গেল বছরের পহেলা বৈশাখ ঘিরে ছিল না কোন বিশেষ আয়োজন। এমন পহেলা বৈশাখের সাথে পরিচিত নন বাঙালি জাতি। মহামারী করোনাভাইরাসের বিভীষিকায় থমকে গেছে মানুষের জীবন। তাই জীবনকে প্রাধান্য দিয়ে ঐতিহ্যকে করতে হয়েছে সীমিত। পহেলা বৈশাখকে ঘিরে সব ধরণের অনুষ্ঠান বন্ধ করে অনলাইনে সীমিত আয়োজন করা হয়েছিল। প্রকৃতির নিয়মে আবারও বছর ঘুরে সামনে চলে এলো পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এবারও সব ধরণের অনুষ্ঠান বাতিল করে রাখা হয়েছে ই-পহেলা বৈশাখ আয়োজন। করোনা সতর্কতায় নতুন বছরকে বরণ করতে কোনো আয়োজনই থাকছে না।
এদিকে, করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় অনলাইনে বাংলা নববর্ষ পালনের নির্দেশ দেয় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। গত ৭ এপ্রিল বুধবার মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আ স ম হাসান আল আমিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই নির্দেশনা জানানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, ‘আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বাংলা নববর্ষ ১৪২৮ উদযাপন-সংক্রান্ত গৃহীত কর্মসূচির বিষয়ে জানানো যাচ্ছে যে, বর্তমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক জারি করা নির্দেশনা অনুসরণপূর্বক জনসমাগম হয় এমন অনুষ্ঠান পরিহার করে সম্ভব হলে অনলাইন বা ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য অনুরোধ জানানো হলো। কোনও অবস্থাতেই জনসমাগম করা যাবে না।’
এই নির্দেশ জারির কারণে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের রেওয়াজে দ্বিতীয়বারের মত এবারেও বাংলা নববর্ষ পালিত হবে কোন রকমের আতিথেয়তা ছাড়াই। পহেলা বৈশাখের অন্যতম আয়োজন থাকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের মঙ্গল শোভাযাত্রা। তবে সেই আয়োজন এবার হচ্ছে না। এমনকি অনলাইনভিত্তিক কোন আয়োজনও রাখা হয়নি বলে পূর্বকোণকে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের পরিচালক প্রণব মিত্র চৌধুরী।
তিনি বলেন, আমাদের সিনিয়র অনেক সহকর্মী করোনায় আক্রান্ত। শিক্ষার্থীরাও ক্যাম্পাসে আসতে পারছে না। তাই পহেলা বৈশাখে কোন আয়োজন রাখা হয়নি। মহামারী করোনাভাইরাসকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এমনকি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যায়ের মূল আয়োজনও থাকছে না পহেলা বৈশাখে।
পঞ্জিকার পাতা পাল্টে প্রতি বছর আসে পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ। নতুন বছরের সাথে প্রকৃতিও পায় নতুন প্রাণের আবাহন। চৈত্রের খরতা মাড়িয়ে গাছে গাছে উঁকি দেয় কচি পাতা। পাতার ভেতর দিয়ে আসা চৈত্রের কড়া রোদ শেষে বসন্তে ফোটা সোনালুকে মুগ্ধ করে বৈশাখী হাওয়া। তবে চিরচেনা এই হাওয়া বদলে গেছে। এমন মহামারীর বৈশাখ যেন আর না আসে এমনটাই সকলের প্রত্যাশা।
পূর্বকোণ/এএ