চট্টগ্রাম সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

কোন পদ্ধতিতে জাহাজ ক্রয়, সিদ্ধান্ত ২৬ আগস্ট

সারোয়ার আহমদ 

১৯ আগস্ট, ২০২১ | ১২:৩৯ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) নতুন ৬টি জাহাজ ক্রয়ের ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসছে আগামী ২৬ আগস্ট বৃহস্পতিবার। জাহাজগুলো জিটুজি পদ্ধতিতে কোন বিদেশি সরকার বা অন্য কোন দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের প্রস্তাব অনুযায়ী কেনা সমীচীন হবে কিনা সে ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এছাড়া টেকনিক্যাল কমিটির সাথে পরামর্শ করে জাহাজ ক্রয়ের প্রকল্পের মূল্য নির্ধারণ করা হবে। যা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির কাছে উপস্থাপন করা হবে।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বৈঠকে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ৯ জনকে সদস্য করে এ প্রকল্পের নেগোশিয়েশন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিতব্য সভায় কমিটির ৯ সদস্যের মধ্যে সভাপতি হিসেবে রয়েছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, সদস্য হিসেবে আছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিনিধি, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের প্রতিনিধি, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রতিনিধি এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতিনিধি। এসব প্রতিনিধিরা হবেন যুগ্ম সচিব বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার। এছাড়া অন্য অসদস্যের মধ্যে আছেন অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন), বিএসসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম প্রধান (পরিকল্পনা)।

নতুন ৬টি জাহাজের মধ্যে থাকবে ২টি ক্রুড ওয়েল মাদার ট্যাংকার। যার প্রতিটির ধারণক্ষমতা হবে ১ লক্ষ থেকে ১ লক্ষ ২৫ হাজার মেট্রিক টন। দেশের জ্বালানি চাহিদার সাথে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড’র ক্রুড অয়েল পরিশোধন সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। দেশের চাহিদা অনুযায়ী ক্রুড অয়েল বিএসসি’র নিজস্ব জাহাজের মাধ্যমে পরিবহনের জন্য নতুন এ দুটি মাদার ট্যাংকার ক্রয় করা হবে।

এছাড়া, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) প্রতি বছর প্রায় ৩৫ লক্ষ মেট্রিক টন ডিজেল অয়েল এবং প্রায় ৩ লক্ষ মেট্রিক টন জেট ফুয়েল আমদানি করে। যা বিদেশি জাহাজের মাধ্যমে পরিবহন করা হয়। ইস্টার্ন রিফাইনারির বাস্তবায়নাধীন ২টি ‘সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন’ শীর্ষক প্রকল্প সমাপ্ত হলে আমদানিকৃত ডিজেল ও জেট ফুয়েল পরিবহনের জন্য বিএসসি ২টি কমপক্ষে ৮০ হাজার টন ক্ষমতাসম্পন্ন মাদার প্রোডাক্ট অয়েল ট্যাংকার ক্রয়ের কার্যক্রম চলছে।

অন্যদিকে রামপাল, পায়রা ও মাতারবাড়িতে তিনটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এসব প্রকল্পগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা বিদেশ হতে আমদানি করা হবে। দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার স্বার্থে কয়লা পরিবহনের ‘আনইনটেরাপটেড সাপ্লাই চেইন’ গড়ে তোলার জন্য কমপক্ষে ৮০ হাজার টনের ২টি মাদার বাল্ক ক্যারিয়ার ক্রয়েরও কার্যক্রম চলছে। মোট ৬টি নতুন এসব জাহাজ ক্রয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে।

প্রসঙ্গত, আশির দশকের প্রথমদিকে বিএসসি’র বহরে একসাথে সর্বমোট ২৮টি জাহাজ ছিল। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সে সংখ্যা বাড়িয়ে বিএসসিতে মোট ৪৪টি জাহাজ যুক্ত করা হয়। পরে বয়সজনিত কারণে এবং বাণিজ্যিকভাবে অলাভজনক বিবেচিত হওয়ায় বিভিন্ন পর্যায়ে ৩৬টি জাহাজ বিক্রি করার পর বর্তমানে কর্পোরেশনে জাহাজের সংখ্যা দাঁড়ায় মাত্র ৮টিতে। যার মধ্যে ৩টি বাল্ক ক্যারিয়ার যুক্ত হয় ২০১৮ সালের ২৭ জুলাই, ১০ অক্টোবর ও ৩০ ডিসেম্বর। এছাড়া ৩টি প্রোডাক্ট ওয়েল ট্যাংকার যুক্ত হয় ২০১৯ সালের ২৫ জানুয়ারি, ১ মার্চ ও ২৫ মে । এরপর আর নতুন কোন জাহাজ বিএসসির বহরে যুক্ত হয়নি। তবে নতুন চলমান প্রকল্পে ৬টি জাহাজ যুক্ত হলে বিএসসির মোট জাহাজের সংখ্যা দাঁড়াবে ১৪টিতে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন