চট্টগ্রাম রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

মানসিক সুস্থতার প্রয়োজনীয়তা

২৪ অক্টোবর, ২০১৯ | ১২:৫৯ পূর্বাহ্ণ

আমরা সবাই কম বেশি আমাদের শরীরের সুস্থতার ব্যাপারে সচেতন। সামান্য জ্বর কিংবা সর্দিতেই ডাক্তারের কাছে ছুটোছুটি করি। নাপা, প্যারাসিটামল, এন্টিবায়োটিক কতো রকম ঔষধ খাই। ডায়াবেটিস বা উচ্চরক্তচাপ হলে তো কথাই নেই। শারীরিক সুস্থতার উপসর্গগুলো আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে অধিকতর স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হওয়ায় এ ব্যাপারে আমাদের একটি সুস্পষ্ট ধারণা রয়েছে। আমরা আমাদের শারীরিক সুস্থতার ব্যাপারে যতটা যত্নবান, আমাদের মানসিক সুস্থতার ব্যাপারে ততটাই অমনোযোগী। কারণ মানসিক রোগের উপসর্গগুলো অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের বোধগম্য নয়। অথবা সম্পূর্ণ ব্যাপারটিকে আমরা ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করে থাকি। কেননা অধিকাংশ মানুষই মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে অজ্ঞ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডঐঙ) এর প্রতিবেদন অনুসারে সুস্থতা হলো- মানুষের শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক এই তিনটি অবস্থার প্রেক্ষাপটে একটি ভারসাম্যপূরণ ও স্বাস্থকর সমন্বয়।

সহজ কথায়, সুস্থতা হলো শারীরিক বিভিন্ন রোগের পাশাপাশি হতাশা, বিষণœতা, অবসাদ, মানসিক চাপ ইত্যাদি মানসিক সমস্যা থেকে মনকে মুক্ত রেখে সমাজে কোন প্রকার সমস্যার সম্মুখীন না হয়ে বসবাস করতে পারা।
অনেক সময় মানসিক অসুস্থতা শারীরিক সুস্থতর উপর প্রত্যক্ষভাবে প্রভাব ফেলে। ফলে মনের পাশাপাশি আমাদের শরীরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে অসুখটা যে শারীরিক না মানসিক তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।

গুরুত্বপূর্ণ মানসিক সমস্যাগুলো নিরাময়ের জন্য বিশেষজ্ঞদের সাহায্যা নেয়া অত্যন্ত জরুরি। সাধারনত মানসিক সমস্যা দেখা দিলে তার সঠিক চিকিৎসা করানো হয় না।

মানসিক রোগের উপসর্গগুলোকে অবহেলা করা হয়। এছাড়া অধিকাংশ সময় সমস্যাগুলোকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়। বিশেষকরে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলগুলোতে মানসিক সুস্থতার ব্যাপারে সচেতনতা নেই বললেই চলে। ফলে যখনই কেউ মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন সেটাকে জ্বীন-ভূতের আছর, জাদু টোনা ইত্যাদি কুসংস্কারমূলক অপব্যাখ্যা দেয়া হয়। বাংলাদেশে রাজধানী ও জেলা শহর পর্যায়ের কয়েকটি সরকারি মানসিক হাসপাতালসহ বেশ কিছু বেসরকারি এনজিও প্রতিষ্ঠান মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছে। কাজেই যখন আমরা অথবা আমাদের পরিবারের কোন সদস্য, বন্ধুবান্ধব বা পরিচিত কেউ মানসিক ভাবে অসুস্থ বা বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে তখন কোন প্রকার কুসংস্কার বা অবহেলার বশবর্তী না হয়ে সঠিক চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করতে হবে।

সিয়াম আহমেদ
শিক্ষার্থী, আরবী বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট