চট্টগ্রাম সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

আট বছরে আউশের আবাদ বেড়েছে ১২%

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৭ জুন, ২০২৩ | ১১:১২ পূর্বাহ্ণ

ভূ-গর্ভস্তরের পানির চাপ কমাতে আউশের আবাদ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ৪-৫ বছর ধরে সার ও বীজ সহায়তা দিয়ে উৎসাহিত করে আসছে কৃষকদের। সেচ নির্ভর হওয়ায় কয়েক দিনের বৃষ্টিতে আউশের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা।

 

চট্টগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আবদুচ ছোবান পূর্বকোণকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম অঞ্চলে সেচ সংকট রয়েছে। ভারী বৃষ্টির পর এক সপ্তাহ ধরে আউশ রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা।’ তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই ৫০ শতাংশ ধান রোপণ হয়েছে। এরমধ্যে সন্দ্বীপে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় শতভাগ রোপণ করা হয়েছে। এছাড়াও সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি রোপণ করা হয়েছে। আশা করছি, সপ্তাহের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ রোপণ হয়ে যাবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে ৩৭ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আউশ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ৩০ হাজার কৃষককে প্রণোদনা হিসেবে ৫ কেজি করে বীজ ও ২০ কেজি করে সার দেওয়া হয়েছে।

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, ২০১৪-১৫ সালে চট্টগ্রামে আউশের আবাদ ছিল প্রায় ২৮ হাজার হেক্টর জমি। পরের বছর (১৫-১৬ মৌসুম) তা বেড়ে ৩২ হাজার হেক্টরে দাঁড়ায়। ১৬-১৭ মৌসুমে চাষ হয় ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে। ২০১৯-২০ মৌসুমে আউশের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০ হাজার হেক্টর জমি। চারা রোপণ করা হয়েছে ৩৭ হাজার হেক্টর জমিতে। এরপর থেকে সূচক নিচের দিকে প্রবাহিত হয়। ২০১৮-১৯ মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫ হাজার হেক্টর। ২০২১-২০২২ সালে আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩৬ হাজার ৯৭৫ হেক্টর। চারা রোপণ করা হয়েছে ৩৪ হাজার তিনশ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে (২০২২-২০২৩ সাল) আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩৭ হাজার একশ হেক্টর জমিতে। আট বছরে আউশের আবাদ বেড়েছে প্রায় ১২ শতাংশ ।

 

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত চার বছরে সময়মতো বৃষ্টিপাত না হওয়া ও শহরতলী উপজেলায় অপরিকল্পিতভাবে শিল্প-কারখানা গড়ে উঠায় ধানী জমি কমে যাওয়ায় আউশের আবাদ কমে আসছে। তবে এ সময়ে খরিপ শস্য ও শস্যদানা চাষাবাদে বেশি ঝুঁকছেন কৃষকেরা।

 

চলতি মৌসুমে খরা, অনাবৃষ্টি ও লবণাক্ততার কারণে বড় ধরনের মার খেয়েছে বোরো আবাদে। এখন বৃষ্টির পানিতে খুশি চাষিরা। বোরোর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চায় কৃষকেরা। কারণ আউশ আবাদ হলো প্রকৃতি-নির্ভর। বৃষ্টির পানিতে চাষাবাদ করা হয়। সার খরচও অনেকটা কম হয়। মূলত ভূ-গর্ভের পানির ব্যবহার কমাতে আউশ চাষাবাদে জোর দিয়েছে সরকার।

 

কৃষি কর্মকর্তারা জানান, আউশের আবাদ বাড়ানোর জন্য বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। কৃষকদের প্রণোদনা হিসেবে সার ও বীজ প্রদান করা হচ্ছে। আউশ ও সবজি চাষ বাড়ানোসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। লাভ বেশি হওয়ায় ধানের চেয়ে সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে কৃষক।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট