চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১০ মে, ২০২৪

মন্দার বাজারেও ডিএসই’তে বিও হিসাব বেড়েছে প্রায় ১১ হাজার

ইফতেখারুল ইসলাম 

৬ নভেম্বর, ২০২১ | ৩:০৭ অপরাহ্ণ

মন্দার বাজারেও পুঁজিবাজারে বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) এর সংখ্যা বাড়ছে। বিনিয়োগকারীরা নতুন হিসাব খুলছে। গত অক্টোবর মাসে প্রায় ১১ হাজার নতুন হিসাব যোগ হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে কিছু ভাল আইপিও আসছে। হয়তো আইপিও পাওয়ার আশায় বিনিয়োগকারীরা নতুন বিও হিসাব খুলছে। তবে সেকেন্ডারি মার্কেটের অবস্থা খুবই নাজুক। 

অক্টোবর মাসের ৩ তারিখ পুঁজিবাজারের প্রথম (১ ও ২ অক্টোবর সাপ্তাহিক ছুটি) কার্যদিবসে ডিএসই’র প্রধান সূচক ছিল ৭৩৫৬ পয়েন্ট। ওই সময়ে ডিএসই’র বাজার মূলধন ছিল ৫ লাখ ৮২ হাজার ৯০১ কোটি ১২ লাখ টাকা। গত ৪ নভেম্বরে সূচক কমে দাঁড়িয়েছে ৬৯০৬ পয়েন্টে এবং মূলধন কমে দাঁড়ায় ৫ লাখ ৫১ হাজার ৫৫৮ কোটি ১২ লাখ টাকায়। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে কমেছে ৪৫০ পয়েন্ট। এই সময়ে ডিএসই’র বাজার মূলধন কমেছে ৩১ হাজার ৩৪২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।  কিন্তু মন্দার মাঝেও পুঁজিবাজারে বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাবের সংখ্যা বাড়ছে। গত অক্টোবর মাসে প্রায় ১১ হাজার বিও হিসাব খুলেছে বিনিয়োগকারীরা। সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিন শেয়ারবাজারে বিও হিসাব ছিল ১৯ লাখ ৯৯ হাজার ৭৩৬টি। আর অক্টোবর মাসের শেষ দিন বিও হিসাব দাঁড়ায় ২০ লাখ ১০ হাজার ৫০০টিতে। অর্থাৎ অক্টোবর মাসে ১০ হাজার ৭৬৪টি বিও হিসাব বেড়েছে।

অক্টোবর মাসে পুরুষদের বিও হিসাব ৮ হাজার ১৩২টি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৯৩ হাজার ৮২৮টিতে। সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিন পুরুষদের বিও হিসাব ছিল ১৪ লাখ ৮৫ হাজার ৬৯৬টিতে। আর অক্টোবর মাসে নারী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব দুই হাজার ৪৩৪টি বেড়ে পাঁচ লাখ ১ হাজার ৫৫৩টিতে দাঁড়িয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিন নারী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব ছিল চার লাখ ৯৯ হাজার ১১৯টি।

সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিন কোম্পানি বিও হিসাব ছিল ১৪ হাজার ৯২১টি। কোম্পানি বিও ১৯৮টি বেড়ে অক্টোবর মাসের শেষ দিন দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ১১৯টিতে।

অক্টোবর মাসে দেশে অবস্থানকারী বিনিয়োগকারীদের ১০ হাজার ৫৪১টি বিও হিসাব বেড়েছে। এর মাধ্যমে অক্টোবর মাসের শেষ দিন দেশি বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৪ হাজার ৮৭৩টিতে। যা সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিন ছিল ১৮ লাখ ৯৪ হাজার ৩৩২টিতে। অক্টোবর মাসে বিদেশে অবস্থানকারী বিনিয়োগকারীদের ২৫টি বিও হিসাব বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০ হাজার ৫০৮টিতে। সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিন বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব ছিল ৯০ হাজার ৪৮৩টিতে। চট্টগ্রাম ইনভেস্টর ফোরামের আহ্বায়ক আসলাম মোরশেদ পূর্বকোণকে বলেন, সেকেন্ডারি শেয়ার বাজারের অবস্থা খুবই নাজুক। মন্দার বাজারে বিও হিসাব বাড়ার অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। সেকেন্ডারি মার্কেট খারাপ হলেও আইপিও তো ভাল। আইপিও যারা আবেদন করছে তারা কিছু না কিছু শেয়ার পাচ্ছে। সামনে কিছু ভাল আইপিও আসছে। তবে এ কথা সত্য যে সেকেন্ডারি মার্কেট ভাল নেই। কিছু বন্ড আসছে। একটি বন্ড ব্যাংকগুলোকে কিনতে বাধ্য করা হয়েছে। যে কারণে সেকেন্ডারি মার্কেটে নড়বড়ে অবস্থা। দৈনিক লেনদেন প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। কারণ কিছু টাকা বন্ডে চলে গেছে। আর কিছু বড় ক্রেতা চুপ মেরে বসে আছে। শেয়ার বাজারের সংশোধন হল এক সেক্টরে বাড়বে অপর সেক্টরে কমবে। কিন্তু বর্তমানে যে অবস্থা তাতে কোনভাবেই সংশোধন বলা যাবে না। শেয়ারের দাম অনেক কমে গেছে। বিনিয়োগকারীদের অবস্থা খুবই খারাপ।

চট্টগ্রাম ইনভেস্টর ফোরামের সদস্য সচিব রানা বিশ্বাস পূর্বকোণকে বলেন, বাজারটি ভাল গতিতে চলছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক এক্সপোজার কমাতে বলেছে ব্যাংকগুলোকে। মার্কেট ওভারভ্যালুড ব্যাংক শেয়ার কিনতে পারবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন কিছু সার্কুলার বাজারের ক্ষতি করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ কয়েকজন শেয়ারবাজার ধ্বসের জন্য দায়ী। এই দুঃসময়ে বিও হিসাব বৃদ্ধির কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মূলত আইপিও পাওয়ার আশায় তারা এ কাজ করছে। আগে লটারির মাধ্যমে আইপিও দেয়া হত। প্রত্যেক আবেদনকারী এখন শেয়ার পায়। তাই নতুন হিসাব খুলছে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন