৮ বছরে চট্টগ্রামে কোরবানি পশু উৎপাদন বেড়েছে ৫ লাখ ২২ হাজার। চাহিদার সাথে পাল্লা দিয়ে গবাদি পশু উৎপাদন বেড়েছে ১৬৩ শতাংশ। পশু উৎপাদনে শীর্ষে রয়েছে সন্দ্বীপ এবং পটিয়া উপজেলা।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্র জানায়, এবার চট্টগ্রামে উৎপাদিত গবাদি পশুর মধ্যে গরু ৫ লাখ ২৬ হাজার ৩২৫টি, মহিষ ৭১ হাজার ৩৩৩টি, ছাগল ও ভেড়া ২ লাখ ৪৪ হাজার ৪০৫টি এবং গয়াল, দুম্বাসহ অন্যান্য ১০২টি।
সরকারি এই দপ্তরের তথ্যমতে, ২০১৫ সালে চট্টগ্রামে গবাদি পশু উৎপাদন হয় ৩ লাখ ২০ হাজার। সেবছর জবাই হয়েছিল ৪ লাখ ৯২ হাজার ২৫০টি। অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় ১ লাখ ৭২ হাজার ২৫০টি পশু কম উৎপাদন হয়। তার পরের দুই বছর ২০১৬ এবং ২০১৭ সালেও চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন ছিল না। ২০১৮ সাল থেকে উৎপাদন বাড়তে থাকে। ২০১৮ সালে জবাই করা হয় ৬ লাখ ৫৫ হাজার ৮৬২টি, স্থানীয় উৎপাদন ৫ লাখ ৮১ হাজার ৬৩৪টি। ২০১৯ সালে জবাই করা হয় ৭ লাখ ৩০ হাজার ৭৮৯টি, স্থানীয় উৎপাদন ৬ লাখ ১০ হাজার ২১৯টি। ২০২০ সালে জবাই করা হয় ৭ লাখ ৩৫ হাজার ৫৫৬টি, স্থানীয় উৎপাদন ৬ লাখ ৮৯ হাজার ২২টি। ২০২১ সালে জবাই করা হয় ৭ লাখ ৪২ হাজার ৪৫৫টি, স্থানীয় উৎপাদন ৭ লাখ ৫৬ হাজার ৩৩৪টি।
সর্বশেষ গত ২০২২ সালে চট্টগ্রামে পশু উৎপাদন হয় ৮ লাখ ১৯ হাজার ৪৪২টি। আর জবাই হয় ৮ লাখ ১৩৫০টি। অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় ১৮ হাজার পশু উদ্বৃত্ত থেকে যায়। ২০২৩ সালের সম্ভাব্য চাহিদা ৮ লাখ ৭৯ হাজার ৭১৩টি এবং উৎপাদন হয়েছে ৮ লাখ ৪২ হাজার ১৬৫টি। ঘাটতি রয়েছে ৩৭ হাজার ৫৪৮টি।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী পশু উৎপাদনে শীর্ষে আছে সন্দ্বীপ উপজেলা। এই উপজেলায় এবার ৭৮ হাজার ৪৬৬টি পশু উৎপাদন হয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা পটিয়ায় উৎপাদন হয়েছে ৭৪ হাজার ৫১২টি। এরপরে রয়েছে আনোয়ারা ৬৬ হাজার ২১৫টি, মিরসরাই ৬০ হাজার ৭৩৯টি, কর্ণফুলী ৫৭ হাজার ২১১টি, ফটিকছড়ি ৫৬ হাজার ২৩০টি। অন্যান্য উপজেলাসমূহে ৪০ থেকে ৫০ হাজার পশু উৎপাদন হয়েছে। সবচেয়ে কম উৎপাদন হয়েছে নগরীর কোতোয়ালী, ডবলমুরিং এবং পাঁচলাইশ থানায়।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পশু দিয়ে ৯৫ থেকে ৯৬ শতাংশ চাহিদা পূরণ করা যাবে। বাকি ৪ থেকে ৫ শতাংশ পশু চট্টগ্রামের আশপাশ এবং বগুড়া, কুষ্টিয়া, ভোলাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসবে। এসব পশু দিয়ে চাহিদার বেশিও হয়ে যায়। তাই এবারও কোরবানির পশুর কোনো সংকট হবে না। তাছাড়া, বর্তমানে আমাদের খামারি খাত অনেক সমৃদ্ধ। প্রায় সবগুলো খামারেই পশু উৎপাদন হচ্ছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহকারী পরিচালক আশরাফুল আলম খান পূর্বকোণকে বলেন, প্রতিটি উপজেলায় প্রতি বছর পশু উৎপাদন বাড়ছে। সন্দ্বীপ এবং পটিয়াসহ যেসব উপজেলা উৎপাদনে শীর্ষে রয়েছে সেসব উপজেলায় অতীতেও তুলনামূলকভাবে বাড়তি পশু উৎপাদন হত। তবে অনেক তরুণ উদ্যোক্তা এই খাতে সম্পৃক্ত হচ্ছে। যা কৃষিখাতকে সমৃদ্ধ করছে।
পূর্বকোণ/এএইচ