চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ছাত্রলীগের দু’ গ্রুপে সংঘর্ষ, একনেতা গুরুতর আহত

সাতকানিয়ায় মহাসড়কে ব্যারিকেড, ৪ জন গ্রেপ্তার

নিজস্ব সংবাদদাতা , সাতকানিয়া

২৮ জুলাই, ২০১৯ | ২:২৯ পূর্বাহ্ণ

সাতকানিয়ায় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে বিরোধের জের ধরে এক গ্রুপের হামলায় মো. পারভেজ (২৩) নামে এক ছাত্রলীগ নেতা গুরুতর আহত হয়েছেন। পরে এক গ্রুপের ছাত্রলীগ নেতাকে পুলিশ আটক করার পর তার অনুসারীরা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের কেরানীহাট এলাকায় মিছিল ও ভ্রাম্যমাণ সড়ক বিভাজন পাথর মহাসড়কে ফেলে ব্যারিকেড দিলে আধ ঘণ্টার মত যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। এ সময় মহাসড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়ে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে ও ব্যবসায়ীদের আতংকিত হয়ে দোকান পাট বন্ধ করতে দেখা গেছে। এ ঘটনায় আহত ছাত্রলীগ নেতা বর্তমানে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অন্যদিকে, আহত ছাত্রলীগ নেতার মা বাদি হয়ে সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ এ ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেছে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সাতকানিয়া কেঁওচিয়া ও কেরানীহাট এলাকায় ছাত্রলীগের কয়েকটি গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার, মাটি কাটার ব্যবসা, পিকআপ থেকে মাসিক চাঁদা উত্তোলন, জায়গা দখল-বেদখল ও কেরানীহাটের ফুটপাত থেকে চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্য এবং অপ্রকাশ্যে

বিরোধ চলে আসছিল। বিভিন্ন সময় তাদের মধ্যে মারামারি, হাতাহাতির ঘটনায় ও তুচ্ছ কোন ঘটনায় একজন অন্যকে ফাঁসিয়ে দেয়ার চেষ্টায় সর্বক্ষণ লিপ্ত। গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে কেরানীহাট নিউ মার্কেট এলাকায় দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ও সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের একাংশের সহ-সভাপতি মো. পারভেজের গ্রুপের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। এসময় খবর পেয়ে আমিনুল তাদের নিবৃত্ত করতে গেলে প্রতিপক্ষের হকস্টিকের আঘাতে তিনি (আমিনুল) আহত হয়। এ ঘটনার জের ধরে একই দিন রাতে আমিনুলের অনুসারীরা ছাত্রলীগ নেতা পারভেজের তেমুহনি এলাকায় বাড়িতে গিয়ে হামলা ও ভাংচুর চালায়। ঘটনার পরদিন (শুক্রবার) পারভেজের মা সাতকানিয়া থানায় একটি অভিযোগ দিলে ক্ষিপ্ত হন আমিনুল ও তার অনুসারীরা। শুক্রবার রাত ৯টার দিকে পারভেজ কেরানীহাট মা-শিশু হাসপাতালে বসে তার অনুসারীদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এমন খবর শুনে আমিনুলসহ তার অনুসারীরা সেখানে গিয়ে পারভেজকে দা’ দিয়ে কুপিয়ে ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। উপস্থিত লোকজন তাকে স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন, সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। ঘটনার পর পর পুলিশ আমিনুলকে তার বাড়ি কেঁওচিয়া ইউনিয়নের জনার কেঁওচিয়া মাস্টার বাড়ি এলাকা থেকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। খবর পেয়ে তার অনুসারীরা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের কেরানীহাট এলাকায় মিছিল সহকারে এসে ভ্রাম্যমাণ সড়ক বিভাজন পাথর মহাসড়কে ফেলে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। এসময় আধ ঘণ্টার মত যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। কয়েকটি গাড়ির নিয়ে ফেলা হয় চাবি। খবর পেয়ে সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান মোল্লার নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্যারিকেড সৃষ্টিকারীদের ধাওয়া করলে তারা সরে যায়। পরে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। এ সময় পুলিশ ৩ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আমিনুল ছাড়া অন্য আটককৃতরা হলেন, পুরানগড় ইউনিয়নের ধলিরগোপাট এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে রাশেদুল ইসলাম (২১), জনার কেঁওচিয়া মাস্টার বাড়ির মুবিনুল হকের ছেলে নাজিম উদ্দীন (২৪) ও জনার কেঁওচিয়া ব্যবসায়ী পাড়ার আবদুল কুদ্দুছের ছেলে আবদুর রাজ্জাক মুন্না (২৪)।
সাতকানিয়া থানার উপ-পরিদর্শক মাসুদ রানা বলেন, আমিন ও তার অনুসারীরা মিলে পারভেজকে কুপিয়ে ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এ ঘটনায় জড়িত আমিন ও তার ৩ অনুসারীসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে শনিবার (্গতকাল) আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আহত পারভেজের মা জন্নাতুল ফেরদৌস বাদি হয়ে ১৬জনকে এজাহারনামীয় ও ৭/৮জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট