চট্টগ্রামকে দুবাই, সিঙ্গাপুর ও আমেরিকার মতো উন্নত শহরের রূপ দিতে চান সংসদ সদস্য প্রার্থী রশিদ মিয়া। সিলেটের সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা থেকে ছুটে এসেছেন চট্টগ্রামের প্রেমে। চট্টগ্রামকে বিশ্বের উন্নত শহরে পরিণত করার স্বপ্ন নিয়ে। থাকছেন নগরীর স্টেশন রোডের একটি আবাসিক হোটেলে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ‘ছড়ি’ প্রতীকে।
চট্টগ্রাম-১০ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে নৌকা প্রতীকের সঙ্গে লড়ছেন আরও চার প্রার্থী। রশিদ মিয়া বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট মনোনীত প্রার্থী। চট্টগ্রামে দলটি কার্যক্রম, কার্যালয় ও কর্মী-সমর্থক চোখে পড়েনি। এ বিষয়ে রশিদ মিয়া বলেন, ‘তিনি বাংলাদেশ জাতীয় লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য। দলটি নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পায়নি। তাই নতুন আত্মপ্রকাশ করা গণমুক্তি জোটের সমর্থন নিয়ে নির্বাচন করছেন তিনি।
অনেকটা একলা চলো নীতিতে প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি। পোস্টার-ব্যানার ও মাইকিংয়ের চেয়ে লিফলেট বিলিয়ে ভোট চাচ্ছেন তিনি। তিনি বলেন, পোস্টারে অপচয় হয়। শহর নোংরা হয়। আর মাইকিংয়ে শব্দ দূষণ ঘটে। ভোটারদের কষ্ট দিতে আসিনি, সেবা করতে এসেছি। তিনি বলেন, নতুন জোট হয়েছে। এখনো সারাদেশে কার্যালয় ও কমিটি দেওয়া হয়নি।
সংসদ সদস্য প্রার্থী রশিদ মিয়া বলেন, এই শহরে অনেক বড় বড় প্রকল্প হয়েছে। নির্বাচিত হলে পরিপূর্ণ ও উন্নত শহরে রূপদানে চট্টগ্রামকে আন্তর্জাতিকমানের পর্যটন শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এখানে বিশ্বমানের একটি হাসপাতালের অভাব রয়েছে। হালিশহরে মোড়ে মোড়ে বর্জ্য-আবর্জনা পড়ে রয়েছে। রাস্তার উপর কাঁচা বাজার। একটি বিশ্বমানের হাসপাতাল করার স্বপ্ন রয়েছে। এছাড়াও বর্জ্য ও হাট-বাজার রাস্তা থেকে সরিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যেতে হবে। শহরের একপাশে সাগর, অন্যপাশে পাহাড়। তা কাজের লাগিয়ে দুবাই, সিঙ্গাপুর ও আমেরিকার মতো উন্নত এবং পর্যটন শহরে পরিণত করার স্বপ্ন রশিদের। তিনি বলেন, সংযুক্ত আবর-আমিরাতকে এখন দুবাই শহরের নামে বিশ্ব চেনে। চট্টগ্রামকেও সেই ধরনের শহরে পরিণত করতে চাই।
রশিদ মিয়ার জন্ম সিলেটের দিরাই উপজেলার পূর্ব চণ্ডিপুরে। পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ১৩৫ ভোট পেয়েছেন। ভোটার সংখ্যা ছিল প্রায় ২২ হাজার। সিলেটের পৌরসভা নির্বাচন নয়, এবার লড়ছেন চট্টগ্রাম-১০ (হালিশহর, বন্দর ও পতেঙ্গা) আসনের সংসদ নির্বাচনে। ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৮৮ হাজার ৬৩৮ জন। ‘ছড়ি’ প্রতীকের প্রার্থী রশিদ মিয়া বলেন, ‘আসনটি আমার কাছে ব্যতিক্রমী মনে হয়েছে। নির্বাচনের সুন্দর পরিবেশ রয়েছে। ভোটাররা শিক্ষিত-সচেতন। যোগ্য প্রার্থী খুঁজে নেওয়ার মতো শিক্ষা ও দক্ষতা রয়েছে।
৪ বছর আগে এক বন্ধুর হাত ধরে চট্টগ্রামে এসেছিলেন রশিদ মিয়া। অচেনা-অপরিচিত চট্টগ্রাম নগরীর বড় আসনে লড়ছেন জাতীয় নির্বাচনে। তিনি বলেন, ‘হালিশহর, শোলকবহর, লালখানবাজার, দেওয়ানহাট ও আগ্রাবাদ এলাকায় প্রচারণা চালিয়েছি। সবমিলিয়ে ৮টি ওয়ার্ডে আমার লিফলেট পৌঁছে দিয়েছি।’ রশিদ মিয়ার স্বপ্ন, ইউরোপ ও আমেরিকার মতো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। মানুষ ঘরে বসে ভোট দিতে পারে। সেই পরিবেশ তৈরি করা।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ রয়েছে উল্লেখ করে রশিদ মিয়া বলেন, দেশের বড় দল বিএনপি একবার নির্বাচনে আসে, আরেকবার আসে না। আমরা তো মাঠে আছি, জনগণের পাশে আছি-এটা তো বড় সফলতা। আগামী নির্বাচন বর্তমান সরকারের অধীনে বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হবে তা নিয়ে এখন আমরা বলবো না। তবে কাল-পরশু কী হবে তা বলতে পারি না।
নির্বাচনী প্রচারণা, পোস্টার-ব্যানার ও লিফলেটের খরচের বিষয়ে রশিদ মিয়া বলেন, ১৮ বছর প্রবাসে ছিলাম। নির্বাচনের একটা বাজেট রয়েছে। কম দরের হোটেলে থেকে প্রচারণা চালাচ্ছি। ঋণ ও ধারদেনা করে নির্বাচন করছি না। দেশের সেবা করার জন্য কাজ করছি।
পূর্বকোণ/মাহমুদ