চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ৬ নং ওয়ার্ড কার্যালয়ে নাগরিক সেবা পাচ্ছে না জনসাধারণ। শেখ হাসিনার পতনের পর ৫ আগস্ট নতুন চান্দগাঁও থানার পাশে বহদ্দারহাট পুকুর পাড় এলাকায় ৬ নং পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ড কার্যালয়ে হামলা ও লুটপাটে ১০ লাখ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ওয়ার্ড সচিব মোহাম্মদ শাহ আলম।
বুধবার ( ৪ সেপ্টেম্বর) সরোজমিনে কার্যালয়টিতে গিয়ে দেখা যায় নাগরিকদের আগের মতো গতিশীল সেবা দিতে পারছে না দায়িত্বরতরা। কারণ হিসেবে ওয়ার্ড সচিব মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, সেবা দেয়ার প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও যন্ত্রপাতি লুটপাট ও ভাঙচুর হয়েছে। ৫ আগস্ট কার্যালয়ে হামলার সময় ৫টি কম্পিউটার, ৩টি কালার প্রিন্টার, ২টি এসি, ৭টি সিসিটিভি ক্যামেরা, ১টি আইপিএস, ১১টি ফ্যান, টিভি ও ফ্রিজসহ যাবতীয় জিনিসপত্র লুট ও ভাঙচুর করা হয়। নষ্ট করা হয় অফিসে সংরক্ষিত বেশ কিছু নথিপত্র।
তিনি জানান, গত ৭ আগস্ট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করে কার্যালয়ে বসে কাজ করার মতো কিছুই অবশিষ্ট নেই বলে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিনকে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে নাগরিক সনদ, জন্ম মৃত্যু নিবন্ধন সনদসহ নাগরিকদের গুরুত্বপূর্ণ সেবা ঠিকমতো দিতে পারছি না। কেউ কেউ সেবা নিতে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তাতে আমরা কিছু করতে পারছি না। লুটপাটের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ছাড়া কেউ কোন মামলা বা আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের অধিকার নেই বলেও জানান তিনি।
তবে এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন পূর্বকোণকে বলেন, লুটপাঠের বিষয়ে আইনি কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ওয়ার্ড কার্যালয় সচল করতে টোন্ডার করে প্রয়োজনীয় সার্পোট দেয়া হবে। মাত্র তো ১৯ আগস্ট প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে।বড় সমস্যা হচ্ছে ওয়ার্ড কাউন্সিলররা, কারণ বেশিরভাগ কাউন্সিলর অফিস করছেন না। আশা করছি তাদের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায় ৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে রয়েছে চসিকের বেশ কিছু কাউন্সিলর। অনুমোদন ছাড়া কার্যালয়ে অনুপস্থিত থাকা ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের তালিকা করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। এর মধ্যে ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ডের ৩৪ জন এবং ১৪ সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মধ্যে ১ জন অফিস করছেন না। সাধারণ ও সংরক্ষিত মিলিয়ে মাত্র ২০ জন কার্যালয়ে আসছেন। মেয়রকে অপসারণ করে ১৯ আগস্ট চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলামকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার।
পূর্বকোণ/রাজীব/পারভেজ