চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

‘সম্পত্তি না দেয়ায় মা-বাবা ও ভাইকে হত্যা’

অনলাইন ডেস্ক

১৪ অক্টোবর, ২০২১ | ১১:১৯ অপরাহ্ণ

মিরসরাইয়ে একই পরিবারের তিন জনকে জবাই করে হত্যার ঘটনায় ওই বাড়ির বড় ছেলে সাদেক হোসেন সাদ্দামকে (৩০) আটক করেছে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। এ ছাড়া তার স্ত্রী আইনুর নাহার পুলিশ হেফাজতে আছেন।

পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে মা জোছনা আরা (৪৫), বাবা মো. মোস্তফা সওদাগর (৫৬) ও মেজো ভাই আহমদ হোসেনকে (২৫) হত্যা করে সাদ্দাম।

বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) বিকাল ৪টায় পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি। পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চুরিটি উদ্ধার করেছে।

বুধবার (১৩ অক্টোবর) দিবাগত রাত ৩টায় উপজেলার ৩নং জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মধ্যম সোনাপাহাড় গ্রামের মোস্তফা সওদাগরের বাড়িতে এই ট্রিপল মার্ডারের ঘটনা ঘটে।

নিহত মো. মোস্তফার ছোট ছেলে আলতাফ হোসেন বলেন, ‘ভোর রাতে বড় ভাই সাদেক হোসেন আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, “বাড়িতে ডাকাত এসেছিল, বাবা, মা ও মেজো ভাইকে জবাই করে ফেলেছে। তুই তাড়াতাড়ি আয়। তাদের হাসপাতালে নিতে হবে।” আমি বাড়িতে এসে দেখি, বাবা-মা আর মেজো ভাইয়ের নিথর দেহ ঘরের ভেতর পড়ে আছে। রাতে বাড়িতে বাবা-মা, বড় ভাই ও তার স্ত্রী আইনুর নাহার, তাদের চার বছর বয়সী ছেলে এবং মেজো ভাই আহমদ হোসেন ছিলেন। আমি চাকরির কারণে বারইয়ারহাট মাছের আড়তে থাকি। আমার বাবা কিছু জায়গা-জমি মেজো ভাই আহমদকে দিয়েছিলেন। ওটা নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে বড় ভাইয়ের প্রায়ই ঝগড়া হতো।’

৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মনির আহমদ ভাসানী বলেন, ‘মোস্তফা ওরফে মোস্তফা সওদাগর ভালো মানুষ ছিলেন। সম্প্রতি দুই ছেলেকে বাদ দিয়ে বাড়ির জমিটি ছোট ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রীর নামে রেজিস্ট্রি করে দেওয়ায় বড় ছেলের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো। বড় ছেলে ঘরে খরচের টাকা কম দিতো। মেজো ছেলের বিয়ের জন্য টাকা চাওয়ায় আবারও সম্ভবত ঝগড়া হয়েছিল। যার জেরে এমন হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’

জোরারগঞ্জ থানার ওসি নুর হোসেন মামুন বলেন, ‘বাবা, মা ও ভাইকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বড় ছেলে সাদেক হোসেন। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চুরিটিও উদ্ধার করা হয়েছে। পারিবারিক সম্পত্তির বিরোধে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে জানা গেছে।’

সহকারী পুলিশ সুপার (মিরসরাই সার্কেল) লাবিব আবদুল্লাহ বলেন, ‘এটি একটি হত্যাকাণ্ড। এখানে ডাকাতির কোনও ঘটনা ঘটেনি। ঘরের ভেতর থাকা মোবাইল ফোন, আসবাবপত্র সব পরিপাটি আছে। নিহত মোস্তফার স্ত্রী জোছনা ও মেজো ছেলে আহমদকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। তাদের শরীরে একাধিক জখম আছে। ধারালো ছোরা দিয়ে তাদের হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে সাদেক হোসেন ওরফে সাদ্দামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আইনুর নাহার পুলিশ হেফাজতে।’

তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে আসা পিবিআই ও সিআইডি বিশেষজ্ঞ টিম ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত থানায় কোনও মামলা হয়নি।’ খবর বাংলাট্রিবিউনের।

পূর্বকোণ/মামুন/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট