এবার চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে সরকারি অনুদানের অর্থ আত্মাসাতের অভিযোগ ওঠায় তদন্ত শুরু করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গতকাল সোমবার সকালে এসব অভিযোগের বিষয়ে খতিয়ে দেখতে সরেজমিনে হাসপাতালে আসেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক উপ-সচিবের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য বিভাগের দুই সদস্য। এসময় তাঁরা হাসপাতালের সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর সঙ্গে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা কথা বলার পাশাপাশি অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নথিপত্র সংগ্রহ করেন।
এর আগে গত ১৭ মে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জনস্বাস্থ্য-২ অধিশাখার উপসচিব মু. জসীম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, ‘চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের জাহাঙ্গীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে সরকারি অনুদানের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তের জন্য স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি ২৯ মে সকাল দশটায় হাসপাতাল কার্যালয়ে তদন্ত কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে। তদন্তকালে সকল পক্ষকে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রমাণাদিসহ উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়।’
চিঠির প্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার সকালে উপসচিব মু. জসীম উদ্দিন খান ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. সুমন বড়ুয়ার নেতৃত্বে এ দুই সদস্যের তদন্তকারী দল হাসপাতালে আসে। এসময় তারা হাসপাতালের বিভিন্ন নথি পর্যালোচনা করেন। পাশাপাশি হাসপাতালের সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর সঙ্গেও কথা বলেন।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রতিনিধি দলের প্রধান উপসচিব মু. জসীম উদ্দিন খান। তিনি বলেন, ‘আমরা মূলত হাসপাতালের ৫ অর্থ বছরের আর্থিক দিকগুলো নিয়ে তদন্ত করছি। যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে আমাদেরকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তা সরবরাহ করেছে। পর্যালোচনা করার পর আমরা প্রতিবেদন আকারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করবো।’
অন্যদিকে, ‘একটি চক্র হয়রানি করছে’ উল্লেখ করে ডায়াবেটিক হাসপাতালের সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘একটি চক্র আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিনিধি দলের চাহিদামোতাবেক সকল তথ্য প্রদান করা হয়েছে। যদি আরও তথ্যের প্রয়োজন হয়, তাও সরবরাহ করা হবে।’
উল্লেখ্য, ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন একাউন্টের মাধ্যমে হাসপাতালের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তারও আগে হাসপাতালের পরিচালনা পরিষদসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে সমাজ সেবা অধিদপ্তরও তদন্ত করে। অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় গত ২৫ জানুয়ারি সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. সাব্বির রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিবিধ অভিযোগ প্রমাণ পাওয়ায় কার্যনির্বাহী পরিষদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একই সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ আইন অনুযায়ী বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মোস্তফা মোস্তাকুর রহিম খানকে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। কিন্তু এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর চৌধুরী আদালতের শরণাপন্ন হলে আদালত সমাজসেবা অধিদপ্তরের আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেন।
পূর্বকোণ/পিআর