চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

কাজ শেষ, উদ্বোধনের প্রতীক্ষা

নিজাম উদ্দিন লাভলু,  রামগড়

৫ মার্চ, ২০২১ | ১:৪৪ অপরাহ্ণ

রামগড়-সাব্রুম সীমান্তে  ফেনী নদীর ওপর বাংলাাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এখন অপেক্ষা  কবে এ মৈত্রী সেতু উদ্বোধন হবে। দু’ দেশের মানুষ এ প্রতীক্ষায় প্রহর গুণছে।  ভারত সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। গত জানুয়ারিতে এর  নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতুটি উদ্বোধনের পর বহু প্রতীক্ষিত রামগড় সাব্রুম স্থলবন্দরের কার্যক্রম চালু হবে এমনটাই শোনা যাচ্ছে। বাংলাদেশের ১৫ তম এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম  এ স্থলবন্দর চালু হলে দুই দেশের ব্যবসা বাণিজ্য, পর্যটনসহ সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, ভারত  দক্ষিণ এশিয়ার সাথে সেভেন সিস্টারখ্যাত তাদের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় ৭টি অনুন্নত রাজ্যের ‘গেটওয়ে’  হিসেবে দেখছে মৈত্রী সেতুটিকে। এদিকে, আজ (শুক্রবার)  পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের একটি দল নবনির্মিত মৈত্রী সেতু পরিদর্শনে আসছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শুক্রবার (আজ) সকাল সাড়ে ১০টায় হেলিকপ্টারযোগে রামগড়ে এসে তারা মৈত্রী সেতুটি সরেজমিনে পরিদর্শন করবেন।

প্রসঙ্গত ২০১০ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি সফরকালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এর সাথে বৈঠকে রামগড়- সাব্রুম স্থলবন্দর চালুর  যৌথ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ৬ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ফেনী নদীর ওপর নির্মাণাধীন বাংলাদেশ ভারত মৈত্রী সেতু-১ নামে  সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচন করেন। রামগড়-সাব্রুম স্থল বন্দর চালুর লক্ষ্যে সীমান্তবর্তী ফেনীনদীর ওপর মৈত্রী সেতু-১ নির্মাণ কাজের জন্য ২০১৭ সালের এপ্রিলে দীনেশ চন্দ্র আগরওয়াল কনস্ট্রাকশন নামে গুজরাটের একটি প্রতিষ্ঠানকে ঠিকাদার নিযুক্ত করে ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েস এন্ড ইনফ্রাস্টাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল) সংস্থাটি । 

গতকাল (বৃহস্পতিবার) সরেজমিনে  পরিদর্শন করে দেখা গেছে, নবনির্মিত সেতুটি দেখতে অসংখ্য মানুষ ভিড় জমিয়েছে। বাংলাদেশ ভারত দুই অংশেই দর্শনার্থীদের এমন সমাগম দেখা গেছে। সেতুর ভারতীয় প্রকৌশলী মতিউর রহমান বলেন,  গত ১৩ জানুয়ারি সেতুর কাজ পুরেপুরি শেষ হয়েছে। তিনি জানান, ৪১২ মিটার দীর্ঘ এ সেতুর মোট পিলার রয়েছে ১২টি। এগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে নির্মাণ করা হয়েছে ৮টি ও ভারতের অংশে ৪টি। স্প্যান রয়েছে ১১টি। তন্মধ্যে বাংলাদেশ অংশে ৩৩.৫ মিটার দৈর্ঘ্যরে দুটি, ২৭.৫ মিটারের ৪টি ও ৫০ মিটারের একটি। নদীর ওপর ৮০ মিটারের একটি, ভারতের অংশে ৫০ মিটারের একটি ও ২৭.৫ মিটার দৈর্ঘ্যরে দুটি স্প্যান রয়েছে। নদীর অংশের ৮০ মিটারের স্প্যান এবং নদীর দুই পাড়ের ৫০ মিটারের দুটিসহ মোট ১৮০মিটার দৈর্ঘ্যরে  এ তিনটি স্প্যানই হচ্ছে মেইন স্প্যান।

প্রকৌশলী মতিউর আরও বলেন, সেতুর  তিনটি মেইন স্প্যানের ১৮০ মিটার দৈর্ঘ্যরে অংশটি স্টেইড ক্যাবলে ঝুলন্ত অবস্থায় আছে। এ অংশের দুটি পিলারের ওপরে সেতুর ছাদে ৪টি আরসিসি পাইলনে লোহার স্টেইড ক্যাবলের মাধ্যমে সেতুর এ অংশটি ঝুলে আছে । নদীর তলদেশ থেকে এ অংশটির উচ্চতা  প্রায় ১৭ মিটার। সেতু থেকে ২৪০ মিটার এপ্রোচ রোড নির্মাণ করে রামগড়- চট্টগ্রাম প্রধান সড়কে সাথে এবং ওপারে সেতু থেকে প্রায় ১২শ মিটার এপ্রোচ রাস্তা নবীনপাড়া-ঠাকুরপল্লি হয়ে সাব্রুম- আগরতলা জাতীয় সড়কে যুক্ত হয়েছে। আর্ন্তজাতিক মানের দুই লেনের এ সেতুর দু’পাশে রয়েছে  ফুটওয়ে । তিনি জানান, প্রায় শত কোটি ভারতীয় রুপি ব্যয়ে নির্মিত সেতুটির স্থায়ীত্বকাল এক’শ বছর।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট