরব ঘাতকের মতো। এর কারণে মানুষ দীর্ঘ মেয়াদে নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, শ্বাসকষ্টের প্রধান কারণই হচ্ছে এই বায়ুদূষণ।

আমাদের দেশে পরিবেশ আইন আছে। সরকারের উচিত হবে, শিল্প-কারখানা স্থাপনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেই আইন মেনে চলতে বাধ্য করা।
আর দূষণ কমানোর জন্য নানামুখী ব্যবস্থা তো নিতেই হবে, সে কথা বলাই বাহুল্য। আর ট্রাফিক জ্যামের কথা আগেও বলেছি। এর কারণে যেমন আমাদের অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি স্বাস্থ্যগত ক্ষতিও হচ্ছে মারাত্মকভাবে। এ কারণে আমাদের এই জ্যাম কমাতে হবে। এসব পদক্ষেপ নেয়া হলে আমরা বায়ুদূষণের মারাত্মক প্রভাব থেকে কিছুটা হলেও মুক্ত থাকতে পারব, যদি
পুরোপুরি সম্ভব নাও হয়।

শব্দ দূষণ : পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ অধিদফতরের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করার মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট তারিখসহ একটি রোডম্যাপ প্রণয়নের জন্য সুপারিশ করেছে। পবা বলছে, শ্রবণ-শক্তি হ্রাসের ফলে বিরক্তি, নেতিবাচকতা ও রাগ, ক্লান্তি, চাপা উত্তেজনা, মানসিক চাপ ও বিষণœতা, সামাজিক কর্মকান্ড থেকে পরিহার বা প্রত্যাহার, সামাজিক প্রত্যাখ্যান ও একাকিত্ব, সতর্কতা হ্রাস ও ব্যক্তিগত ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়া, স্মৃতিশক্তি ও নতুন কিছু শেখার মতো ক্ষমতা হ্রাস; কর্মক্ষমতা ও উপার্জন শক্তি হ্রাস এবং মানসিক ও সামগ্রিক স্বাস্থ্য খর্ব হয়ে থাকে।
শব্দ দূষণের ফলে মানুষের

মানসিক ও শারীরিক সমস্যা ঘটতে পারে।
সরকারের পরিবেশ অধিদফতরও
দূষণের মাত্রা বাড়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।
তবে অধিদফতর দূষণ রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার কথাও তুলে ধরে বলছে, দূষণ বাড়ছে। যেহেতু জনসংখ্যা বাড়ছে শহরগুলোতে। উন্নয়ন কর্মকান্ড বাড়ছে এবং গাড়ির সংখ্যাও বেড়ে গেছে।
তবে সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে। ট্যানারি কারখানাগুলো ঢাকা থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ইটভাঁটির বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এ ধরনের বিভিন্ন পদক্ষেপ অধিদফতরের পক্ষে নেয়া হচ্ছে। তবে শুধু সরকারী পদক্ষেপে পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব নয়। পরিবেশ রক্ষায় মানুষের সচেতনতাও প্রয়োজন। (শেষ)
[সূত্র : পত্র-পত্রিকা]

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট