চট্টগ্রাম বুধবার, ০১ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

চট্টগ্রামের গবেষণা

ডায়াবেটিস কি, জানেই না প্রতি দুই স্কুল শিক্ষার্থীর একজন

ইমাম হোসাইন রাজু 

১৪ নভেম্বর, ২০২৩ | ১:২৯ অপরাহ্ণ

ডায়াবেটিস সম্পর্কে কিছুই জানে না চট্টগ্রামের প্রতি দু’জনের মধ্যে একজন স্কুলগামী কিশোর-কিশোরী। এমনকি ডায়াবেটিস শব্দটির নামও শুনেনি তারা। ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ তার সম্পর্কে জানে না ৬০ ভাগ শিক্ষার্থী। আর ৫০ ভাগ শিক্ষার্থী কখনো শোনেইনি ইনসুলিন শব্দটি।  চট্টগ্রামের একটি গবেষক দলের গবেষণায় ওঠে এসেছে এসব তথ্য। গবেষণা পত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ‘ফ্রন্টিয়ার্স ইন মেডিসিন” জার্নালে।

 

গবেষণায় ওঠে আসে,  ইনসুলিন কিংবা ডায়াবেটিসের চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে ৬০ ভাগ শিশু কিছুই শোনেনি। ৭০ ভাগ ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের হার দেখা যাচ্ছে।

 

এছাড়াও ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে স্নায়ুু দুর্বলতা, চোখের সমস্যা, ডায়াবেটিক ফুট, কিডনি সমস্যা, হতাশা দেখা যাচ্ছে। যা আশঙ্কাজনক বলে মনে করেন গবেষকরা।

 

অন্যদিকে, পৃথক আরেক গবেষণায় দেখা যায়, চট্টগ্রামের ডায়বেটিস রোগীদের মাঝে পাওয়া যাচ্ছে জিনগত পরিবর্তন। ইতোপূর্বে টিসিএফ৭এল২ নামক একটি জিনের সাথে ডায়বেটিসের সম্পর্ক আছে এমন ধারণা করছিলেন বিভিন্ন দেশের গবেষকেরা। এবার চট্টগ্রামের গবেষকগণও ধারণা করছেন তার সাথে ডায়বেটিস হওয়ার সম্পর্ক থাকতে পারে। কেননা গবেষণায় ওঠে আসে- প্রতি ৩ জন ডায়বেটিস রোগীর মাঝে একজনের মধ্যে পাওয়া গেছে এই জিনের মিউটেশন বা বিন্যাসগত পরিবর্তন। এই মিউটেশন থাকা অধিকাংশ রোগীর ক্ষেত্রে মেটফরমিন এবং ইনসুলিনের মত বহুল প্রচলিত ওষুধ নেয়ার উপদেশ দেননি চিকিৎসকেরা। এর অর্থ এই জিনগত পরিবর্তন থাকলে ভিন্ন প্রকারের চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করতে হতে পারে। শুধু তাই নয় এই জিনগত পরিবর্তন পিসি আর পদ্ধতির মাধ্যমে অল্প বয়সেই ডায়বেটিস হওয়ার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে ভবিষ্যতে। গবেষণা পত্রটি প্রকাশিত হয় যুক্তরাষ্ট্রের ‘মলিকুলার বায়োলজি রিপোর্টস” শীর্ষক জার্নালে।

 

দুটো গবেষণার নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আদনান মান্নান এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ডায়াবেটিস ও হরমোন বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারহানা আকতার। এছাড়াও চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতালের ডা. নওশাদ আজগর চৌধুরী, ডা. সুমন রহমান, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর ওমেন এর জনস্বাস্থ্য বিভাগের ড. নাজমুল আলম এ গবেষণার সাথে যুক্ত ছিলেন।

 

ডা. ফারহানা আকতার বলেন, ‘চট্টগ্রামের  ভৌগলিক অবস্থান, জীবনযাত্রার মান ও পরিবেশের কারণে এই জিনগত পরিবর্তনে ভূমিকা রাখছে। এছাড়াও তরুণ প্রজন্মকে ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি।’

 

পূর্বকোণ/আরডি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট