চট্টগ্রাম বুধবার, ০১ মে, ২০২৪

৭ বছর পর প্রকল্প বাতিল

মোহাম্মদ আলী

৩০ জুন, ২০২২ | ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে ‘প্রবাসী কল্যাণ কেন্দ্র’ নির্মাণের জন্য ডিপিপি (ড্রাফট প্রজেক্ট প্রোফাইল) তৈরি করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও সাত বছরেও প্রকল্পটির অনুমোদন মেলেনি। কাজের জন্য বিদেশগামীদের সাময়িক আবাসন, নিরাপদ অর্থ লেনদেন, প্রাথমিক চিকিৎসা, বিমানবন্দরে যাতায়াতে পরিবহন সুবিধাসহ বিভিন্ন সেবা দিতে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশে ‘প্রবাসী কল্যাণ কেন্দ্র’ তৈরির উদ্যোগ নেয় চট্টগ্রাম জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস (বিএমইটি)।
প্রকল্পের একটি ডিপিপি তৈরি করে ২০১৬ সালে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। মন্ত্রণালয় এটি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করে। কিন্তু গত সাত বছরেও এটির অনুমোদন মেলেনি। উল্টো এটি বাতিল করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল আলম মজুমদার দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘পৃথিবীর ১৭৬টি দেশে চট্টগ্রামের ১৫ লাখের বেশি প্রবাসী রয়েছেন। তাদের বেশিভাগ চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর দিয়ে যাতায়াত করেন। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে প্রতি বছর ২০ থেকে ২১ লাখ যাত্রী আসা যাওয়া করেন। এরমধ্যে ৯০ শতাংশ প্রবাসী। বিশাল এই প্রবাসীর বিমানবন্দর দিয়ে যাতায়াতে সহযোগিতা দানের লক্ষ্যে ২০১৫ সালের দিকে ‘প্রবাসী কল্যাণ কেন্দ্র’ তৈরির উদ্যোগ নিয়ে ছিলাম। ওইসময়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ছিলেন নুরুল ইসলাম বিএসসি। তাঁর সাথে পরামর্শক্রমে প্রবাসী কল্যাণ কেন্দ্রটি নির্মাণে জায়গা নির্বাচন, পাঁচতলা একটি ভবনের নকশা তৈরি, এটির কার্যক্রম প্রণয়ন এবং বাজেট নির্ধারণ করে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করি। ভবনটি নির্মাণ হলে উপকৃত হবে রেমিটেন্স যোদ্ধারা।’
মোহাম্মদ জহিরুল আলম মজুমদার বলেন, ‘চট্টগ্রামে প্রবাসী কল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণ হলে প্রবাসীদের বিদেশে যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে ফ্লাইট বিলম্বসহ অন্যান্য কারণে সাময়িক সময়ের জন্য আবাসন সুবিধার পাশাপাশি তাদের নিরাপদ অর্থ লেনদেন, ব্যাংকিংসহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়া যাবে। একই সাথে ওই ভবনে দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার ও পণ্যের দোকান থাকবে। ওখান থেকে প্রবাসীরা বিদেশে চাহিদা অনুযায়ী পণ্য নিয়ে যেতে পারবে। ভবনটি নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬ কোটি টাকা।’
এদিকে বিএমইটির একটি সূত্র জানায়, প্রবাসীরা দেশে আসা-যাওয়ার পথে অনেক সময় ফ্লাইট বিলম্ব হলে কিছু সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হলে প্রবাসীদের সেসব সমস্যা অনেকটা লাঘব হবে। চট্টগ্রামে প্রস্তাবিত প্রবাসী কল্যাণ কেন্দ্রের আদলে ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে খিলক্ষেতে বঙ্গবন্ধু ওয়েজ আর্নার্স সেন্টার চালু করেছে সরকার। প্রবাসী শ্রমিকদের অস্থায়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা করার লক্ষ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন ওয়েজ আর্নার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ড সেন্টারটি স্থাপন করেছে। প্রবাসীরা সর্বোচ্চ দুই রাত সেখানে যাপন করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে খরচ পড়বে প্রতিরাত ২০০ টাকা। এটিতে পুরুষ ও মহিলা উভয়ের পৃথক আবাসন সুবিধা রয়েছে। এতে কাউন্সেলিং, খাবারের ব্যবস্থা, প্রাথমিক চিকিৎসা, হাসপাতালে ভর্তি এবং বিনামূল্যে ইন্টারনেটসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাও রয়েছে।

পূর্বকোণ/এস

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট